আল হাকিমকে খামখেয়ালি শাসক বলা হয় কেন

আল হাকিমকে খামখেয়ালি শাসক বলা হয় কেন
আল হাকিমকে খামখেয়ালি শাসক বলা হয় কেন

আল হাকিমকে খামখেয়ালি শাসক বলা হয় কেন 

  • অথবা, আল-হাকিমকে 'খামখেয়ালী শাসক' বলার কারণ কি?

উত্তর : ভূমিকা : ফাতেমীয় খলিফাদের মধ্যে আল-হাকিম সবচেয়ে বিতর্কিত ব্যক্তিত্ব ছিলেন। তাকে নানাভাবে সমালোচনা করা হয়েছে। 

তার নির্দেশ ও আদেশ ছিল খামখেয়ালিতে পরিপূর্ণ । তবে তিনি জ্ঞান-বিজ্ঞান ও দর্শনের পৃষ্ঠপোষকতা করার দরুন তার সৃষ্ট কিছু দুষ্টক্ষতের উপশম হয়।

→ খলিফা আল-হাকিমকে খামখেয়ালি শাসক বলার কারণ : পি. কে. হিট্টি, আমির আলীসহ আরো অনেক ঐতিহাসিক ফাতেমীয় খলিফা আল-হাকিমকে খামখেয়ালি শাসক বলে উল্লেখ করেছেন। তাকে খামখেয়ালি শাসক বলার কতিপয় কারণ নিম্নে বর্ণনা করা হলো :

১. খলিফাকে 'আমাদের মালিক' বলার পরিবর্তে 'আমিরুল মুমেনীন' বলে সম্বোধন করতে হবে বলে আইন পাস করেন।

২. আল-হাকিম আঙ্গুর চাষ বন্ধ এবং মদ্যপান নিষিদ্ধ করে দেন।

৩. আল-হাকিম তার মাথার চুল লম্ব রাখতেন, কৃষ্ণবর্ণের পশমের মোটা পোশাক পরতেন এবং একটি নির্দিষ্ট খচ্চরে আরোহণ করতেন। শেষের দিকে তিনি তার পোশাক পরিবর্তন করতেন না, ঘর্মাক্ত দেহে বলতে গেলে নোংরা অবস্থায় থাকতেন । 

৪ . তিনি কুরবানি ছাড়া পশু জবাহ করা নিষিদ্ধ করেন। 

৫. কলকারখানায় পায়ের কাজ নিষিদ্ধ করেন।

৬. প্রথমদিকে তিনি চরম গোঁড়া শিয়া ছিলেন, ফলে সুন্নিদের প্রতি বিশেষ করে প্রথম তিন খলিফার প্রতি অভিশাপ দেওয়ার ব্যবস্থা করেন।

৭. তার সবচেয়ে খেয়ালিপূর্ণ সিদ্ধান্ত ছিল রাতকে দিন অপেক্ষা অধিক গুরুত্বারোপ করা ।

৮. তিনি কুকুর ও শূকর পালন নিষিদ্ধ করেন ।

৯. তিনি রাতে ব্যবসায়-প্রতিষ্ঠানেও দোকান খোলা রেখে ক্রয়-বিক্রয়ের নির্দেশ দেন।

উপসংহার : পরিশেষে বলা যায়, আল-হাকিম যদি খেয়ালি প্রকৃতির শাসক না হতেন তবে তা ফাতেমীয় খিলাফতের জন্য নিঃসন্দেহে মঙ্গলজনক হতো। তার বিপরীতধর্মী কার্যকলাপ ফাতেমীয় খিলাফতের সংহতির মূলে কুঠারাঘাত করেছিল। 

তবে তার জ্ঞান-বিজ্ঞানের পৃষ্ঠপোষকতা ফাতেমীয় শাসনকে একটি উল্লেখযোগ্য আসনে অধিষ্ঠিত করেছিল। ১০২১ সালে ১৩ ফেব্রুয়ারি খলিফা হাকিম রহস্যজনকভাবে মৃত্যুবরণ করেন ।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url
আরও পড়ুনঃ
আরও পড়ুনঃ