ধনীদের পাতা এই তিনটি ফাঁদের কারণে মধ্যবিত্তরা সারাজীবনেও ধনী হতে পারে না

ধনীদের পাতা এই তিনটি ফাঁদের কারণে মধ্যবিত্তরা সারাজীবনেও ধনী হতে পারে না
ধনীদের পাতা এই তিনটি ফাঁদের কারণে মধ্যবিত্তরা সারাজীবনেও ধনী হতে পারে না

বর্তমান সময়ে এই পৃথিবীতে কত কিছুই বদলে গেছে মানুষ গুহা থেকে আজকে চাঁদে পোছেছে কিন্তু গরীবই যেখানে পড়ে ছিল সেখানেই পড়ে আছে সবকিছুর পরিবর্তন হলেও আমাদের মত গরীব আর মধ্যবিত্তদের কোনো পরিবর্তন হয়নি। 

তিন চার বছর পর পর সামান্য বেতন বাড়ে ঠিকই কিন্তু দ্রব্যমুল্যের ঊর্ধ্বগতির বেড়াজালে পড়ে নুন আনতে পান্তা ফুড়ায়। একজন গরীব জন্ম হয় গরীব হয়ে আর তাকে মরতেও হয় গরীব হয়ে। 

কিন্তু কেন? কখনো কি ভেবেছেন? 

যে কেনো একজন গরীব মধ্যবিত্ত সারাদিন কঠোর পরিশ্রম করার পরও দিনশেষে ৫০০ থেকে ১০০০ টাকা পায় অথচ এর থেকে কম পরিশ্রমে করে ধনীরা কিভাবে কোটি কোটি টাকা কামিয়ে নিচ্ছে। 

এর পিছনে বড় এক রহস্য লুকিয়ে আছে যা গোপনে হাজার হাজার বছর ধরে চালিয়ে যাচ্ছে ধনীরা। কেউ আপনাকে এই সম্পর্কে বলবেই না বা পাঠ্যপুস্তকেও কেউ আপনাকে পড়ানো হবেনা কারণ নাম বললে চাকরি থাকবে না।

আমি আপনি সবাই এই ধনীদের পাতা ফাদে পড়ে আছি যার নাম হলো (MIDDLE CLASS TRAP) বা মধ্যবিত্তদের ফাদ। আপনি যা কিছু করুন না কেনো এই ফাদ থেকে বের হয়ে গরীব জীবন থেকে মুক্তি পাবেন না  যতক্ষন না এই ট্রাপ টাকে সহজ ভাবে বুঝতে পারেন। 

আপনি সারাদিন কাজ করেন ঠিকই কিন্তু সেটা আপনার জন্য নয় বা আপনার সন্তানের ভবিষ্যতের জন্য নয়, আপনি কাজ করছেন ধনীকে আরও ধনী বানানোর জন্য। 

তো আজকে এই আরকে রায়হান ওয়েবসাইটের আর্টিকেলে হাজার হাজার বছর ধরে  চলে আসা  Middle class Trap এর গোপন রহস্য উম্মোচন করব এবং ৩ টি গোপন উপায় বলব যার মাধ্যমে এই ট্রাপ থেকে বের হয়ে আপনিও গরীব জীবন থেকে মুক্তি পাবেন। 

Middle class Trap টাকে বুঝতে হলে মানঅব ইতিহাসের একটু পিছনে যেতে হবে - আজ থেকে ৭০০ বছর আগে ইউরোপে একটা প্রথা ছিল যার নাম হচ্ছে ম্যানর প্রথা । এই প্রথার একটা নিয়ম ছিল, কোনো গরীব মানুষ  জমিদারের অনুমতি ছাড়া তার এলাকা ছেলে অন্য কোনো এলাকায় যেতে পারতো না এবং অন্য কোনো এলাকার মানুষের সাথে কথা বলাও নিসিদ্ধ ছিল। 

তো তখন জমিদাররা কি করতো গ্রামের চারপাশে একধরনের মোটা গাছ রোপন করতো আর গাছ গুলো কাছাকাছি লাগাত যেনো  বড় হয়ে একটা গাছ আরেকটা গাছের সাথে লেগে থাকে এতে গ্রামের মানুসেরা রাতের অন্ধকারে কোথাও পালিয়ে যেতে পারতো না। এই রকম গাছের ওয়াল বানানোর জন্য জমিদারদের আরও অনেকগুলো উদ্দেশ্য ছিল তার মধ্যে ২ টি সবচেয়ে বড় উদ্দেশ্য ছিল  

প্রথমটা হচ্ছেঃ গ্রামের মানুষেরা যে পন্য উৎপাদন করবে সেই পন্য যেনো অন্য কোনো গ্রামে বিক্রি করতে না পারে, জমিদাররা যাই দেয় সেই দামেই যেনো বিক্রি করতে হয়। 

