ইংরেজদের সাথে শায়েস্তা খানের সংঘর্ষের কারণ কি ছিল

ইংরেজদের সাথে শায়েস্তা খানের সংঘর্ষের কারণ কি ছিল
ইংরেজদের সাথে শায়েস্তা খানের সংঘর্ষের কারণ কি ছিল

ইংরেজদের সাথে শায়েস্তা খানের সংঘর্ষের কারণ কি ছিল

  • অথবা, ইংরেজদের সাথে শায়েস্তা খানের দ্বন্দ্বের কারণ কি?

উত্তর : ভূমিকা : ১৬৭৯ সালের অক্টোবর মাসে শায়েস্তা খান দ্বিতীয়বার বাংলার সুবাদার নিযুক্ত হন। এ সময়ে ইংরেজদের সাথে সংঘর্ষ তার রাজত্বকালের প্রধান ঘটনা। 

ইংরেজ বণিকগণ যখন এদেশে বাণিজ্য শুরু করেন তখন শর্ত ছিল- পণ্যসামগ্রীর উপর শতকরা দুই টাকা হিসেবে কর দিতে হবে। কিন্তু স্থানীয় কর্মচারীরা জোর করে বেশি কর আদায় করতো। 

ফলে তাদের ব্যবসায় ক্ষতি হয়। তারা শায়েস্তা খানের সাথে এ বিষয়ে আলোচনা করে কিন্তু তেমন লাভ হয় নি। তাই শায়েস্তা খানের সাথে ইংরেজদের সংঘর্ষ অনিবার্য হয়ে উঠে।

→ ইংরেজদের সাথে শায়েস্তা খানের সংঘর্ষের কারণ : নিম্নে ইংরেজদের সাথে শায়েস্তা খানের সংঘর্ষের কারণগুলো তুলে ধরা হলো : 

১. শায়েস্তা খান ব্যক্তিগতভাবে ব্যবসায়ের সাথে জড়িত ছিলেন। লবণ, সুপারি ইত্যাদি ব্যবসায়ে নবাবের একচেটিয়া প্রাধান্য ছিল। 

নবারের ব্যবসায়ের কারণে ইংরেজদের ব্যবসায় ক্ষতি হতে থাকে। সুতরাং ইংরেজদের সংঘর্ষের এটি একটি অন্যতম কারণ। 

২. মুঘল সম্রাট দাক্ষিণাত্যে মারাঠাদের সাথে সংঘর্ষে লিপ্ত থাকায় প্রচুর অর্থের প্রয়োজন হয়। ফলে বাংলায়ও এর প্রভাব পড়ে এবং শায়েস্তা খান অধিক অর্থ সংগ্রহের জন্য ইংরেজদের উপর চাপ দেয়, ফলে সংঘর্ষ অনিবার্য হয়ে পাড়ায়।

৩. ইংরেজদের ব্যবসায় সম্পর্কে যেসব শাহী ফরমান জারি করা হতো অধিংকাশ ক্ষেত্রে তা ছিল অস্পষ্ট এবং দুর্বোধ্য। ফলে ইংরেজরা বিপাকে পড়ে এবং যুদ্ধে প্রস্তুতি নেয়।

৪. শায়েস্তা খান ১৬৮০ সালে ইংরেজ ব্যবসায়ীদের বাণিজ্যের ক্ষেত্রে ছাড়পত্র রীতি চালু করেন। কিন্তু মুর্শিদাবাদের ফৌজদার তাদের ছাড়পত্র প্রাপ্ত আটক করেন। এতে ইংরেজরা ক্রোধান্বিত হয়েছিল। ফলে নবাবের সাথে সংঘর্ষের সৃষ্টি হয়।

৫. হুগলীর শুল্ক তত্ত্বাবধায়ক রায় কালাচাঁদ নিযুক্ত হওয়ার পর ইংরেজ বাণিজ্যের হুগলী কারখানার সাথে সকল ব্যবসা নিষিদ্ধ ঘোষণা করেন। ফলে ইংরেজদের এ কারখানার ব্যবসা বন্ধ হয়ে যায়। সুতরাং এটিও সংঘর্ষের একটি কারণ বলা যায়।

৬. কোম্পানির অবস্থা খারাপ হওয়ায় শায়েস্তা খান জব চার্নককে ঢাকায় ঢেকে পাঠান। কিন্তু জব চার্নক এ আহ্বান উপেক্ষা করলে ফলশ্রুতি হিসেবে ইংরেজদের কাশিমবাজার কুঠি অবরুদ্ধ হয়। শায়েস্তা খানের নির্দেশে মালদহের ইংরেজ কারখানাও বন্ধ করে দেওয়া হয়। 

উপসংহার : পরিশেষে বলা যায়, একাধিক কারণে ইংরেজদের সাথে শায়েস্তা খানের সংঘর্ষ সৃষ্টি হয়। মূলত এখানে শায়েস্তা খানের উদ্ধত আচরণও সংঘর্ষের অন্যতম একটি কারণ হয়ে দাঁড়ায়। ফলশ্রুতিতে ইংরেজদের সাথে সুবাদার শায়েস্তা খান পেরে উঠতে পারেননি। 

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url
আরও পড়ুনঃ
আরও পড়ুনঃ