শশাঙ্কের রাজধানী কর্ণসুবর্ণ সম্পর্কে যা জান সংক্ষেপে লিখ

শশাঙ্কের রাজধানী কর্ণসুবর্ণ সম্পর্কে যা জান সংক্ষেপে লিখ
শশাঙ্কের রাজধানী কর্ণসুবর্ণ সম্পর্কে যা জান সংক্ষেপে লিখ

শশাঙ্কের রাজধানী কর্ণসুবর্ণ সম্পর্কে যা জান সংক্ষেপে লিখ

  • অথবা, শশাঙ্কের রাজধানী সম্পর্কে ঐতিহাসিক মতামত কি?

উত্তর : ভূমিকা : প্রাচীন বাংলার ইতিহাসে শশাঙ্ক একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করে আছে। বাংলার ইতিহাসে তিনিই প্রথম শাসক যিনি সাম্রাজ্য বিস্তারের স্বপ্ন দেখেছিলেন এবং সে স্বপ্নকে বাস্তব রূপদান করেছিলেন। তিনি ৬০৬ খ্রিষ্টাব্দে গৌড়ের সিংহাসনে বসেন এবং রাজধানী বানান কর্ণসুবর্ণকে।

→ শশাঙ্কের রাজধানী কর্ণসুবর্ণ : নিম্নে শশাঙ্কের রাজধানী কর্ণসুবর্ণ আলোচনা করা হলো :

১. রাজধানী হিসেবে কর্ণসুবর্ণ : শশাঙ্ক ৬০৬ খ্রিষ্টাব্দে সিংহাসনে বসেন, সিংহাসনে বসার পর তার রাজধানী হিসেবে তিনি কর্ণসুবর্ণকে বেছে নেন।

২. কর্ণসুবর্ণের অবস্থান : সপ্তম শতাব্দীর প্রারম্ভে শশাঙ্ক কর্ণসুবর্ণকে রাজধানী হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেন। তার রাজধানী ছিল কর্ণসুবর্ণ। বর্তমানে মুর্শিদাবাদ জেলার বহরমপুরের ছয় মাইল দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থিত রাঙ্গামাটি। বাংলার উত্তর ও উত্তর- পশ্চিমাঞ্চলে শশাঙ্কর রাজধানী ছিল।

৩. রাজধানী কর্ণসুবর্ণ সম্পর্কে ঐতিহাসিক মতামত : শশাঙ্ক গৌড়ের সিংহাসনে আরোহণের পর রাজ্যশাসন ক্ষেত্রে যথেষ্ট কৌশল অবলম্বন করেছিলেন। তিনি শাসনকার্যে সুবিধার জন্য কর্ণসুবর্ণে রাজধানী স্থাপন করেছিলেন। 

তার স্বাধীন গৌড় রাজ্য বাংলার উত্তর, উত্তর-পশ্চিমাংশ এবং মগধে বিস্তৃত ছিল। তবে তার রাজধানী কর্ণসুবর্ণের অবস্থান সম্পর্কে পণ্ডিতদের মধ্যে মতপার্থক্য আছে। কারণ বিভিন্ন পণ্ডিত বিভিন্ন মত প্রদান করেছেন এ সম্পর্কে নিচে আলোচনা করা হলো :

ঐতিহাসিক বেভারিজ এম. চক্রবর্তী তিনি বলেছেন যে, “মুর্শিদাবাদ জেলার বহরমপুরের ছয় মাইল দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থিত রাঙ্গামাটি নামক স্থানটিই প্রাচীন কর্ণসুবর্ণ।

এম. চক্রবর্তীর মতে, “কর্ণসুবর্ণ, গৌড় বা লৌখনৌতি এক ও অভিন্ন” তবে বেভারিজ এম. চক্রবর্তীর এ মতকে সমর্থন করেননি। হেমচন্দ্র রায়, রমেশ চন্দ্র মজুমদার প্রমুখ ঐতিহাসিকগণ এইচ. বেভারিজের মতকে সমর্থন করেছেন।

উপসংহার : উপরোক্ত আলোচনার মাধমে আমরা এ কথা সহজেই বলতে পারি যে, শশাঙ্কের রাজধানী নিয়ে যতই সমালোচনা থাকুক না কেন, শশাঙ্ক তার শাসনকার্যের সুবিধা মতো স্থানে এটি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন এবং সাথে সাথে সাম্রাজ্যের শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখতে সক্ষম হয়েছিলেন। 

আর এ সমস্ত কারণ বিশ্লেষণ করলে কর্ণসুবর্ণের গুরুত্ব সর্বাধিক। মূলত শশাঙ্ক উত্তর ভারতের শত্রুদের হাত থেকে গৌড় রাজ্যকে নিরাপত্তা বিধান করার জন্য কর্ণসুবর্ণকে তার রাজধানী বানান এবং সম্পদে পরিপূর্ণ করে সুসজ্জিত নগরে পরিণত করেন। 

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url
আরও পড়ুনঃ
আরও পড়ুনঃ