আলিনগরের সন্ধি কি । আলীনগরের সন্ধি সম্পর্কে সংক্ষেপে আলোচনা কর

আলিনগরের সন্ধি কি । আলীনগরের সন্ধি সম্পর্কে সংক্ষেপে আলোচনা কর
আলিনগরের সন্ধি কি । আলীনগরের সন্ধি সম্পর্কে সংক্ষেপে আলোচনা কর

আলিনগরের সন্ধি কি । আলীনগরের সন্ধি সম্পর্কে সংক্ষেপে আলোচনা কর

  • অথবা, আলীনগরের সন্ধি সম্পর্কে যা জান লিখ ।

উত্তর : ভূমিকা : নবাব আলীবর্দী খানের মৃত্যুর পর তার নাতি সিরাজ-উদ-দৌলা বাংলার নবাব হন। কিন্তু তিনি প্রাসাদ ষড়যন্ত্রের দরুন বেশি দিন সিংহাসনে টিকে থাকতে পারেনি। 

এমতাবস্থায় ইংরেজরা নবাবের বিনা অনুমতিতে কলকাতায় দুর্গ নির্মাণ করে। তাতে নবাব বাধা দিলে একপর্যায়ে ইংরেজদের সাথে নবাবের বিরোধ বাঁধে। আর এ বিরোধের জের ধরেই আলীনগর সন্ধির সূত্রপাত।

→ আলীনগরের সন্ধি : নবাব কলকাতা অধিকারের পর ফোর্ট উইলিয়াম দুর্গের নাম সেন আলীনগর এবং তিনি সেনাপতি | মানিকটাদকে কলকাতা রক্ষার জন্য নিয়োগ দেন। 

কিন্তু রবার্ট ক্লাইড কলকাতায় এসে উৎকোচ প্রদানের মাধ্যমে মানিকচালকে কুক্ষিগত করে এবং ১৭৫৭ সালের ২ জানুয়ারি কলকাতা পুনর্দখল করে। 

ফলে নবাব সিরাজ-উদ-দৌলা দ্বিতীয়বারের ন্যায় কলকাতা অভিযান করেন। ক্লাইভ নবাবকে হত্যার উদ্দেশ্যে রাতের অন্ধকারে কয়েকজন সেনাসহ নবাবের শিবির আক্রমণ করেন । 

কিন্তু নবাব সৈবক্রমে বেঁচে যান, তবে তাঁর ১০০০ সৈন্য এই অতর্কিত আক্রমণে নিহত হন। এতে নবাব সাহস হারিয়ে ফেলেন। 

তাছাড়া তিনি বুঝতে পারেন যে, তার সভাসদ ও সেনাপতিদের মধ্যে অনেকেই ইংরেজদের সঙ্গে ষড়যন্ত্র লিপ্ত রয়েছে। 

এদিকে তিনি খবর পান যে, আফগান সেনাপতি আহমদ শাহ আবদালী আল্লা, মথুরা বিধ্বংস করে বাংলার দিকে এগিয়ে আসছে। 

এমতাবস্থায় নবাব সিরাজ-উদ-দৌলা সামনে ইংরেজ, পিছনে আফগান আক্রমণকারীদের মধ্যে পিষ্ঠ হওয়ার ভয়ে তিনি ইংরেজ কোম্পানির সাথে ১৭৫৭ সালের ৯ই ফেব্রুয়ারি আলীনগরে সন্ধিপত্রে স্বাক্ষর করেন এবং যুদ্ধক্ষেত্র ত্যাগ করে রাজধানীতে ফিরে আসেন।

→ আলীনগর সন্ধির শর্তাবলি : নিয়ে আলীনগর সন্ধির শর্তাবলি উল্লেখ করা হলো :

১. ইংরেজ কোম্পানি বিনাশুল্কে বাংলা, বিহার ও উড়িষ্যায় বাণিজ্য করার সুযোগ লাভ করবে।

২. ইংরেজরা কলকাতায় টাকশাল তৈরির অধিকার লাভ করবে।

৩. ইংরেজরা কলকাতায় ফোর্ট উইলিয়াম দুর্গ সংস্কার ও সম্প্রসারণের অধিকার লাভ করবে।

৪. নবাব কর্তৃক কলকাতায় আক্রমণের সময় ইংরেজদের যে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছিল তার ক্ষতিপূরণ দিবে নবাব। 

৫. ঢাকা ও কাসিমবাজারের কুঠি ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি যতদিন খুশি সুদৃঢ় রাখতে পারবে।

৬. কলকাতার অধিবাসীরা সবসময় ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির শাসনাধীন থাকবে ।

৭. কাসিমবাজার ও ঢাকার কুঠিতে কোম্পানি ইচ্ছামতো সৈন্য রাখতে পারবে ।

উপসংহার : উপরের আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে বলা যায় যে, নবাব সিরাজ-উদ-দৌলা এক প্রকার বাধ্য হয়েই ইংরেজদের সাথে আলীনগর সন্ধি করতে বাধ্য হয়েছিল। 

তিনি ভেবেছিলেন যে, এই সন্ধির মাধ্যমে ইংরেজদের কিছু সুযোগ-সুবিধা প্রদান করে রাজ্যের শন্তি-শৃঙ্খলা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হবে। 

কিন্তু তা হিতে বিপরীত হয়। কেননা এ সন্ধির পর থেকে ইংরেজরা শাসন ক্ষমতা দখলে আরো উৎসাহী হয়ে ওঠে। 

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url
আরও পড়ুনঃ
আরও পড়ুনঃ