সুলতান আল নাসিরের বৈদেশিক নীতি আলোচনা কর

সুলতান আল নাসিরের বৈদেশিক নীতি আলোচনা কর
সুলতান আল নাসিরের বৈদেশিক নীতি আলোচনা কর

সুলতান আল নাসিরের বৈদেশিক নীতি আলোচনা কর

  • অথবা, সুলতান আল নাসিরের বৈদেশিক নীতি সম্পর্কে বর্ণনা কর।

উত্তর : ভূমিকা : মিশরে মামলুক সুলতানদের মধ্যে আল নাসির সর্বশেষ শ্রেষ্ঠ সুলতান ছিলেন। তিনি দীর্ঘ ৪২ বছর অত্যন্ত সাফল্যের সাথে শাসনকার্য পরিচালনা করেন। 

তার বৈদেশিক নীতি ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও ফলপ্রসূ। মামলুক বংশের স্থায়িত্ব বিধানে তার অবদান অনস্বীকার্য ।

→ পরিচয় ও সিংহাসন আরোহণ : সুলতান আল নাসির ১২৮৪ খ্রিস্টাব্দে মিশরের কায়রো নগরীতে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম ছিল ঝালাউন এবং মাতার নাম আশলুন বিনতে শাকতেহ। 

ভ্রাতা আল খলিল, আল আশরাফের মৃত্যুর পর তিনি ১২৯৩ খ্রিস্টাব্দে মামলুক বংশের সুলতান হন। তিনি ১৩৪১ খ্রিস্টাব্দে শাসন ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন ।

সুলতান আল নাসিরের বৈদেশিক নীতি : নিম্নে সুলতান আল নাসিরের বৈদেশিক নীতি সম্পর্কে আলোকপাত করা হলো :

১. দিল্লীর সাথে সম্পর্ক স্থাপন : সুলতান আল নাসির ক্ষমতায় এসে ভারতের সুলতান মুহাম্মদ বিন তুঘলকের সাথে সুসম্পর্ক গড়ে তোলেন। 

মুহাম্মদ বিন তুঘলক পারস্যে জয়ের বাসনা করেন এবং পশ্চিম পারস্য আক্রমণ করার অনুরোধ করে মুহম্মদ বিন তুঘলক ১৩৩১ সালে মিশরের রাজধানী কায়রোতে দ্রুত পাঠান। নাসির দ্রুতকে সাদরে গ্রহণ করেন ।

২. ফ্রান্স সম্রাটের সাথে আল নাসিরের বন্ধুত্ব : ফ্রান্সের সম্রাট ৬ষ্ঠ ফিলিপ নাসিরের সাথে বন্ধুত্ব সম্পর্ক স্থাপন করেন। ফিলিপ এজন্য নাসিরকে দূত প্রেরণ করলে, তিনি তা সাদরে গ্রহণ করেন ।

৩. পোপ ও আল নাসিরের মধ্যে পত্র বিনিময় : রোমের পোপ মামলুক সুলতানকে ১৩২৭ সালে এক পত্র বিনিময়ের মাধ্যমে জানান, সাম্রাজ্যে বসবাসরত সংখ্যালঘু মুসলমানদের প্রতি তিনি আন্তরিক থাকবেন ! 

এছাড়াও এছাড়াও পোপ ফিলিস্তিনের জেরুজালেমকে খ্রিস্টানদের অধীনে ছেড়ে দেওয়ার অনুরোধ করেন। আল নাসির এই প্রস্তাব নাকচ করে দেন।

৪. ইলখানী সুলতানের সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক : আল নাসির বৈদেশিক নীতির মধ্যে অন্যতম ছিল পারস্যের ইলখানী সুলতান আবু সাঈদের সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তোলা। আল নাসির ইলখানী সুলতানের সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ স্থাপনের জন্য দূত প্রেরণ করেন ।

৫. পশ্চিম আফ্রিকা, মরক্কো ও আবিসিনিয়ার সাথে কূটনৈতিক সম্পর্ক : আল নাসিরের পররাষ্ট্রনীতির আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো পশ্চিম আফ্রিকা, মরক্কো ও আবিসিনিয়ার সাথে কূটনৈতিক সম্পর্ক। 

তিনি এসব দেশের সাথে কূটনৈতিক সম্পর্ক গড়ে তোলেন। মরক্কোর শাসনকর্তা কায়রোতে দূত প্রেরণ করলে খলিফা সহজে তা গ্রহণ করেন ।

উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, খলিফা আল নাসির মামলুক শাসকদের মধ্যে অন্যতম শ্রেষ্ঠ সুলতান ছিলেন। আল নাসিরের বৈদেশিক নীতি তার রাজনৈতিক প্রজ্ঞার পরিচয় বহন করে।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url
আরও পড়ুনঃ
আরও পড়ুনঃ