রামপাল কর্তৃক বরেন্দ্র পুনরুদ্ধারের ইতিহাস আলোচনা কর

রামপাল কর্তৃক বরেন্দ্র পুনরুদ্ধারের ইতিহাস আলোচনা কর
রামপাল কর্তৃক বরেন্দ্র পুনরুদ্ধারের ইতিহাস আলোচনা কর

রামপাল কর্তৃক বরেন্দ্র পুনরুদ্ধারের ইতিহাস আলোচনা কর

  • অথবা, রামপাল কর্তৃক বরেন্দ্র পুনরুদ্ধারের ইতিহাস তুলে ধর।

উত্তর : ভূমিকা : দ্বিতীয় মহীপালের মৃত্যুর পর পাল সাম্রাজ্য কিছুদিনের জন্য তাদের শাসন ক্ষমতা হারায় এবং দিব্যক সেখানে শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করে। 

রামপাল ক্ষমতায় এসে নিজে শক্তি অর্জন করে সামান্তদের সাথে নিয়ে দিব্যককে পরাজিত করে পাল সাম্রাজ্য উদ্ধার করে । সেখানে পুনরায় পাল শাসন প্রতিষ্ঠা করে।

→ রামপালের ক্ষমতায় আরোহণ : দ্বিতীয় মহীপালের পুত্র রামপাল আনুমানিক ১০৮২ খ্রিষ্টাব্দে পালবংশের ক্ষমতা গ্রহণ করে। নিজে শক্তি সঞ্চার করে পালবংশের হারানো গৌরব ফিরিয়ে আনতে কাজ করেন।

→ বরেন্দ্র পুনরুদ্বারের ইতিহাস : রামপাল ক্ষমতায় এসে পাল সাম্রাজ্যর গৌরব ফিরিয়ে আনতে কাজ করেন। সন্ধ্যাকরনন্দীর রামচরিত গ্রন্থে পাল সাম্রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত বরেন্দ্র যে পুনরায় রামপাল পুনরুদ্ধার করে তার বর্ণনা করেছে। 

সন্ধ্যাকরনন্দীর পিতা পালবংশের রাজকর্মচারী ছিলেন বলে সন্ধ্যাকর নন্দী এসব বিষয় সম্পর্কে জানতে পারেন। তবে এ কথা সত্য রামপাল বরেন্দ্র পুনরায় অধিকার করে সেখানে শাসনকার্য পরিচালনা করতে সক্ষম হন। 

ঘটনাটা আলোকপাত করা যায় যে রামপালের রাজত্বকালের প্রারম্ভে তার রাজ্য বিহার ও পশ্চিম বাংলার অংশ বিশেষে সীমাবদ্ধ ছিল। রামপাল বরেন্দ্র উদ্ধারের জন্য যে সব কাজ করেন।

→ শক্তি সঞ্চয় : রামপাল বরেন্দ্র পুনরুদ্ধারের জন্য প্রথমে শক্তি সঞ্চয় করেন। তিনি জনগণের পরম বন্ধু হতে চান এবং সামান্ত রাজাদের সাহায্য লাভের চেষ্টা করেন। 

রামপাল' বরেন্দ্র উদ্ধারের জন্য সামান্ত নেতাদেরকে খুব বিনয়ের সাথে সাহায্য করার কথা বলেন। বলা হয় ভিখারির ন্যায় তিনি এ সাহায্য প্রার্থনা করেন । 

আবার যারা করুণায় সাহায্যের জন্য রাজি না হয়। তাদেরকে লোভ দেখিয়ে সাহায্যের জন্য বলে। আবার কাউকে শক্তি দেখিয়ে সাহায্য কামনা করে। 

এভাবে তিনি বরেন্দ্র পুনরুদ্ধার করতে সক্ষম হয়। অনেক সামান্তরাজ রামপালকে বরেন্দ্র পুনরুদ্ধারে সাহায্য করেছিলেন। তারা হলো :

রাজার নাম                        তিনি কোনো রাজ্যের রাজা

ভীমযশ                      -       মগধ ও পীঠির অধিপতি

বীরগুণ                       -       বাকুড়া জেলার কোটেশ্বরের অধিপতি।

জয় সিংহ                   -       দণ্ডভুক্তির রাজা

বিক্রমরাজ                 -       দেব গ্রামের রাজা।

শূরপাল রুদ্রশিখর      -       সাওতাল প্রদেশের রাজা 

প্রতাপ সিংহ               -        তৈল কম্পের রাজা-বর্ধমান জেলার রাজা।

নর সিংহাজন             -        রাজমহলের নিকটবর্তী অঞ্চলের রাজা।                         

চণ্ডাৰ্জ্জুন                   -        সংকট গ্রামের রাজা

বিজয় রাজ                 -        নিদ্রাবলির রাজা ।

সোম                           -        পাদুম্বার রাজা।

উপরিউক্ত সামান্তরা রামপালকে সাহায্য করেছিল।

• বরেন্দ্র অভিযান : কৌশলী রামপাল যখন প্রচুর শক্তি ও অর্থের মালিক হন তখন তিনি বরেন্দ্র অধিকার অভিযান প্রেরণ করেন। দিব্য বেশি দিন শাসন পরিচালনা করতে পারেনি। 

তার মৃত্যুর পর তার পুত্র ভীম বরেন্দ্রের রাজা হন। শিবরাজের অধীনে রামপাল প্রথমে বস্ত্রের অভিযান পরিচালনা করে। এ সৈন্য দল বরেন্দ্রভূমি বিধস্ত করে ফিরে আসে। 

দক্ষিণ পশ্চিম বাংলা থেকে গঙ্গা অতিক্রম করে রামপাল বরেন্দ্র আক্রমণ করেন। পরবর্তীতে হরি পুনরায় শক্তি জোগাড় করে রামপালের বিরুদ্ধে যুদ্ধের প্রস্তুতি নেয়। 

কৌশলে রামপাল অর্থের প্রলভনে ফেলে হরিকে জয় করে । ফেলে এভাবে রামপাল পুণরায় বরেন্দ্র পুণরুদ্ধার করে।

উপসংহার : পরিশেষে এ কথা বলা যায় রামপাল অনেক কৌশল ছিল। যা কাদেরকে শক্তি বা অর্থ দিয়ে হাত না করা যায় তাদের কাছ থেকে তিনি বিনয়ের সাথে ক্ষমতা প্রার্থনা করেন যা তার কৌশলের পরিচয় প্রদান করে। না হলে শক্তিশালী বরেন্দ্রের রাজাকে পরাজিত করা তার পক্ষে সম্ভব হতো না

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url
আরও পড়ুনঃ
আরও পড়ুনঃ