শশাঙ্কের রাজ্যসীমা সম্পর্কে আলোকপাত কর

শশাঙ্কের রাজ্যসীমা সম্পর্কে আলোকপাত কর
শশাঙ্কের রাজ্যসীমা সম্পর্কে আলোকপাত কর

শশাঙ্কের রাজ্যসীমা সম্পর্কে আলোকপাত কর

  • অথবা, শশাঙ্কের রাজ্যসীমা কতদূর পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল?

উত্তর : ভূমিকা : প্রাচীন বাংলার অন্যতম শ্রেষ্ঠ নরপতি ছিলেন শশাঙ্ক। তিনিই বাংলার প্রথম শাসক যিনি সাম্রাজ্য বিস্তারের স্বপ্ন দেখেছিলেন এবং বাস্তব রূপ দান করেছিলেন। এ জন্যই তাকে বাংলার প্রথম সার্বভৌম রাজার উপাধি দেওয়া হয়।

→ শশাঙ্কের রাজ্যসীমা : বানভট্টের হর্ষচরিত এবং হিউয়েন :সাং -এর বিবরণীতে শশাঙ্কের রাজ্য জয় সম্পর্কে জানা যায়। শশাঙ্ক গৌড়ে নতুন রাজবংশ প্রতিষ্ঠা করার পর স্বীয় রাজ্য সীমানা বৃদ্ধি করার জন্য রাজ্যবিস্তারে মনোনিবেশ করেন। 

তার পররাষ্ট্রনীতির প্রধান লক্ষ্য ছিল মৌখরিদের আক্রমণ হতে নিজ রাজ্য গৌড়ের নিরাপত্তা বিধান। প্রথম দিকে তিনি বাংলাদেশ ও তার পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে রাজ্য বিস্তারে মনোনিবেশ করেন। 

শশাঙ্ক রাজত্বের প্রথম থেকেই মগধ (দক্ষিণ বিহার) অঞ্চল তার অধিকারে ছিল । শশাঙ্ক প্রথম থেকেই তার রাজ্যসীমা বৃদ্ধি করতে সচেষ্ট ছিল । 

তিনি দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে রাজ্য বিস্তার করতে সক্ষম হয়েছিলেন। তিনি দক্ষিণে তার রাজ্যসীমানা দণ্ডভুক্তি, উৎকূল ও কঙ্গোদ রাজ্য জয় করেন। 

তিনি তার রাজ্য দক্ষিণে উড়িষ্যার চিল্কা হৃদ পর্যন্ত বিস্তার করেছিলেন তার প্রমাণ পাওয়া যায় ৬১৯ খ্রিষ্টাব্দে গঞ্জাম তাম্রশাসনে। 

এই তাম্রশাসনের সাক্ষ্যে এ কথা বলা চলে যে, ঐ সময়ে কঙ্গোদের শাসনকর্তা শৈলোদ্ভব বংশীয় মহারাজা মহাসামন্ত শ্রীমাধবরাজ শশাঙ্ককে অবিরাজরূপে স্বীকার করেছিলেন। 

প্রাচীন কঙ্গোদের সীমানা সঠিকভাবে নির্দিষ্ট করা সম্ভব না হলেও বলা চলে যে, চিল্কা হ্রদ পার্শ্বস্থ এলাকা এমনকি গঞ্জাম জেলার অংশ বিশেষ কঙ্গোদ রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত ছিল। 

সুতরাং উড়িষ্যার সমগ্র উত্তরাঞ্চল শশাঙ্কের স্বাধীনতা স্বীকার করেছিল। পশ্চিমে মগধ নিজ রাজ্যভুক্ত করেন দক্ষিণে স্বাধীন বঙ্গরাজ্য তার সার্বভৌমত্ব স্বীকার করে। 

এভাবে অল্প সময়ের মধ্যে শশাঙ্ক এক বিশাল সাম্রাজ্য গড়ে তোলেন। তার আগে আর কোনো বাঙালি রাজা এ রকম বিস্তৃত সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেছে বলে জানা যায়নি।

উপসংহার : পরিশেষে এ কথা বলা যায় যে, শশাঙ্ক সমগ্র বাংলাতে তার প্রাধান্য স্থাপন করেন এবং একচ্ছত্র আধিপত্য কায়েম করতে সক্ষম হন। 

তিনি তার মৃত্যু পর্যন্ত ৬৩৭ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত উক্ত বিস্তৃত সাম্রাজ্যকে সঠিকভাবে পরিচালনা করেন। ফলে প্রাচীন বাংলার ইতিহাসে তাকে যথার্থই প্রসিদ্ধ ও গুরুত্বপূর্ণ নৃপতি হিসেবে ব্যাখ্যা দেওয়া সঠিক হয়েছে। 

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url
আরও পড়ুনঃ
আরও পড়ুনঃ