সালাহউদ্দিন আইয়ুবীর চরিত্র ও কৃতিত্ব আলোচনা কর

সালাহউদ্দিন আইয়ুবীর চরিত্র ও কৃতিত্ব আলোচনা কর
সালাহউদ্দিন আইয়ুবীর চরিত্র ও কৃতিত্ব আলোচনা কর

সালাহউদ্দিন আইয়ুবীর চরিত্র ও কৃতিত্ব আলোচনা কর

  • অথবা, সালাহউদ্দিন আইয়ুবীর অবদানসমূহ তুলে ধর। 

উত্তর : ভূমিকা : সুলতান সালাহউদ্দিন আইয়ুবী ইতিহাসে এক অনন্য নাম। আইয়ুবী বংশের প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে তিনি ইসলামের ইতিহাসের এক গুরুত্বপূর্ণ স্থানে অধিষ্ঠিত রয়েছেন। 

দ্বাদশ শতাব্দীতে বিভিন্ন অভিযান প্রেরণ করে ক্রুসেডারদের পরাজিত করেন। ক্রুসেডারদের সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে তিনি মুসলমানদের হারানো গৌরব ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হন।

→ সালাহউদ্দিন আইয়ুবীর চরিত্র : সালাহউদ্দিন আইয়ুবী চরিত্র নিম্নে দেওয়া হলো :

১. ধর্মপরায়ণতা : সুলতান সালাহউদ্দিন আইয়ুবীর ছিলেন। দেশপ্রেমিক ও ধর্মপরায়ণ মানুষ। তিনি যুদ্ধের ময়দানে উটের পিঠে উপবিষ্ট অবস্থায় নামাজ পড়তেন।

২. প্রজাবৎসল শাসক : সুলতান সালাহউদ্দিন আইয়ুবী তার প্রজাদের খুব ভালবাসতেন। তাদের বিপদে বা যে-কোনো ডাকে তিনি সহজেই সাড়া দিতেন। 

প্রজাদের নিপীড়ন নয় প্রজাদের পালনই ছিল তার শাসনের মূলনীতি। সালাহউদ্দিন আইয়ুবী ছিলেন দরিদ্রদের বন্ধু । কেউ প্রয়োজনে আর্তনাদ করলে তাতে সাড়া দিতেন।

৩. স্বাভাবিক জীবন : সালাহউদ্দিন আইয়ুবী অত্যন্ত নিয়ম- শৃঙ্খলা মেনে চলতেন। প্রচুর ধনসম্পদ থাকা সত্ত্বেও গরিবদের মত জীবন যাপন করতেন।

৪. মানবতাবোধ : খ্রিস্টানগণ জেরুজালেম দখল করে নির্বিচারে মুসলমানদের হত্যা করেন। কিন্তু সালাহউদ্দিন দখল জেরুজালেম দখল করে শুধু বিশ্বাসঘাতকদের হত্যা করেন। এটা তার মানবতাবোধের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত ।

→ সুলতান সালাহউদ্দিন আইয়ুবীর কৃতিত্ব : নিম্নে সুলতান সালাহউদ্দিন আইয়ুবীর কৃতিত্ব আলোচনা করা হলো :

১. হিত্তিনের যুদ্ধ : সালাহউদ্দিন আইয়ুবী সামরিক ক্ষেত্রে অসামান্য অবদান রাখেন। ১১৮৭ সালের ৩ জুলাই শুক্রবার হিত্তিনের যুদ্ধে তিনি ক্রুসেডারদের শোচনীয়ভাবে পরাজিত করেন ।

২. তৃতীয় ক্রুসেড ও তার কৃতিত্ব : জেরুজালেম পতনের পর ইংল্যান্ডের রাজা রিচার্ড, জার্মানির রাজা ফ্রেডারিক বারকরোসা এবং ফ্রান্সের রাজা ফিলিপ অগাস্টাস তৃতীয় ক্রুসেড ঘোষণা করেন।

ফ্রেডারিক সিলিসিয়ান নদী অতিক্রম কালে মারা যান। রিচার্ড ও অগাস্টান প্রাণপণ চেষ্টা করেও জেরুজালেম উদ্ধার করতে না পেরে ১১৯২ সালে সালাহউদ্দিনের সাথে একটি চুক্তিতে আবদ্ধ হন।

৩. বীর যোদ্ধা : সালাহউদ্দিন ক্রুসেডদের বিরুদ্ধে প্রাণপণ লড়াই সংগ্রাম করে শ্রেষ্ঠত্বের প্রমাণ বহন করেন। শ্রেষ্ঠ বীরের মর্যাদা লাভ করায় তাকে গাজী উপাধি দেওয়া হয়।

৪. জ্ঞান-বিজ্ঞানের পৃষ্ঠপোষক : সালাহউদ্দিন আইয়ুবী জ্ঞান- বিজ্ঞানের প্রতি যথেষ্ট গুরুত্ব দেন। তিনি বিদ্বানদের সমাদর করতেন, ধার্মিকদের শ্রদ্ধা করতেন।

উপসংহার : পরিশেষে বলা যায়, সালাহউদ্দিন আইয়ুবী নিজের একক নিরলস প্রচেষ্টার কারণে জেরুজালেম দখলে রাখতে সক্ষম হন। তিনি চারিত্রিকগতভাবে যেমন কোমল, তেমনি বিজেতা হিসেবে ছিলেন দুর্দমনীয় ।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url
আরও পড়ুনঃ
আরও পড়ুনঃ