প্রাকৃতিক পরিবেশের উপাদান গুলো কি কি । বস্তুগত প্ৰাকৃতিক পরিবেশের উপাদানগুলো তুলে ধর

প্রাকৃতিক পরিবেশের উপাদান গুলো কি কি । বস্তুগত প্ৰাকৃতিক পরিবেশের উপাদানগুলো তুলে ধর
প্রাকৃতিক পরিবেশের উপাদান গুলো কি কি । বস্তুগত প্ৰাকৃতিক পরিবেশের উপাদানগুলো তুলে ধর

প্রাকৃতিক পরিবেশের উপাদান গুলো কি কি । বস্তুগত প্ৰাকৃতিক পরিবেশের উপাদানগুলো তুলে ধর 

  • অথবা, বস্ত্রগত প্রাকৃতিক পরিবেশের পরিচয় বর্ণনা করা।

উত্তর : ভূমিকা : পরিবেশ হচ্ছে পৃথিবীর মূলভিত্তি। আমাদের চারপাশের যা কিছু আছে সবই পরিবেশের অন্তর্গত। পরিবেশ বিভিন্ন প্রকার হতে পারে। 

পরিবেশের তারতম্যের কারণে কেবল মানুষের অর্থনৈতিক কার্যকলাপই নয় মানুষের খাদ্য, পরিধেয় বস্ত্র, বাসস্থান ইত্যাদিরও পরিবর্তন হয়ে থাকে। 

নিম্নে পরিবেশের সংজ্ঞা এবং বস্তুস্থত প্রকৃতিক পরিবেশের উপাদানগুলো সংক্ষেপে আলোচনা করা হলো :

পরিবেশের পরিচয় : আমাদের চারপাশে যা কিছু আছে তার সব মিলেই পরিবেশ। আবার যে পারিপার্শ্বিক অবস্থার মধ্যে মানুষ তার জীবনযাত্রা নির্বাহ করে তাকেও পরিবেশ বলে। 

সুতরাং ভূমি, ভূমির উৎপাদন ক্ষমতা, আবহাওয়া ও জলবায়ু- নদনদী, পাহাড় পর্বত, খাদ্য আহরণের ব্যবস্থা প্রভৃতি প্রাকৃতিক পারিপার্শ্বিক অবস্থাকে পরিবেশ বলা হয়ে।

প্রামাণ্য সংজ্ঞা : নিম্নে পরিবেশ সম্পর্কে ভূগোলবিদদের সংজ্ঞা উল্লেখ করা হলো-

অধ্যাপক ম্যাকাইভার ও পেজ (Macver & Page) বলেন, পরিবেশ ধরাছোঁয়ার বাইরে কোনো বিষয় নয়। আমাদের চারপাশের সবকিছু মিলেই পরিবেশ, যদি আমরা এটিকে ধরাছোঁয়ার বাইরের কিছু মনে করি তবে এর ভূমিকাকে অবমূল্যায়ন করা হবে।

অধ্যাপক চেম্বার্স (Chambers) বলেন, "পরিবেশ হলো পারিপার্শ্বিক অবস্থা যা উন্নয়ন প্রক্রিয়ার বিস্তার করে।”

অধ্যাপক কারেন আর্মস (Karen Arms) তাঁর Environmetal Science গ্রন্থে বলেন পরিবেশ বলতে আমাদের সব কিছুকেই বোঝায়। আমাদের পরিবেশ হলো প্রাকৃতিক বিশ্ব এবং মানবিক উৎপাদনের সমন্বয়।

প্রফেসর এম. সি. আগরওয়াল (M.C. Agurwala) -এর মতে, পরিবেশ হলো সেসব প্রাকৃতিক উপাদানের সমষ্টি যার উৎপত্তি ও সৃষ্টির ওপর মানুষের কোনো হাত নেই।

