মারজ ই দাবিকের যুদ্ধের ঘটনা ও পরিণতি সম্পর্কে আলোচনা কর

মারজ ই দাবিকের যুদ্ধের ঘটনা ও পরিণতি সম্পর্কে আলোচনা কর
মারজ ই দাবিকের যুদ্ধের ঘটনা ও পরিণতি সম্পর্কে আলোচনা কর

মারজ ই দাবিকের যুদ্ধের ঘটনা ও পরিণতি সম্পর্কে আলোচনা কর

  • অথবা, মারজ-ই-দাবিকের যুদ্ধ সম্পর্কে লিখ। 

উত্তর : ভূমিকা : আলেপ্পোর উত্তরে অবস্থিত মারজ দাবিকের প্রান্তরে ১৫১৬ সালে মিশরের সর্বশেষ সুলতান কানসুয়া আল-ঘুরীর সাথে তুরস্কের উসমানীয় সুলতান প্রথম সেলিমের যে সংঘর্ষ হয় ইসলামের ইতিহাসে তাকেই মারজ-ই-দাবিকের যুদ্ধ বলা হয়। 

মামলুক ও উসমানীয় শক্তির মধ্যে এটি শুধুমাত্র একটি যুদ্ধই নয় বরং মিশরের মামলুক বংশের উচ্ছেদ এবং ইসলামের পরবর্তী ইতিহাসের ক্ষেত্রে এক অভাবনীয় পরিবর্তন সাধিত হয়।

→ মারজ-ই-দাবিকের যুদ্ধ : নিম্নে মারজ-ই-দাবিকের যুদ্ধ সম্পর্কে আলোকপাত করা হলো :যুদ্ধের কারণ : মারাজ-ই-দাবিকের যুদ্ধের পিছনে যে কারণসমূহ ছিল তা হলো :

(ক) অটোমান সুলতান প্রথম সেলিমের সাম্রাজ্যবাদী নীতি।

(খ) প্রথম সেলিমের শিয়া বিদ্বেষী নীতি এবং পারস্যের শিয়া সাফাডী বংশের নরপতি শাহ ইসমাঈলকে আক্রমণ ।

(গ) বিদ্রোহী তুর্কি যুবরাজকে আল ঘুরি এক আশ্রয় প্রদান । 

(ঘ) প্রথম সেলিম কর্তৃক মিশরে করদ রাজ্য দুলগাদির আক্রমণ । 

(ঙ) মক্কা ও মদিনার উপর প্রথম সেলিমের প্রাধান্য।

(চ) মামলুক সুলতান আল-ঘুরী কর্তৃক সেলিমের বিরুদ্ধে এবং শাহ ইসমাঈলের পক্ষে আলেপ্পোর উদ্দেশ্যে যুদ্ধ যাত্রা। শেষোক্তটি ছিল এই যুদ্ধের প্রত্যক্ষ কারণ ।

যুদ্ধের ঘটনাবলি : মামলুক সুলতান কানসুয়া আল-ঘুরী শাহ ইসমাঈলের সাহায্যার্থে এগিয়ে এলে অটোমান সুলতান প্রথম সেলিম তাকে উপযুক্ত শিক্ষা প্রদানের উদ্দেশ্যে ১৫১৭ সালের ২৪ আগস্ট আলেপ্পোর উত্তরে অবস্থিত মারা-ই-দাবিকের প্রান্তরে তাকে আক্রমণ করেন। 

মামলুক সুলতান আল- ঘুরী ৭৫ বছর বয়সেও অসীম সাহসিকতার সাথে যুদ্ধ করেন। কিন্তু তার সেনাপতিদের বিশ্বাসঘাতকতা তাকে দিশেহারা করে তোলে। 

একপর্যায়ে তিনি মৃগীরোগে আক্রান্ত হয়ে অশ্বপৃষ্ট হতে ভূপতিত হলে তার মস্তক ছিন্ন করে ফেলা হয় । ফলে মামলুকদের পরাজয় ঘটে ।

পরিণতি/ফলাফল : মারাজ-ই-দাবিকের যুদ্ধের ফলাফল ছিল নিম্নরূপ :

(ক) মামলুক সাম্রাজ্যের অবসান;

(খ) তৎকালীন ইসলামের প্রাণকেন্দ্র হিসাবে কায়রোর গুরুত্ব হ্রাস; 

(গ) মক্কা-মদিনায় অটোমানদের আধিপত্য প্রতিষ্ঠা; 

(ঘ) কনস্টান্টিনোপল কেন্দ্রিক সভ্যতার উত্থান; 

(ঙ) নামমাত্র আব্বাসীয় খিলাফতের চির অবসান;

(চ) মক্কা ও মদিনার উপর অটোমানদের প্রধান্য স্থাপন; 

(ছ) অটোমান সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠা।

উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, বিভিন্ন পটভূমিতে মারজ- ই-দাবিকের যুদ্ধ একটি যুগান্তকারী অধ্যায়ের সূচনা করে। এটি প্রায় তিন শত বছরের ঐতিহ্যবাহী মামলুক বংশকে নিশ্চিহ্ন করে ফেলে এবং কায়রোর পরিবর্তে কনস্টাস্টিনোপল সভ্যতার উত্থান ঘটান ।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url
আরও পড়ুনঃ
আরও পড়ুনঃ