এতে জমিদাররা কম দামে পন্য কিনে স্টক করে রাখতো পরে যখন গ্রামে অভাব দেখা দিত  তখন সেই পন্য  বেশি দামে বিক্রি  করত। বর্তমানে  সময়ে বড় বড় ব্যবসায়ীরা যেটা আমাদের সাথে করতেছে। এতে যদি কোনো কৃষক পন্য কিনতে না পারতো তাহলে তাকে চড়া শুধে ঋণ দেওয়া হতো।

দ্বিতীয় উদ্দেশ হচ্ছেঃ ইউরোপে এক সময় দাস প্রথা খুব বেশি প্রচলন ছিল ।  যারা গরীব  হত দরিদ্র ছিল তাদেরকে ধনীরা দাস হিসেবে কিনে নিতো এবং চাকর বাকরের মত কাজ করাতো । সময়ের ব্যবধানে  ইউরোপে দাসদের নির্যাতনের পরিমান বৃদ্ধি পায়। 

যার ফলে দাসরা নির্যাতন সহ্য করতে না পারে সব দাস এক সাথে হয়ে মালিকদের বিরুদ্ধে একটা বিপ্লব ঘোষণা করে তাদের মুক্তির দাবিতে যেটা ইতিহাসে দাস বিপ্লব নামে পরিচিত। সেই বিপ্লবে  সব দাসরা মিলে মালিকদের ধরে ধরে মারতে থাকে, অনেকেরই ফাসি দিয়ে দেয় আবার অনেককে পুড়িয়ে হত্যা করা হয় এতে  সব মালিকরা ভয় পেয়ে সব দাসদের মুক্তি দিয়ে দেয়। 

তো এই কারনে মুলত ঐ বিপ্লবের কথা চিন্তা করেই জমিদাররা ভয় করত যে সব গ্রামের মানুষ যদি সবাই এক সাথে তাদের বিরুদ্ধে বিপ্লব ঘোষণা করে  তাহলে তাদের পক্ষে এত মানুষকে সামলানো  কোনো ভাবে সম্ভব না তাই তারা এভাবে ম্যানর প্রথার মাধ্যমে প্রত্যকেটা গ্রামকে আলাদা ভাবে বিভক্ত করে  গাছের মাধ্যমে দেয়াল তেরি করে রাখতো । 

এই ম্যনর প্রথার আরেকটা বিষয় ছিল জমিদাররা সবসময় কৃষকদের ঋণের ফাদে বন্দি করে রাখতো। বিভিন্ন সময়  তারা কৃষকদের  ভুলভাল বুঝিয়ে  চড়া শুধের ঋণ দিতো  এতে কৃষকরা কোনো ভাবেই  এই ঋণের সুধ থেকে মুক্ত হতে পারতো না।  

বর্তমানে  সময়ে  ধনীদের পাতা  ঋণের ফাদের নাম হচ্ছে  কিস্তি । আমাদেরকে বড় বড় ব্যাংকের কর্মচারীরা কিস্তির ফাদে ফেলে হাতিয়ে নিচ্ছে মোটা অংকের সুধ। আর এই সুধের কিস্তি কিস্তি দিতে দিতেই আমাদের বছর শেস হয়ে যায়। 

কৃষকরা জমিদারদের ঋণ পরিশোধ করতে না পারলে তারা জমিদারদের কাছে থেকে মুক্তি পেত না যার ফলে কৃষকের ছেলে এবং তার ছেলে পরিবর্তী প্রজরন্মের সবাইকে জমিদারের গোলামি করতে হতো। 

আর  জমিদাররা কোনো কিছু না করেই বছরের পর বছর প্রজরন্মের পর প্রজরন্ম তারা আরাম আয়সে জীবন যাপন করতো। বর্তমান আমাদের আধুনিক সমাজে সেই ম্যানর প্রথা  নেই ঠিকই কিন্তু ধনীরা আমাদের একটা শৃঙ্খলের মধ্যে বন্দি করে রেখেছে। 

যে শৃঙ্খলের জন্য আমরা  তাদের বিরুদ্দে চাইলেও কিছু করতে পারিনা। তারা কিছু ফাদ পেতে রেখেছে যে ফাদের কারনে  সারা জীবন আমাদের তাদের গোলামি করতে হয়। তার অন্যতম একটি ফাদ হচ্ছে আমাদের এই বর্তমান সময়ের Poor Education System বা (গরিবীই শিক্ষা ব্যবস্থা) । 

আমাদের বর্তমান সময়ের Education System টা এমন যে আমরা যদি ধনী হয়েও স্কুল কলেজে ভর্তি হয় তাহলে সেখান থেকে গরীব হয়ে আমাদের বের হতে হয়। আপোনি কি কখনো দেখেছেন কোনো ধনি ব্যক্তির সন্তান শিক্ষা গ্রহন করার পর চাকরি করতে, তারা কখনো ডাক্তার বা ইঞ্জিনিয়ার বা সাংবাদিক হতে। বাংলাদেশের প্রাণ আর এফ এল গ্রুপ আপনারা তো সবাই প্রাণ আর এফ এল গ্রুপকে চিনেন। বাংলাদেশে এমন কোনো পন্য নেই যে তারা তেরি করে না। 

