বল্লাল সেনের আমলে কৌলিন্য প্রথার প্রবর্তন ছিল কি না

বল্লাল সেনের আমলে কৌলিন্য প্রথার প্রবর্তন ছিল কি না
বল্লাল সেনের আমলে কৌলিন্য প্রথার প্রবর্তন ছিল কি না

বল্লাল সেনের আমলে কৌলিন্য প্রথার প্রবর্তন ছিল কি না

  • অথবা, বল্লাল সেন কি সত্যিই কৌলিন্য প্রথার প্রবর্তক ছিলেন?

উত্তর : ভূমিকা : প্রাচীন বাংলার সেন শাসনের ইতিহাসে বল্লাল সেন এক অবিস্মরণীয় নাম। বাংলার ইতিহাসে যে কয়জন শাসক তাদের কর্মকাণ্ডের জন্য অমর হয়ে আছেন বল্লাল সেনের নাম তাদের মধ্যে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। 

বল্লাল সেন বিদ্যান ও বিদ্যোৎসাহী শাসক ছিলেন। তিনি বাংলার ইতিহাসে কৌলিন্য প্রথার প্রবর্তক হিসেবে অমর হয়ে আছেন। নিম্নে প্রশ্নালোকে আলোচনা করা হলো :

কৌলিন্য প্রথার প্রবর্তন : প্রাচীন বাংলার ইতিহাসে বল্লাল সেনকে কৌলিন্য প্রথার প্রবর্তক হিসেবে গণ্য করা হয়। তিনি বাংলার হিন্দু সমাজের সমাজসংস্কার করার জন্য উচ্চ বর্ণের হিন্দুদের মধ্যে অর্থাৎ ব্রাহ্মণ, বৈদ্য, কায়ন্ত এ তিন শ্রেণির মধ্যে কৌলিন্য প্রথার প্রবর্তন করেন। 

অনেক ঐতিহাসিক মনে করেন কৌলিন্য প্রথা প্রবর্তনের পিছনে বল্লাল সেনের রাজনৈতিক উদ্দেশ্য ছিল। সে সময়কার ইতিহাস বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় যে, ব্রাহ্মণ হিন্দুগণ ছিল বল্লাল সেনের মতের বিরুদ্ধে তাদের সমর্থনে আনার জন্য তার সমর্থকদের কুলীন ঘোষণা করে স্বতন্ত্র একটি শ্রেণির সৃষ্টি করেন।

ড. নীহাররঞ্জন রায় কৌলিন্য প্রথা সম্পর্কে বলেন, বল্লাল সেন ছিলেন ঘোর রক্ষণশীল। তিনি হিন্দু সমাজের উচ্চশ্রেণির মধ্যে কৌলিন্য প্রথা প্রবর্তন করে জাতিভেদ প্রথাকে তীব্র করেন।

অন্য এক গবেষণায় দেখা যায় যে, বল্লাল সেনের সাথে কৌলিন্য প্রথার কোনো যুক্তিযুক্ত প্রমাণ নেই। কেননা যদি বল্লাল সেন কৌলিন্য প্রথা প্রবর্তন করতেন তাহলে অবশ্যই তার সময় উৎকীর্ণ শিলালিপি এবং সাহিত্যে এর বিবরণ পাওয়া যেত। কিন্তু সেন যুগের এসব উৎসে এর বিন্দুমাত্র আভাস নেই।

উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, বল্লাল সেন সেন সিংহাসনে আরোহণ করে বাংলার ইতিহাসে আলোড়ন সৃষ্টি করেন তার কর্মের মাধ্যমে। 

তিনি সিংহাসনে আরোহণ করে পিতৃরাজ্য শত্রুর হাত থেকে রক্ষা করে এর অভ্যন্তরীণ শৃঙ্খলা বজায় রাখেন। 

আর এসব অভ্যন্তরীণ বিষয়গুলো সমাধান করতেই তিনি বাংলায় কৌলিন্য প্রথার প্রবর্তন করেন, যা তাকে ইতিহাসে অমর করে রেখেছে। 

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url
আরও পড়ুনঃ
আরও পড়ুনঃ