শেরশাহের সামরিক ব্যবস্থা আলোচনা কর

শেরশাহের সামরিক ব্যবস্থা আলোচনা কর
শেরশাহের সামরিক ব্যবস্থা আলোচনা কর

শেরশাহের সামরিক ব্যবস্থা আলোচনা কর

  • অথবা, শেরশাহের সামরিক সংস্কারগুলো কি ছিল?

উত্তর : ভূমিকা : মাত্র ৫ বছরের রাজত্বকালে সমগ্র উত্তর ভারত ও রাজপুতদের উপর আধিপত্য বিস্তারের জন্য সামরিক বাহিনীর সংস্কার সাধনে শেরশাহ অসামান্য কৃতিত্ব প্রদর্শন করে গেছেন।

ন্যায়নিষ্ঠ শাসক, দক্ষ ও দূরদর্শী হিসেবে ভারতবর্ষে। তার নাম ইতিহাসের পাতায় স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে। শেরশাহের সামরিক সংস্কার তাকে অনন্য মর্যাদা দান করে।

→ শেরশাহের সামরিক সংস্কার : নিম্নে শেরশাহের সামরিক সংস্কার আলোচনা করা হলো-

১. সামন্ত প্রথার উচ্ছেদ : সামন্ত প্রথার উচ্ছেদ সাধন করে সেনাবাহিনীর সাথে তিনি প্রত্যক্ষ যোগাযোগ স্থাপন করেন । যার ফলে স্বয়ং শাসক সৈন্যদের কাছে আশায় তারা বেশি করে সাহস পায় ।

২. অশ্ব চিহ্নিতকরণ : শেরশাহ আলাউদ্দিন খলজির অনুকরণে অশ্ব চিহ্নিতকরণ ব্যবস্থা চালু করেন। যার ফলে সৈন্যরা একই অশ্ব বার বার দেখিয়ে কোনো প্রকার ছলচাতুরি গ্রহণ করতে পারত না।

৩. জায়গীর প্রথার বিলুপ্তি : শেরশাহ সৈন্যদের মাঝে বৈষম্য দূর করার জন্য জায়গীর প্রথা বিলুপ্ত করে বেতন প্রদানের নিয়ম চালু করেন। তাছাড়াও সৈন্যদের মাঝে জায়গীর বন্ধ করে দেওয়ার পিছনে আর একটি কারণ হচ্ছে রাজস্ব বৃদ্ধি ।

৪. দক্ষ সেনাপতি নিয়োগ : সৈন্যবাহিনীর উন্নতি সাধনের জন্য শেরশাহ সৎ ও দক্ষ সেনাপতি নিয়োগ করেন। পরবর্তীতে এদের নেতৃত্বে তিনি বিভিন্ন অভিযানে সফল হন। সুতরাং বলা যায়, সৈন্যদেরকে সুদক্ষ করে গড়ে তোলার জন্যই শেরশাহ দক্ষ সেনাপতি নিয়োগ করেন ।

৫. বদলির ব্যবস্থা : শেরশাহ অনুধাবন করেন যে একটানা দীর্ঘদিন কোনো স্থানে থাকলে সৈন্যরা বিভিন্ন ধরনের দুর্নীতিতে যুক্ত হতে পারে। তাই তিনি প্রতি দুই বছর অন্তর সৈন্যদের বদলির ব্যবস্থা চালু করেন। ফলে এর মাধ্যমে একটি কর্তব্যপরায়ণ সৈন্যবাহিনী গড়ে ওঠে।

৬. নিয়ম-নীতি প্রণয়ন : সৈন্যবাহিনীকে সুসংগঠিতভাবে ধরে রাখার জন্য শেরশাহ কঠোর নিয়ম-শৃঙ্খলার নীতি গ্রহণ করেন। তিনি দুর্নীতি প্রতিরোধের ব্যবস্থা গড়ে তোলেন ৷ শেরশাহ ব্যক্তিগত গুণানুসারে সৈন্যদের মান নির্ণয় করেন ।

উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, প্রজাদরদী সুলতান শেরশাহ যুগোপযোগী ও আধুনিক অস্ত্রের সাথে সুদক্ষ সেনাবাহিনী গঠন করে সাম্রাজ্যের নিরাপত্তা নিশ্চিত করেন। 

তিন সৈন্যবাহিনীর উপর যুদ্ধোত্তরকালে কঠোর দৃষ্টি রাখতেন এবং জনসাধারণের শস্যক্ষেত নষ্ট করলে সে সৈন্যের কর্ণচ্ছেদ করা হতো বলে এ বাহিনী সুশৃংখল হয়।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url
আরও পড়ুনঃ
আরও পড়ুনঃ