দেববংশ সম্পর্কে জানার উৎসগুলো সংক্ষেপে আলোচনা কর

দেববংশ সম্পর্কে জানার উৎসগুলো সংক্ষেপে আলোচনা কর
দেববংশ সম্পর্কে জানার উৎসগুলো সংক্ষেপে আলোচনা কর

দেববংশ সম্পর্কে জানার উৎসগুলো সংক্ষেপে আলোচনা কর

  • অথবা, কোন কোন মাধ্যম থেকে আমরা দেব রাজবংশ সম্পর্কে জানতে পারি?

উত্তর : ভূমিকা : ইতিহাস অনুসন্ধানে উৎসের গুরুত্ব অপরিসীম। কেননা উৎসের উপর নির্ভর করেই আমরা অতীত সম্পর্কে জানতে পারি । আর বিশেষ করে প্রাচীন বাংলার ইতিহাস রচনায় উৎসের প্রয়োজনীয়তা অপরিহার্য। 

বাংলার দক্ষিণ পূর্বাঞ্চলে প্রাপ্ত তাম্রশাসন ও অন্যান্য সূত্র থেকে দেববংশ সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়। যা থেকে এই অঞ্চলের রাজনৈতিক সত্তার পরিচয় পাওয়া যায়।

→ দেববংশ সম্পর্কে জানার উৎস : দক্ষিণ-পূর্ব বাংলার রাজবংশগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য রাজবংশ ছিল দেববংশ। তাম্রশাসন, মূর্তিলিপি ও মুদ্রা থেকে প্রাপ্ত তথ্যের আলোকে এ বংশ সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়।

নিচে পৃথকভাবে সেগুলো আলোচনা করা হলো :

তাম্রশাসন : প্রাপ্ত তিনটি তাম্রশাসন থেকে বাংলার ইতিহাসে দেবরাজবংশের অবস্থিতি সম্পর্কে অবহিত হওয়া যায় । এ তিনটি তাম্রশাসনের মধ্যে দুটি পাওয়া গেছে কুমিল্লা জেলার ময়নামতিতে লালমাই অঞ্চলের শালবন বৌদ্ধবিহারে পণ্ডিতগণ একটি তাম্রশাসনের পাঠোদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছেন। 

এ তাম্রশাসন দ্বারা মহারাজ শ্রী আনন্দদেব ভূমিদান করেছেন এবং পরবর্তী রাজা শ্রী ভবদেব এই দান অনুমোদন করেছে। 

ডি.সি. সরকারে কর্তৃক ১৯৫১ সালে প্রকাশিত তৃতীয় তাম্রশাসনটি কলকাতা এশিয়াটিক সোসাইটি অব বেঙ্গল এ সংরক্ষিত আছে।

তৃতীয় তাম্রশাসনটি দ্বারা শ্রী ভবদেব কর্তৃক ভূমিদানের কথা লিপিবদ্ধ আছে। এ তিনটি তাম্রশাসন থেকে দেববংশের নিম্নলিখিত ৪ জন রাজার সন্ধান পাওয়া যায় তারা হলেন : 

(ক) শ্রী শান্তিদেব; 

(খ) শ্রী বীরদেব; 

(গ) শ্রী আনন্দদেব ও 

(ঘ) শ্রী ভবদেব।

→ মূর্তিলিপি : কুমিল্লার দেউলবাড়িতে প্রাপ্ত একটি মূর্তিলিপি থেকে দেববংশ সম্পর্কে জানা যায়। এ মূর্তিলিপি থেকে এই বংশের ৩ জন রাজার নাম পাওয়া যায় তারা হলেন : 

(ক) খড়গোদ্যম; 

(খ) জাতখড়গ ও 

(গ) দেবখড়গ।

মুদ্রা : প্রাপ্ত কিছু সংখ্যক মুদ্রা থেকে দেব উপাধিধারী রাজবংশের পরিচয় পাওয়া যায়। এ থেকে ধারণা করা হয় যে, অষ্টম শতাব্দীর প্রথমভাগে দক্ষিণ-পূর্ব বাংলা অঞ্চলে দেব রাজবংশের উদ্ভব হয়েছিল।

উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, শিলালিপি, মুদ্রা, তাম্রশাসক প্রভৃতিই হলো অতীত ইতিহাস সম্পর্কে জ্ঞান লাভের অন্যতম উৎস। 

আর এই ধারাবাহিকতায় তিনটি তাম্রশাসন কিছু মুদ্রা ও একটি মূর্তিলিপি থেকে আমরা দক্ষিণ -পূর্ব বাংলার রাজবংশ দেববংশ সম্পর্কে আমরা অবহিত হতে পারি । 

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url
আরও পড়ুনঃ
আরও পড়ুনঃ