বাস্তুবিদ্যার ইতিহাস আলোচনা কর। সংক্ষেপে বাস্তুবিদ্যার ইতিহাস লিখ

বাস্তুবিদ্যার ইতিহাস আলোচনা কর। সংক্ষেপে বাস্তুবিদ্যার ইতিহাস লিখ
বাস্তুবিদ্যার ইতিহাস আলোচনা কর। সংক্ষেপে বাস্তুবিদ্যার ইতিহাস লিখ

বাস্তুবিদ্যার ইতিহাস আলোচনা কর। সংক্ষেপে বাস্তুবিদ্যার ইতিহাস লিখ

উত্তর : বাস্তুবিদ্যার অপর নাম ইকোলজি। 

নিম্নে সংক্ষেপে বাস্তুবিদ্যার ইতিহাস আলোচনা করা হলো :

১৯৪০ সালের শুরু থেকে পরিবেশ বিজ্ঞানের উপর তাত্ত্বিক গবেষণা ও পর্যালোচনা বিশেষ গুরুত্ব অর্জন করলেও এর শেকড় অনেক গভীরে গ্রথিত। প্রাগৈতিহাসিক যুগের গুহাবাসী শিকারি মানুষদেরও বাস্ত্রজ্ঞান ছিল। 

বাসস্থানের জন্য অপেক্ষাকৃত নিরাপদ গিরিগুহা, শিকারের জন্য উপযুক্ত স্থান নির্বাচন, আগুন জ্বালানো এবং এক সময় জলাশয় বা নদীর তীরের কাছাকাছি কৃষিকাজ শুরু তাদের বাস্ত্রজ্ঞানেরই ক্রমবিকাশ। 

প্রাচীন ভারতের চরক, কৌটিল্য, খনা প্রভৃতি অনেকের লেখাতে বাস্তুবিজ্ঞানের ছাপ দেখা যায় । গ্রিক দার্শনিক হিপ্পোক্রিটাস, থিওফ্রাসটাস, অ্যারিস্টটল প্রমুখের লিখনীতে পরিবেশ বিষয়ক আলোচনা স্থান পেয়েছে। 

চিকিৎসা শাস্ত্রে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের জন্য লিখিত হিপ্পোক্রিটাসের "Airs, Waters and places" নামক নিবন্ধে পরিবেশীয় পটভূমির উপর জোড় দেওয়া হয়। 

থিওফ্রাস্টস সর্বপ্রথম উদ্ভিদের সাথে পরিবেশের ভৌত উপাদানের পারস্পরিক সম্পর্ক সম্বন্ধে আলোচনা করেন। 

অ্যারিস্টটলের "Historia animalium" গ্রন্থে পরিবেশগত অবস্থার উপর প্রাণীদের স্বভাব বা আচরণ কতটুকু নির্ভরশীল তা উল্লেখ করা হয় ।

Pline (23-79A) : বাসস্থানের উপর ভিত্তি করে উদ্ভিদ ও প্রাণীর শ্রেণিবিন্যাস করেন ।Abertus Magnus (11931280) উদ্ভিদের পরিবেশ সম্বন্ধে আলোচনা করেন।

A. Caesalpino (1519-1603) : উদ্ভিদের বাসস্থান, ভৌগোলিক বিস্তার এবং রসায়ন সম্বন্ধে আলোচনা করেন।

Leeuwenboek (1632-1723) : জীবের খাদ্যশৃমল ও পপুলেশন সম্বন্ধে আলোচনা করেন, যা আধুনিক ইকোলজির দুটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। 

Carolus Linnaeus (1707-1778) : জীবের বৈজ্ঞানিক - নামকরণ ও শ্রেণিবিন্যাসকরণ ছাড়াও এদের বাসস্থান ও ভৌগোলিক অবস্থান সম্বন্ধে লিখেছেন।

Darwin (1809-1882) : ডারউইন ১৮৫৯ খ্রিস্টাব্দে 'Origin of Species' বইতে প্রাকৃতিক নির্বাচন (Natural selection) প্রকাশ করেন, যা বাজবিজ্ঞানের জ্ঞানেরই প্রতিফলন।

ডারউইনের সময় পর্যন্ত বাস্তবিজ্ঞানের আলোচনা দেখা গেলেও 'Ecology' শব্দটি কেউ ব্যবহার করেননি। 

জার্মান বিজ্ঞানী Hans Reiter (1868) জীবের সাথে পরিবেশের সম্পর্ক নির্ণয়ের বিষয়কে 'Ockologie' বলে আখ্যায়িত করেন। 

Ernst Haeckel (1834-1919) : জার্মান জীববিজ্ঞানী হেকেল সর্বপ্রথম ১৮৬৯ খ্রিস্টাব্দে Boology বাস্তুবিজ্ঞান সম্বন্ধে তার সংজ্ঞাটি হচ্ছে- the reciprocal relationship between শব্দটি ব্যবহার করেন।

"Ecology is the study of living organisms and their environment" তাঁর মতে দক্ষিণ এশিয়ার Hindustan' (India)-এ প্রথমে Primates থেকে মানুষের উৎপত্তি ঘটে।

