নৃবিজ্ঞানের প্রকারভেদ লেখ । নৃবিজ্ঞানের শ্রেণিবিভাগ আলোচনা কর

নৃবিজ্ঞানের প্রকারভেদ লেখ । নৃবিজ্ঞানের শ্রেণিবিভাগ আলোচনা কর
নৃবিজ্ঞানের প্রকারভেদ লেখ । নৃবিজ্ঞানের শ্রেণিবিভাগ আলোচনা কর

নৃবিজ্ঞানের প্রকারভেদ লেখ । নৃবিজ্ঞানের শ্রেণিবিভাগ আলোচনা কর

  • অথবা, নৃবিজ্ঞানের প্রকরণ ব্যাখ্যা কর ।

উত্তর : ভূমিকা : সামাজিক বিজ্ঞানের একটি অন্যতম শাখা হলো নৃবিজ্ঞান। যার উদ্দেশ্য হলো সামাজিক জীব হিসেবে মানুষ এবং কালের গতিধারায় মানুষের বিবর্তন ও রূপান্তর নিয়ে আলোচনা করা। 

মূলত মানুষের দৈহিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডলের বিভিন্ন বিষয়বস্তু নৃবিজ্ঞানের প্রতিপাদ্য।

● নৃবিজ্ঞানের প্রকারভেদ : সাধারণত আদিম মানুষের দৈহিক, ভাষাগত ও পুরাকীর্তিসংক্রান্ত উপাদান নিয়ে নৃবিজ্ঞান আলোচনা করে থাকে । তাই বিষয়বস্তুর বিচিত্রতাকে কেন্দ্র করে নৃবিজ্ঞানকে ৩টি ভাগে ভাগ করা যেতে পারে। যথা : 

১. দৈহিক নৃবিজ্ঞান : দৈহিক নৃবিজ্ঞান আদিম মানুষের শারীরিক বৈশিষ্ট্যাবলি এবং সাম্প্রতিককালের আদিবাসী জনগোষ্ঠী নিয়ে আলোচনা করে থাকে। 

দৈহিক নৃবিজ্ঞানের সংজ্ঞায় বলা যায়, যে নৃবিজ্ঞান মানুষের উৎপত্তি, ক্রমবিকাশ ও তার দৈহিক গঠন ও আকৃতি নিয়ে আলোচনা করে, তাকে দৈহিক নৃবিজ্ঞান বলে। এটি পৃথিবীর বিভিন্ন মানবগোষ্ঠীর ওপর পরীক্ষানিরীক্ষা চালায়। 

দৈহিক নৃবিজ্ঞানের প্রধান উপজীব্য বিষয় হলো মানুষের গঠনপ্রণালি, পৃথিবীতে মানুষের অবস্থান, মানুষের স্বভাব, পরিচয়, প্রাণিকুলের বিবর্তন ইত্যাদি ।

২. সাংস্কৃতিক নৃবিজ্ঞান : সাংস্কৃতিক নৃবিজ্ঞান আদিম মানুষের সাংস্কৃতিক উপকরণ, বৈশিষ্ট্য এবং সমকালীন আদিবাসী জনগোষ্ঠীর মধ্যে বিদ্যমান সংস্কৃতি পাঠ করে থাকে । সাংস্কৃতিক নৃবিজ্ঞান বলতে বুঝায় যে নৃবিজ্ঞান মানুষের জীবন প্রণালি তুলে ধরে তাকে । 

সাংস্কৃতিক নৃবিজ্ঞানের যেসব বিষয়সমূহ আলোচনা করা হয় তা হলো বিবাহ, পরিবার, গ্রামীণ জীবনের ক্ষমতা, মর্যাদা, রীতিনীতি, শিল্পকলা, নারী-পুরুষ সম্পর্ক ইত্যাদি। একজন সাংস্কৃতিক নৃবিজ্ঞানী অতীত ও বর্তমানের সাংস্কৃতিক জগতের বৈশিষ্ট্য তুলে ধরেন।

৩. সামাজিক নৃবিজ্ঞান : সামাজিক জীব হিসেবে মানুষের বিবর্তন, সামাজিক আদর্শ, মূল্যবোধ, ধর্ম, সাহিত্য, শিল্পকলা প্রভৃতি সমাজিক নৃবিজ্ঞানের অন্তর্গত। মানুষের জীবনের সাথে এ বিষয়গুলো ব্যাপকভাবে সংশ্লিষ্ট। 

অর্থাৎ সামাজিক নৃবিজ্ঞান মানুষের সামাজিক জীবনকে নিয়ে আলোচনা, পর্যালোচনা করে মানুষকে সামাজিক জীব হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করে। সামাজিক নৃবিজ্ঞানকে আবার তিন শ্রেণিতে ভাগ করা যায় । যথা : 

১. প্রত্নতত্ত্ব, 

২. মানবজাতি তত্ত্ব এবং 

৩. ভাষাতত্ত্ব । 

উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, নৃবিজ্ঞান মানব ও তার সংস্কৃতিবিষয়ক বিজ্ঞান হলেও এর প্রকারভেদগুলো থেকে স্বতন্ত্রভাবে আলাদা আলাদা বৈশিষ্ট্য ও আলোচনার মাধ্যমে নিজস্ব জ্ঞানকে সমৃদ্ধ করেছে বলে প্রতীয়মান হয়। 

এজন্যই বলা হয়, নৃবিজ্ঞান হলো মানুষের দৈহিক, সামাজিক ও সংস্কৃতিবিষয়ক বিজ্ঞানভিত্তিক অধ্যয়ন । 

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url
আরও পড়ুনঃ
আরও পড়ুনঃ