শশাঙ্কের রাজ্যবিস্তার সমূহ সংক্ষেপে আলোচনা কর
শশাঙ্কের রাজ্যবিস্তার সমূহ সংক্ষেপে আলোচনা কর |
শশাঙ্কের রাজ্যবিস্তার সমূহ সংক্ষেপে আলোচনা কর
- অথবা, শশাঙ্কের রাজ্যবিজয় আলোচনা কর।
- অথবা, শশাঙ্কের বিজয়াভিযান আলোচনা কর।
উত্তর : ভূমিকা : প্রাচীন বাংলার ইতিহাসে শশাঙ্ক ছিলেন প্রথম স্বাধীন সার্বভৌম নরপতি। ৭ম শতকে তাঁর উত্থান ঘটে।
বাংলাতে এক নতুন যুগের সূচনা হয়েছিল তার মাধ্যমে বাংলা সর্বপ্রথম ঐক্যবদ্ধ একটি রাজ্যে পরিণত হয়। তিনি ছিলেন বাংলার সর্বপ্রথম জাতীয় বাঙালি রাজা ।
→ শশাঙ্কের রাজ্যবিস্তারসমূহ : নিম্নে শশাঙ্কের রাজ্যবিস্ত রিসমূহ সংক্ষেপে সম্পর্কে আলোচনা হলো :
১. দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে রাজ্য বিস্তার : শশাঙ্ক সিংহাসনে আরোহণ করেই রাজ্য বিস্তারে সচেষ্ট হন। তিনি প্রথমে দক্ষিণ- পশ্চিমাঞ্চলে রাজ্যবিস্তারে মনোনিবেশ করেছিলেন।
২. উত্তর-ভারতের রাজনীতিতে হস্তক্ষেপ : দক্ষিণের পর শশাঙ্ক উত্তর ভারতের রাজনীতিতে হস্তক্ষেপ করেন। কারণ পূর্ব থেকেই মৌখরি রাজদের সাথে তাদের শত্রুতা ছিল। তাদের উৎখাত করার জন্য তিনি উত্তর ভারতের রাজনীতিতে হস্তক্ষেপ করেন।
৩. কনৌজ রাজ গ্রহবর্মার সাথে যুদ্ধ : শশাঙ্ক কনৌজ রাজের শক্তি বৃদ্ধিতে শঙ্কিত হয়ে পড়েন। একসময় দেবগুপ্তের সাথে গ্রহবর্মার যুদ্ধ হয় যুদ্ধে গ্রহবর্মা নিহত হন।
ফলে কনৌজর পতন ঘটিয়ে মালব রাজ দেবগুপ্ত থানেশ্বরের রাজার পতন ঘটাতে থানেশ্বরের দিকে অগ্রসর হন। কিন্তু থানেশ্বররাজ রাজ্যবর্ধনের কাছে পরাজিত হন মালব রাজা দেবগুপ্ত।
এরপর শশাঙ্কের সাথে যুদ্ধ বাঁধে রাজ্যবর্ধনের। যুদ্ধে রাজ্যবর্ধন পরাজিত হন এবং শশাঙ্ক তাকে হত্যা করে। যদিও এ নিয়ে মত পার্থক্য আছে। যাইহোক এরপর হর্ষবর্ধন থানেশ্বরের রাজা হন।
৪. হর্ষবর্ধনের সাথে সংঘর্ষ : রাজ্য বর্ধনের মৃত্যুর পর ছোট ভাই হর্ষবর্ধন ভাইয়ের প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য শশাঙ্কের বিরুদ্ধে যুদ্ধ যাত্রা করেন। তবে তাদের মধ্যে আদৌ যুদ্ধ হয়েছিল কি-না তা সম্পর্কে কিছুই উল্লেখ নেই।
কিন্তু এটা জানা যায় যে, শশাঙ্ক থানেশ্বর রাজা হযবর্ধন এবং কামরূপরাজ্য ভাস্কর বর্মার হাত থেকে নিজ রাজ্য রক্ষা করতে পেরেছিলেন।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, শশাঙ্ক নিঃসন্দেহে প্রাচীন বাংলার শ্রেষ্ঠ নৃপতি ছিলেন। কারণ প্রাচীন বাংলার ইতিহাসে তিনিই প্রথম রাজা যিনি তার রাজ্য সীমা বাংলার বাইরেও বিস্তৃত করতে পেরেছিলেন। সর্বোপরি তার মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল এক সার্বভৌম বাংলা।