আলাউদ্দিন হোসেন শাহ কে ছিলেন। আলাউদ্দিন হুসেন শাহের পরিচয় দাও

আলাউদ্দিন হোসেন শাহ কে ছিলেন। আলাউদ্দিন হুসেন শাহের পরিচয় দাও
আলাউদ্দিন হোসেন শাহ কে ছিলেন। আলাউদ্দিন হুসেন শাহের পরিচয় দাও

আলাউদ্দিন হোসেন শাহ কে ছিলেন। আলাউদ্দিন হুসেন শাহের পরিচয় দাও

  • অথবা, আলাউদ্দিন হুসেন শাহ সম্পর্কে লিখ।

ভূমিকা : "Husain Shah's long reign of more than a quater of a century war a period of peace and prosperity. অর্থাৎ হুসেন শাহের প্রায় ২৫ বছরের শাসনকাল শান্তি ও সমৃদ্ধির যুগ ছিল। 

বাংলায় হাবশি শাসনের অবসান ঘটিয়ে হুসেন শাহ স্বীয় শাসন প্রতিষ্ঠা করেন। শাসন ক্ষমতা লাভের পূর্বে তিনি একজন উজির ছিলেন। 

হাবশি শাসনের সময়কালে সিংহাসন নিয়ে বিবাদ, ষড়যন্ত্র, হত্যা প্রভৃতির দ্বারা রাজ্যে বিশৃঙ্খল অবস্থা বিরাজমান ছিল। 

এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণের জন্য বাংলায় একজন যোগ্য শাসকের প্রয়োজন হয়ে পড়ে। আলাউদ্দিন হুসেন শাহ অসীম যোগ্যতা নিয়ে এ সময়ে বাংলায় শাসক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন। 

তিনি সময়ের যোগ্য শাসক হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হন। এর ফলে বাংলায় পুনরায় সূচিত হলো শাস্তি ও শৃঙ্খলার যুগ।

— আলাউদ্দিন হুসেন শাহ : বাংলায় মুসলিম সুলতানদের মধ্যে আলাউদ্দিন হুসেন শাহ সম্ভবত সর্বশ্রেষ্ঠ শাসক ছিলেন। সুশাসক হিসেবে তার খ্যাতি উড়িষ্যা থেকে ব্রহ্মপুত্র অববাহিকা অঞ্চল পর্যন্ত বিস্তৃত ভূ-ভাগে ছড়িয়ে রয়েছে। 

নিম্নে হুসেন শাহ সম্পর্কে বর্ণনা দেওয়া হলো :

১. জন্ম : আলাউদ্দিন হুসেন শাহের জন্ম সন সম্পর্কে তেমন কোনো তথ্য প্রমাণ পাওয়া যায়নি। হুসেন শাহের প্রকৃত নাম হলো সৈয়দ হুসাইন। তিনি আরব দেশের বংশোদ্ভূত বলে অনেকে ধারণা করেন।

২. বংশ পরিচয় : হুসেন শাহ সৈয়দ বংশে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম সৈয়দ আশরাফ আল-হোসেনী। তার মাতার নাম সম্পর্কে জানা যায়নি। তবে রামপ্রাণ গুপ্ত লিখেছেন- তাঁহার (হোসেনের) মাতা হিন্দু ছিলেন এরূপ জনপ্রবাদও বিরল নহে।”

৩. বসবাস : হুসেন শাহের পিতা কিভাবে বাংলাতে আসেন সে সম্পর্কে তেমন কিছু জানা যায়নি। রাঢ়ের চাঁদপুর বা চাঁদপাড়া অঞ্চলে তার প্রথম জীবনের কিছু সময় কেটেছিল বলে। জানা যায়। এখানে তার মানবেতর জীবনের কথাও জানা যায়।

৪. কর্মজীবন : হুসেন শাহ গৌড়ের শাসনকর্তা বা অধিকারী সুবুদ্ধি রায়ের অধীনে কিছুদিন চাকরি করেছিলেন। সুবুদ্ধি রায় তাকে দীঘি কাটার ভার দিয়েছিল। তবে তার কাজে গাফিলতি হওয়ায় সুবুদ্ধি রায় তাকে চাবুক মেরেছিলেন বলে জানা যায় ।

৫. ক্ষমতালাভ : হুসেন শাহ বাংলার রাজধানী গৌড়ে যান। সেখানে তিনি মুজাফ্ফর শাহের অধীনে চাকরি গ্রহণ করেন। নিজ যোগ্যতাবলে তিনি উজির পদ লাভ করেন। তার পরামর্শে রাজা সৈন্যদের বেতন কমিয়ে দেন। 

ফলে সৈন্যদের মধ্যে অসন্তোষ সৃষ্টি হয়। হুসেন শাহ এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে মুজাফ্ফর শাহকে উচ্ছেদ করে সিংহাসন দখল করেন। ১৪৯৩-৯৪ সালের মধ্যে তিনি নিজেকে বাংলায় শাসক হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেন।

৬. মৃত্যু : হুসেন শাহ প্রায় ২৬ বছর শাসন করেন। তার শাসনকাল বাংলার ইতিহাসে খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি অধ্যায় স্বরূপ প্রতীয়মান হয়। তিনি একজন নিষ্ঠাবান মুঘলমান ছিলেন । 

কথিত আছে তিনি প্রতিবছর পায়ে হেঁটে পান্ডুয়ায় এসে সুফির দরগাহে সম্মান প্রদর্শন করতেন। তিনি ১৫১৯ খ্রিষ্টাব্দে মৃত্যুবরণ করেন ৷

উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, মধ্যযুগীয় বাংলার ইতিহাসে আলাউদ্দিন হুসেন শাহের রাজত্বকাল নিঃসন্দেহে অত্যন্ত গৌরবজনক। 

অভ্যন্তরীণ শান্তি ও শৃঙ্খলা স্থাপন করে হুসেন শাহ রাজ্যসীমা সম্প্রসারণে প্রভূত সাফল্য অর্জন করেছিলেন। 

তার উদার শাসনের কারণে হিন্দু লেখকগণ তাকে “নৃপতি তিলক জগৎভূষণ” কৃষ্ণাবতার প্রভৃতি উপাধিতে ভূষিত করেছেন। 

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url
আরও পড়ুনঃ
আরও পড়ুনঃ