ত্রিপক্ষীয় সংঘর্ষ কি । ত্রিপক্ষীয় সংঘর্ষ কাকে বলে

ত্রিপক্ষীয় সংঘর্ষ কি । ত্রিপক্ষীয় সংঘর্ষ কাকে বলে
ত্রিপক্ষীয় সংঘর্ষ কি । ত্রিপক্ষীয় সংঘর্ষ কাকে বলে

ত্রিপক্ষীয় সংঘর্ষ কি । ত্রিপক্ষীয় সংঘর্ষ কাকে বলে

  • অথবা, ত্রিপক্ষীয় সংঘর্ষের সংক্ষিপ্ত বিবরণ দাও । 
  • অথবা, ত্রিপক্ষীয়/ত্রিশক্তি সংঘর্ষের উপর একটি টীকা লিখ ৷

উত্তর : ভূমিকা : পালবংশের প্রকৃত প্রতিষ্ঠাতা ধর্মপালের শাসনামলে একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা হলো ত্রিপক্ষীয় সংঘর্ষ। 

উত্তর ভারতের কাণ্যকুঞ্জ ও কনৌজে আদিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ধর্মপাল, ভারতের গুর্জর প্রতিহার রাজবংশ এবং দাক্ষিণাত্যের রাষ্ট্রকূট রাজবংশের মধ্যে যে সংঘর্ষ সংঘটিত হয় ইতিহাসে তাই ত্রিপক্ষীয় সংঘর্ষ নামে পরিচিত।

ত্রিপক্ষীয় সংঘর্ষ : পালবংশ সে সময় বাংলা ও বিহারে ক্ষমতা অধিকার করে ঠিক সে সময়ে দাক্ষিণাত্যে চালুক্যদেরকে পরাজিত করে রাষ্ট্রকূট বংশ ক্ষমতা লাভ করে। 

একই সময়ে মালব ও রাজস্থানে শক্তিশালী গুর্জর প্রতিহার রাজবংশের প্রতিষ্ঠা হয়। কিন্তু উত্তর ভারতের মধ্যাঞ্চলে সেই সময়ে তেমন কোনো প্রভাবশালী শক্তি ছিল না। 

সুতরাং অষ্টম শতাব্দীর শেষ দিকে (অর্থাৎ ৭৯০) প্রায় একই সময় উত্তর ভারতের গুর্জর প্রতীহার ও পাল রাজাগণ এবং দাক্ষিণাত্যের রাষ্ট্রকূট রাজাগণ মধ্যদেশে আধিপত্য বিস্তারে প্রয়াসী হন। ফলে ত্রিপক্ষীয় সংঘর্ষের সূত্রপাত ঘটে।

ত্রিপক্ষীয় সংঘর্ষের স্তরসমূহ : নিম্নে ত্রিপক্ষীয় সংঘর্ষের স্তরসমূহ আলোচনা করা হলো :

১. প্রথমত, অষ্টম শতাব্দীর শেষে ভাগে (অর্থাৎ ৭৯০ খ্রি.) ধর্মপাল ও প্রতীহার রাজা বৎসরাজ একই সময়ে কনৌজে বিজয়াভিযান প্রেরণ করলে উভয়ের সংঘর্ষে ধর্মপাল পরাজিত হন। 

কিন্তু এ সময়ে রাষ্ট্রকূট রাজা ধ্রুবধারাবর্ষ প্রথমে বৎসরাজকে এবং পরে ধর্মপালকে পরাজিত করে। কিন্তু ধ্রুবধারাবর্ষ বিজয় সংরক্ষণ না করেই দাক্ষিণাত্যে প্রত্যাবর্তন করায় ধর্মপাল বিনা বাধায় মধ্যদেশ তথা কনৌজে নিজ অধিকার সুদৃঢ় করেন।

২. দ্বিতীয়ত, কাণ্যকুঞ্জ অধিকার করে ধর্মপাল তাঁর প্রতিনিধি চক্রাধকে সেখানে অধিষ্ঠিত করলেও অচিরেই বৎসরাজ এর পুত্র দ্বিতীয় নাগভট্ট পাল আধিপত্য খর্ব করে চক্রাধকে পরাজিত ও বিতাড়িত করে কাণ্যকুঞ্জ দখল করেন। 

কিন্তু রাষ্ট্রকূট রাজা তৃতীয় গোবিন্দ উত্তর ভারতে আগমন করে নাগভট্টকে পরাজিত করেন এবং ৮০১ খ্রিষ্টাব্দে তৃতীয় গোবিন্দ দাক্ষিণাত্যে প্রত্যাবর্তন করলে ধর্মপাল আবার সেখানে আধিপত্য বিস্তার করেন। তবে সেখানে ধর্মপালের আধিপত্য দীর্ঘস্থায়ী ছিল না বলেই ঐতিহাসিক প্রমাণ পাওয়া যায় ।

উপসংহার : পরিশেষে বলা যায়, উত্তর ভারতের রাজনৈতিক কেন্দ্রস্থল কাণ্যকুঞ্জ বা কনৌজের অধিকারকে কেন্দ্র করে পালরাজা ধর্মপাল, দাক্ষিণাত্যের রাষ্ট্রকূট এবং গুর্জর প্রতীহার রাজ বংশের মধ্যে যে পারস্পরিক সংঘর্ষ ঘটে তা ত্রিপক্ষীয় সংঘর্ষ নামে পরিচিত। 

এ সংঘর্ষে কূটকৌশল ও সামরিক প্রতিভা দ্বারা ধর্মপাল উত্তর ভারতের সাময়িককালের জন্য আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করে বাংলার গৌরব ও শক্তিমত্তার পরিচয় দিয়েছিলেন। 

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url
আরও পড়ুনঃ
আরও পড়ুনঃ