রাজনৈতিক সংস্কৃতি ও রাজনৈতিক উন্নয়নের পার্থক্য দেখাও

রাজনৈতিক সংস্কৃতি ও রাজনৈতিক উন্নয়নের পার্থক্য দেখাও
রাজনৈতিক সংস্কৃতি ও রাজনৈতিক উন্নয়নের পার্থক্য দেখাও

রাজনৈতিক সংস্কৃতি ও রাজনৈতিক উন্নয়নের পার্থক্য দেখাও

উত্তর : ভূমিকা : রাজনৈতিক সংস্কৃতি হলো রাজনৈতিক বিষয় বা রাজনীতি সম্পর্কে মানুষের মনোভাব, বিশ্বাস ও মূল্যবোধ। সাধারণত রাজনৈতিক সংস্কৃতির উপর ভিত্তি করেই একটি দেশের রাজনৈতিক ব্যবস্থা গড়ে উঠে। 

যে কোন দেশের রাজনৈতিক উন্নয়ন সেদেশের রাজনৈতিক ব্যবস্থার সাথে ওতপ্রোতভাবে সম্পর্কযুক্ত।

রাজনৈতিক সংস্কৃতি ও রাজনৈতিক উন্নয়নের পার্থক্য / অমিল : রাজনৈতিক সংস্কৃতি ও রাজনৈতিক উন্নয়ন প্রত্যয় দুটি একে অপরের উপর নির্ভরশীল। নিম্নে রাজনৈতিক উন্নয়ন ও রাজনৈতিক সংস্কৃতির মধ্যে পার্থক্য তুলে ধরা হলো :

১. রাজনৈতিক কৃষ্টি রাজনৈতিক উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করে : রাজনৈতিক কৃষ্টি অতীত ঐতিহ্যের উপর নির্ভরশীল। জাতীয়তা বিকাশের ক্ষেত্রে অন্তরায় হচ্ছে সংকীর্ণ চিন্তাধারা। 

জাতীয়তার প্রতি একাত্মবোধের অভাব লক্ষ্য করে রাজনৈতিক নেতাগণ অনেক সময় কঠোরতা প্রদর্শন করে। এতে রাজনৈতিক উন্নয়ন ব্যাহত হয়। তাই রাজনৈতিক কৃষ্টি রাজনৈতিক উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করে ।

২. রাজনৈতিক কৃষ্টি নাগরিকদের মূল্যবোধের প্রতীক : রাজনৈতিক কৃষ্টি রাজনীতি সম্পর্কে চিন্তাচেতনা ও মূল্যবোধের পরিচায়ক। সমগ্র রাজনৈতিক ব্যবস্থাকে গতিশীল করতে জনগণের রাজনৈতিক মূল্যবোধ গুরুত্বপূর্ণ। 

কোন রাজনৈতিক ব্যবস্থা সম্পর্কে জনগণের ঐক্য বা মতানৈক্য রাজনৈতিক কাঠামোকে প্রভাবিত করে। তাই বলা যায়, রাজনৈতিক কৃষ্টি নাগরিকদের মূল্যবোধের প্রতীক।

৩. রাজনৈতিক কৃষ্টি রাজনৈতিক উন্নয়নের অন্তস্বরূপ : রাজনৈতিক উন্নয়নের পূর্বশর্ত হচ্ছে জনঅংশগ্রহণ নিশ্চিত করা। যে কোন দেশের রাজনীতি বিষয়ক জনগণের মনোভাব সেদেশের কৃষ্টি দ্বারা প্রভাবিত। 

তাছাড়া রাজনৈতিক কৃষ্টির ভিত্তিতে জনগণের অংশহগ্রহণের ক্ষেত্রে আনুষ্ঠানিক বা অনানুষ্ঠানিক উপায়ে বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়। এক্ষেত্রে রাজনৈতিক কৃষ্টি ও উন্নয়ন পরস্পর সম্পর্কযুক্ত।

৪. কৃষ্টি রাজনৈতিক উন্নয়নের সহায়ক : উন্নয়নের ক্ষেত্রে রাজনৈতিক কৃষ্টি সহায়ক ভূমিকা পালন করে। রাজনৈতিক কৃষ্টির মানগত উৎকর্ষতা রাজনৈতিক উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করে। 

সাধারণ জনগণের মধ্যে মার্জিত আচার আচরণ ও মূল্যবোধের বিকাশ রাজনৈতিক ব্যবস্থার বৈধতা ও স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করে। তাই রাজনৈতিক কৃষ্টিকে উন্নয়নের সহায়ক বলা যায়।

৫. রাজনৈতিক উন্নয়ন ও কৃষ্টির পারস্পরিক নির্ভরশীলতা : এটা সত্য যে, রাজনৈতিক উন্নয়ন রাজনৈতিক কৃষ্টির উপর বহুলাংশে নির্ভরশীল। প্রত্যেক দেশের রাজনৈতিক বৃষ্টি রাষ্ট্র এবং ব্যক্তি জীবনের মধ্যকার বৈধ সীমানাকে সুনির্দিষ্ট করে দেয়। 

তাছাড়া রাজনৈতিক কৃষ্টির আলোকে রাজনীতিতে জনগণের অংশগ্রহণ নির্ধারিত হয়। তাই রাজনৈতিক কৃষ্টি ও রাজনৈতিক উন্নয়ন পরস্পর সম্পর্কযুক্ত।

৬. রাজনৈতিক কৃষ্টি : রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে গণঅংশগ্রহণ বৃদ্ধি করে রাজনৈতিক কৃষ্টির বিকাশ ঘটলে রাজনীতিতে জনগণের অংশগ্রহণ বৃদ্ধি পায়। 

এতে সরকার ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য জনগণকে অধিক সুযোগসুবিধা প্রদানের লক্ষ্যে নতুন নতুন প্রতিষ্ঠান সৃষ্টি এবং বিভিন্ন ধরনের অবকাঠামো সৃষ্টির প্রয়াস চালায়। এসব উদ্যোগের ফলে রাজনৈতিক উন্নয়ন ত্বরান্বিত হয়।

উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, রাজনৈতিক সংস্কৃতি, রাজনৈতিক উন্নয়নে সুদূরপ্রসারী প্রভাব বিস্তার করে। -কেননা রাজনৈতিক কৃষ্টির অগ্রসরমুখী অবস্থান রাজনৈতিক উন্নয়নকে গতিশীল করে। তাই রাজনৈতিক উন্নয়নের পূর্বশর্ত হচ্ছে উন্নত ও ধর্মনিরপেক্ষ কৃষ্টির সফল বিকাশ। 

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url
আরও পড়ুনঃ
আরও পড়ুনঃ