ফাতেমীয় ও সেলজুক এর মধ্যে সম্পর্ক আলোচনা কর
ফাতেমীয় ও সেলজুক এর মধ্যে সম্পর্ক আলোচনা কর |
ফাতেমীয় ও সেলজুক এর মধ্যে সম্পর্ক আলোচনা কর
- অথবা, ফাতেমীয় ও সেলজুক এর মধ্যে সম্পর্ক লিখ।
উত্তর : ভূমিকা : আব্বাসীয় সমর্থনপুষ্ট সেলজুক শক্তির সাথে ফাতেমীয়দের সম্পর্ক ছিল চরম বৈরিতাপূর্ণ। আব্বাসীয় খিলাফতের প্রবল প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে ফাতেমীয় খিলাফত প্রতিষ্ঠিত হয়।
তাছাড়া ফাতেমীয়গণ শিয়া মতের অনুসারী ছিল। তাই সুন্নি মতাদর্শের পৃষ্ঠপোষক সেলজুকদের কখনো তারা ভালোভাবে মেনে নিতে পারেনি। অধিকন্তু ক্ষমতার দ্বন্দ্ব ফাতেমীয় সেলজুক সম্পর্কে সংজ্ঞাপন্ন করে তোলে।
→ ফাতেমীয়দের পরিচয় : ইসলামের চতুর্থ খলিফা হযরত আলী (রা.) এর সহধর্মীনি ফাতেমাতুজ জোহরা ছিলেন মহানবি (সা.) এর কনিষ্ঠ কন্যা।
হযরত আলীর অনুসারি ইসমাইলীয় শিয়াগণ ৯০৯ সালে উত্তর আফ্রিকায় আব্বাসীয় খিলাফতের প্রতিদ্বন্দ্বীরূপে একটি খিলাফত প্রতিষ্ঠা করেন।
আর এই শিয়া খিলাফতের প্রতিষ্ঠাতা ওবায়দুল্লাহ-আল-মাহদী নিজেকে মহানবি (সা.) এর কন্যা বিবি ফাতেমার বংশধর বলে দাবি করায় তার বংশধরগণ ফাতেমীয় নামে পরিচিতি লাভ করে।
→ সেলভুকদের পরিচয় : সেলজুকদের আদি বাসস্থান ছিল মধ্য এশিয়ায়। তারা আসলে কিরগিজ অঞ্চলের ওগুজ বংশোদ্ভূত উপজাতি।
সেলজুক বিন বায়হাকের পুত্র পিত্ত আরসালানের নেতৃত্বে একটি দল আমু নদী পার হয়ে পূর্ব পারস্যে বসতি স্থাপন করে। আর এ বংশের লোকদেরকে সেলক বলা হয়ে থাকে।
ফাতেমীয় ও সেলজুকদের সম্পর্ক: ১০৫৫ সালে সিরিয়া ও মিসরের দিকে অগ্রসর হন সেলজুক সুলতান ভূমিল বেগ এবং আল-মুসতানসিরের শাসন বিলুপ্তি ঘটানোর ইচ্ছা প্রকাশ করে না আর তুর্কির আমির এতে কঠোর নীতি অনুসরণ করেন।
তারপর সুলতান ভূমিল বেগ ফাতেমীয়দের তেমন ক্ষতি করতে না পারলেও ভাদ্রের কাছ থেকে রাজ্য দখল করেছিলেন।
১০৮৮ সালে আব্বাসীয় খলিফার নামে খুতবা থেকে বাদ দিলে আব্বাসীয় আমির নাসিরুদ্দৌলা ফাতেমীয় খলিফা আল-মুসতানসিরের বিরুদ্ধে যুদ্ধের জন্য সেলজুক সুলতান আলপ আরসালানের কাছে সাহায্য প্রার্থনা করেন।
আলপ আরসালান পরবর্তী বছর সাহায্যের জন্য অগ্রসর হলেও বাইজান্টাইন সম্রাটের হস্তক্ষেপে কিছু করতে পারেননি।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, ফাতেমীয়দের সাথে সেলজুকদের সাথে সম্পর্ক ভালো ছিল না। তাদের সম্পর্ক ছিল বিরোধপূর্ণ।
ফাতেমীয়রা প্রচলিত কোন ধর্ম মত তোয়াক্কা করত না। এটা গোড়া সুন্নি হিসেবে সেলজুকরা ভালোভাবে নিত না। তাই তাদের সম্পর্ক ছিল বৈরী।