প্রথম মহীপাল কিভাবে সাম্রাজ্য বিস্তার ও আক্রমণ প্রতিহত করেছিল লিখ

প্রথম মহীপাল কিভাবে সাম্রাজ্য বিস্তার ও আক্রমণ প্রতিহত করেছিল লিখ
প্রথম মহীপাল কিভাবে সাম্রাজ্য বিস্তার ও আক্রমণ প্রতিহত করেছিল লিখ

প্রথম মহীপাল কিভাবে সাম্রাজ্য বিস্তার ও আক্রমণ প্রতিহত করেছিল লিখ

  • অথবা, প্রথম মহীপাল কিভাবে সাম্রাজ্য বিস্তার ও আক্রমণ প্রতিহত করতে সক্ষম হয়েছিলেন? 

উত্তর : ভূমিকা : 'প্রথম মহীপাল দ্বিতীয় পাল সাম্রাজ্যের সময়কালে অন্যতম শক্তিশালী নরপতি ছিলেন। দশম শতাব্দীতে যখন পালবংশ চরম দুর্দশা ও অবনতির চরম শিখরে পৌঁছেছিল তখন দ্বিতীয় বিগ্রহপালের পুত্র প্রথম মহীপাল সিংহাসন আরোহণ করে বিলুপ্তপ্রায় পাল সাম্রাজ্যের উদ্ধার ও পুনরায় পাল সাম্রাজ্য পুনঃপ্রতিষ্ঠা করে অতুলনীয় কীর্তি অর্জন করেন। 

তার পূর্বপুরুষ ধর্মপাল ও দেবপালের মতো তিনিও সুনিপুণ যোদ্ধা ছিলেন। তিনি উত্তরাধিকারীসূত্র কেবলমাত্র মগধের রাজ্য পান। কিন্তু নিজ বাহুবলে তার রাজ্য বহুদূর পর্যন্ত বিস্তৃত করেন।

→ সাম্রাজ্য বিস্তার ও আক্রমণ প্রতিহত : প্রথম মহীপালকে পালবংশের দ্বিতীয় প্রতিষ্ঠাতা বলা হয়। তার সাম্রাজ্য বিস্তার ও আক্রমণ প্রতিহতকরণ সম্পর্কিত আলোচনাকে আমরা দুভাগে ভাগ করতে পারি । যেমন- 

(ক) বৈদেশিক আক্রমণ প্রতিহতকরণ । 

(খ) বিভিন্ন রাজ্য জয় ।

→ বৈদেশিক আক্রমণ প্রতিহতকরণ : প্রথম মহীপালের রাজত্বকালে সবচেয়ে বড় ঘটনা হলো বাংলায় চোল আক্রমণ। চোলদের রাজা রাজেন্দ্র চোল দক্ষিণ ভারতের একজন পরাক্রান্ত রাজা ছিলেন ।

তিনি তার সেনাপতিকে বাংলায় আক্রমণে পাঠান। মহীপাল সমগ্র বঙ্গদেশ জয় করার পূর্বে দক্ষিণ ভারতের চোলদের সাথে যুদ্ধে লিপ্ত হন। 

মহীপাল ভীত হয়ে রণস্থান ত্যাগ করলে তার দুর্মত্ত রণহস্তী, নারীগণ ও ধনরত্ন লণ্ঠন করে তারা উত্তর রাঢ় অধিকার করে গঙ্গাতীরে উপনীত হয় ।

এছাড়া ১০০০ খ্রিষ্টাব্দ থেকে ১০২৭ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত গজনির সুলতান মাহমুদ শাহ্ ১৭ বার পশ্চিম ভারত আক্রমণ প্রতিহত করার জন্য কোনো সাহায্য প্রেরণ করেননি। 

এ আক্রমণে ভারতের প্রসিদ্ধ মন্দির ও নগরগুলো ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়। এজন্য অনেক ঐতিহাসিকগণ তাকে ভীত কাপুরুষ বলে অভিহিত করেন। 

কিন্তু ড. রমেশচন্দ্র মজুমদার প্রথম মহীপালের বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগের যুক্তি দেখিয়ে বলেন, প্রথম মহীপাল মূলত পিতৃরাজ্য উদ্ধার করতে ব্যাপ্ত ছিলেন। 

তবে মুসলিম আক্রমণের কোনো প্রভাব মহীপালের রাজ্যে পড়েনি বলে তিনি বহিঃশত্রুর আক্রমণ প্রতিহত করার জন্য সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয় নি।

উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, পালবংশের দ্বিতীয় প্রতিষ্ঠাতা প্রথম মহীপাল তার পিতৃরাজ্যের হৃতগৌরব ফিরিয়ে আনার জন্য বৈদেশিক আক্রমণ প্রতিহত করার কোনো সুযোগ তিনি পাননি। তিনি তার পিতৃরাজ্য যথাযথভাবে পুনঃস্থাপিত করেন। 

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url
আরও পড়ুনঃ
আরও পড়ুনঃ