S. A. Forbis (1844-1930) : Farbis একজন আমেরিকান ইকোলজিস্ট। তিনি Ecological communities- এর উপর অনেক গবেষণাপত্র প্রকাশ করেন।

Victorhensem (1835-1924) : সমুদ্রের উৎপাদনশীলতা (Productivity) নির্ণয় করেন।

F. A. Forel (1869) : তিনি ইকোলজির একটি শাখা Limnology-এর উপর অনেক কাজ করেন ।

R. Hult (1885) : সর্বপ্রথম Ecological Succession শব্দটি ব্যবহার করেন।

J. E. B. Warming (1895 ) : তিনি উদ্ভিদ কমিউনিটির একক সম্বন্ধে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা করেন। তিনি Ecological Plant Geography প্রতিষ্ঠা করেন।

A. J. Lotka (1880-1949) : তিনি Mathematical population model প্রদান করেন এবং খাদ্যন্তরের আন্তঃক্রিয়া যুক্তিসঙ্গত ফর্মূলা দ্বারা ব্যাখ্যা করেন।

Charles Elton (1927) : কমিউনিটি ডায়নামিক্সের গুরুত্বপূর্ণ বিশ্লেষণ প্রদান করেন এবং পপুলেশন পর্যালোচনায় বিশেষ অবদান রাখেন। তিনি জীবের নিরাপদ বাসস্থানকে প্রথমে Ecological Niche বলে অভিহিত করেন।

Arthur G. Tansley (1963) : তিনি সর্বপ্রথম ইকোসিস্টেম শব্দটি ব্যবহার করেন। জীবসমূহ এবং এদের পরিবেশের মধ্যে পারস্পরিক ক্রিয়াকে ইকোসিস্টেম বলে অভিহিত করেন।

G.E. Hatechinson (1903-1991) : তিনি একজন লিমনোলজিস্ট এবং নিরাপদ বাসস্থান ধারণ সম্বন্ধে ব্যাখ্যা প্রদান করেন।

H. C. Cowles (1863-1939): তিনি উদ্ভিদ ক্রমাগত (Plant succession) এর ব্যাখ্যা প্রদান করেন এবং ভিত্তি রচনা করেন। F. E. Clements (1874-1945)। 

তিনি জৈন একক এবং উদ্ভিদ ক্রমাগমন সম্বন্ধে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য প্রদান করেন। ১৯১৬ এবং ১৯৩৬ সালে তিনি উদ্ভিদ ক্রমাগমের নীতি ও তথ্যকে বিস্তারিত ভাবে আলোচনা করেন।

Andrewarth and Berch (1954) : পপুলেশনের আকারের উপর জলবায়ুর প্রভাব আলোচনা করেন।

R. Misra : তিনি কমিউনিটির শক্তিরা প্রবাহ, উৎপাদনশীলতা, বায়োডাইভার্সিটি ইত্যাদির উপর অনেক (প্রায় ১৫টি) গবেষণাপত্র প্রকাশ করেন (১৯০৮-১৯৭১ সালের মধ্যে) Autecology of Lindenberia Polyantha (1948), Mode of energy transfer along the terrestrial food chains (1968), Primary production of chakia Forest; Nutrient cycling in monsoon forest, gressland and crop land (1970) ইত্যাদি ।

Eugen paul Odun (1913-2002) : তিনি ইকোসিস্টেমের উপর প্রচুর গবেষণা করেছেন। তিনি Ecosystem Ecology এবং Ecosystem thermodynamics এর সহপ্রতিষ্ঠাতা। 

"Fundamentals of Ecology” তাঁর লিখিত একটি বিখ্যাত বই। এছাড়াও তাঁর আরো কয়েকটি বই এবং অনেক গবেষণাপত্র রয়েছে।

Howard T. Odum (1924-2002): ff E. P. Odum- এর ভাই এবং একজন নামকরা ইকোলজিস্ট।

G. W. Barrett : তিনি 1968-2004 পর্যন্ত ইকোলজির উপর অনেক বই ও গবেষণাপত্র প্রকাশ করেন।

বিংশ শতাব্দীতে আরো অনেক ইকোলজিস্ট তাঁদের গবেষণার মাধ্যমে এ বিষয়টিকে আরো সমৃদ্ধ করেছেন- যেমন : C. J. Krebs (1978). R. H. Smith (1980), E. J. Komondy (1984) ইত্যাদি। 

বিংশ শতাব্দীতে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে ইকোলজির উপর অনেক সংগঠন প্রতিষ্ঠিত হয় এবং অনেক গবেষণাপত্র প্রকাশিত হতে থাকে, যেমন-

1. The British Ecological Society (1913) 

2. Ecological Society of America (1915) 

3. Oikos (From Denmark) (1949)

4. Polish Academy of Science এর Ekologia polsha (1953) 

5. Soviet Journal of Ecology 'Ekologiya (1970) 

6. The Japanese Journal of Ecology (1954)

7. ভারত ও পার্শ্ববর্তী দেশ থেকে International Society for tropical Ecology (1960)

8. Ecological society of Australia (1960)

9. Decologia from Germary (1968)

10. International Association for Ecology (1969). 

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url
আরও পড়ুনঃ
আরও পড়ুনঃ