বিজয় সেন কে ছিলেন । বিজয় সেনের পরিচয় দাও

বিজয় সেন কে ছিলেন । বিজয় সেনের পরিচয় দাও
বিজয় সেন কে ছিলেন । বিজয় সেনের পরিচয় দাও

বিজয় সেন কে ছিলেন । বিজয় সেনের পরিচয় দাও

  • অথবা, বিজয় সেনের জীবনী সংক্ষেপে আলোচনা কর।

উত্তর : ভূমিকা : বাংলাদেশের ইতিহাসে বিজয় সেনের নাম অবিস্মরণীয়। তিনিই ছিলেন এই বংশের সর্বপ্রথম স্বাধীন ও শক্তিশালী রাজা এবং তার রাজত্বকালেই সেন বংশের শাসন সুপ্রতিষ্ঠিত হয়। 

হেমন্ত সেনের পুত্র বিজয় সেন খুব সম্ভবত ১০৯৮ থেকে ১১৬৩ খ্রিষ্টাব্দে পর্যন্ত বাংলাদেশ রাজত্ব করেন। প্রাচীন বাংলার ইতিহাসে বিজয় সেনই সর্বপ্রথম সমগ্র বাংলা জুড়ে স্বাধীন এক রাজ্য প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হন।

[] বিজয় সেনের পরিচয় : সেনরা জাতিতে ব্রাহ্মণে ছিলেন। কারো কারো মতে তারা ব্রাহ্ম ক্ষত্রিয় ছিলেন। ঐতিহাসিকদের সেনদের পূর্ব-পুরুষ সম্ভবত দাক্ষিণাত্যের কণাটের অধিবাসী ছিলেন।

দক্ষিণাত্যের চালুক্য রাজা ষষ্ঠ বিক্রমাদিত্যের চালুক্য বাহিনীর সাথে সেনদের পূর্বপুরুষ বাংলায় আসে। বাংলার রাঢ় অঞ্চলে তারা বসবাস শুরু করে। 

সেনরা পাল রাজাদের পৃষ্ঠপোষকতা লাভ করে। তারা পাল রাজাদের রাজদরবারে উচ্চপদে চাকরি গ্রহণ করে। আবার কেউ কেউ সেনাবাহিনীতে যোগদান করে।

পাল সাম্রাজ্যের অন্তর্গত পশ্চিম বঙ্গের রাঢ় অঞ্চলে সামন্ত রাজা ছিলেন হেমন্ত সেন। হেমন্ত সেনের মৃত্যুর পর তার পুত্র বিষয়'সেন সামন্ত রাজা হন। 

বিজয় সেনের অপর নাম ছিল ধীসেন। ক্ষমতায় আরোহণ করে বিজয় সেন সামন্তরাজ, দক্ষ রণকুশলী ও দূরদর্শী হয়ে ওঠেন। 

তিনি পরমেশ্বর ও মহারাজাধিরাজ উপাধি ধারণ করেন। পাল সাম্রাজ্যের উত্তরাংশে সামন্ত রাজারা বিদ্রোহ করলে পালবংশের পরবর্তী রাজার সে বিদ্রোহ দমনে ব্যর্থ হয়। 

ফলে পালবংশের শাসন দুর্বল হয়ে পড়ে। সে সুযোগে শত্রু সৈন্য পরাজিত করেন ও ক্ষমতা দখল করেন। 

শত্রু সৈন্য পরাজিত করে বিজয় লাভ করার পর তিনি নিজেকে বিজয় সেন নাম ধারণ করেন। বিজয় সেন সমগ্র বাংলায় ক্ষমতা দখল করে সুদীর্ঘ ৬২ বছর বাংলায় রাজত্ব করেন।

উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, বিজয় সেন একজন অসামান্য প্রতিভাবান রাজা ছিলেন। পালবংশের শাসনাবসানে বাংলাদেশে যে চরম বিশৃঙ্খলা ও অরাজকতা দেখা গিয়েছিল তা থেকে তিনি বাংলা এবং এর অধিবাসীকে রক্ষা করেছিলেন। 

তিনি ছিলেন একজন দুর্ধর্ষ বীর যোদ্ধা। তার সাহস ছিল অপরিসীম এবং তার সামরিক দূরদর্শিতা ছিল অতুলনীয়। 

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url
আরও পড়ুনঃ
আরও পড়ুনঃ