এর প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন আমজাদ  খান চোধুরি। তার ছেলে যুক্তরাষ্ট্র থেকে পড়াশোনা করে এসেছে। তিনি যুক্তরাষ্ট্র থেকে পড়াশোনা করার পরও বাংলাদেশে এসে ডাক্তার কিংবা জর্জ ব্যারিস্টার হননি।  তিনি তার বাবার বিজনেস সামলাচ্ছেন। 

এখন বলতে পারেন আমজাদ খানের একমাত্র ছেলে তিনি যদি চাকরি করেন তাহলে তার বাবার বিজনেস কে সামলাবে। ঠিক আছে বাংলাদেশের অন্যতম আরেকজন ব্যবসায়ী হচ্ছেন বসুন্ধুরা গ্রুপ এন্ড ইন্ডিস্ট্রির মালিক আহমদ আকবর সুবহান। 

তার তো চার ছেলে কিন্তু কোনো ছেলেকেই ডাক্তার ইঞ্জিনিয়ার কিংবা জর্জ ব্যারিস্ট্রার বানাননি। তিনি চারজন ছেলেকেই যুক্তুরাস্ট্র থেকে পড়াশোনা করিয়েছেন। বাংলাদেশের সব বড় বড় ব্যবসায়ী কিংবা কর্মকর্তারা চায়  তার ছেলে মেয়েরা যেনো পড়াশোনা করে একজন ব্যবসায়ী হয়। 

অথচ আমাদের দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা এবং আমাদের বাবা মা ছোটবেলা থেকে শিখায় যে পড়াশোনা করে বড় হয়ে চাকরি করতে হবে। ছোটবেলা থেকে আমাদের মাথায় এটা ঢুকিয়ে দেওয়া হয় যে পড়াশোনা করতেই হবে যে শুধুমাত্র চাকরি করার জন্য ।  

আমি কিছুদিন আগে এক ভাইয়ের কাছে চমৎকার একটি গল্প শুনেছিলাম - একবার খুব ঘনিষ্ট দুই বন্ধু তার ইউনিভার্সিটি পড়াশোনা শেস করে নিজেদের লক্ষ্য উদ্দেশ্য পুরণ করার লক্ষ্যে বেরিয়ে পরে। দুইজন দুই প্রান্তে চলে যায় নিজেদের স্বপ্ন  পুরনের জন্য - হঠাত দুই বন্ধুর একদিন দেখা হয় প্রায় ২০ বছর পর একটি রিস্টুরেন্টে তখন -

প্রথম বন্ধুঃ ২য় বন্ধুটিকে জিজ্ঞেস করে কিরে কি অবস্থা তোর, কি করিস এখন? 

দ্বিতীয় বন্ধুঃ বলল এই তো এই রিস্টুরেন্টা চালাচ্ছি। 

তখন প্রথম বন্ধুটি বলল কি তুই রিস্টুরেন্ট চালাচ্ছিস এত নামি দামি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়াশোনা করে তুই রিস্টুরেন্ট চালাচ্ছিস। আমাকে দেখ আমি একটা মাল্টি ন্যাশনাল কোম্পানিতে জব করি আমার মান্থলি সেলারি ১ লাখ টাকা আর তুই কিনা রিস্টুরেন্ট চালাচ্ছিস। কত ইনকাম করিস তুই? 

তখন ঐ বন্ধুটি বলল আমার এখানে সর্বমোট ১০ জন কর্মী আছে আমি শুধু তাদেরকেই মাসিক বেতন দুই লাখ টাকা উপরে এরকম আরও চারটা রেস্টুরেন্ট আছে আমার তাহলে একবার চিন্তা করে দেখ আমার মাসিক ইনকাম কত?

তুই সারাদিন খাটা খাটনি করিস তোর বসের সন্তানদের ধনী বানানোর জন্য আর আমি কাজ করছি আমার সন্তানদের ধনী বানানোর জন্য।

তুই যদি মারা যাস তাহলে তোর চাকরিটা তোর সন্তান পাবে না কিন্তু আমি যদি মারা যায় তাহলে আমার এই চারটা  রিস্টুরেন্ট  এর মালিক হবে আমার সন্তানরা।

এই গল্পটির মতই আমরাও সারাদিন মেধা শক্তি পড়াশোনা বুদ্দি সময় সমস্ত কিছুই কাযে লাগিয়ে কাজ করছি ঐ সমস্ত বড় লোকদের জন্য ।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url
আরও পড়ুনঃ
আরও পড়ুনঃ