ড. সিরাজুলের মতে, যে সমস্ত অবস্থা এবং বস্তুসমূহ জীবকে পরিবর্তন অথবা প্রভাবিত করে তাই পরিবেশ। উপরিউক্ত আলোচনার প্রেক্ষিতে বলা যায় যে, পরিবেশ হলো পরিপার্শ্বিক অবস্থা যা মানুষের জীবনযাত্রাকে পরিবর্তিত ও প্রভাবিত করে। 

পরিবেশের তারতম্যের জন্য পৃথিবীর মানুষের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের পার্থক্য দৃষ্ট হয়। তাই কোনো অঞ্চলে অধিবাসীদের জীবনযাত্রা প্রণালি একটি আকস্মিক ঘটনা নয়। বরং এটি পরিবেশের বৈচিত্র্য্যের ফল।O বস্তুগত প্রাকৃতিক পরিবেশ । 

নিম্নে বস্তুগত প্রাকৃতিক পরিবেশের উপাদানগুলো আলোচনা করা হলো :

১. ভূপ্রকৃতি : প্রাকৃতিক পরিবেশের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য উপাদান হচ্ছে ভূপ্রকৃতি মানুষের জীবনের ওপর স্থানীয় ভূপ্রকৃতির যথেষ্ট প্রভাব রয়েছে। ভূপ্রকৃতি বিভিন্ন আকার ও বৈশিষ্ট্য হয়ে থাকে। যেমন: পর্বত, মালভূমি, পাহাড়।

২. নদী : বস্তুগত প্রাকৃতিক পরিবেশের উল্লেখযোগ্য উপাদান হলো নদী। নদী দ্বারা অনেক সময় সামগ্রিক প্রাকৃতিক পরিবেশ ও সাংস্কৃতিক পরিবেশ প্রভাবিত হয়ে থাকে। নদীর বিভিন্ন | আকৃতি ও বৈশিষ্ট্যের হয়ে থাকে ।

৩. মহাসাগর : উন্মুক্ত বিশাল জলরাশিকে মহাসাগর বলা হয়। মহাসাগর হলো বস্তুগত প্রাকৃতিক পরিবেশের একটি অন্যতম প্রধান উপাদান। মহাসাগর প্রাকৃতিক ও সাংস্কৃতিক উভয় প্রকার পরিবেশকে প্রভাবিত করে। 

পৃথিবীতে পাঁচটি মহাসাগর রয়েছে; যথা: প্রশান্ত মহাসাগর, আটলান্টিক মহাসাগর, ভারত মহাসার, উত্তর মহাসাগর ও দক্ষিণ মহাসাগর ।

৪. উদ্ভিদ : প্রকৃতির সৃষ্ট সকল প্রকার গাছপালাকে উদ্ভিদ বলে। উদ্ভিদ হলো বস্তুগত প্রাকৃতিক পরিবেশের একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উপাদান।

৫. খনিজ : বস্তুগত প্রাকৃতিক পরিবেশের গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হলো খনিজ। মানুষের অর্থনৈতিক উন্নতির মূলে এর প্রভাব অনস্বীকার্য। খনিজ দ্রব্য কয়েক প্রকার হয়ে থাকে। 

যেমন : সোনা, রুপা, লৌহ, তেল, গ্যাস প্রভৃতি। এসব খনিজ সম্পদের ওপরই একটি দেশের জাতীয় অর্থনীতি বহুলাংশে নির্ভর করে।

৬. প্রাণীকুল : পৃথিবীতে অগণিত প্রাণী আছে। এসব প্রাণী প্রাকৃতিক বস্তুগত পরিবেশের অন্যান্য সাধারণ উপাদান প্রাণীকূল দ্বারা সাংস্কৃতিক পরিবেশ সৃষ্টি হয়ে থাকে।

উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, পরিবেশ মানব জাতিকে বিভিন্নভাবে প্রভাবিত করছে। মানুষের সার্বিক জীবনপ্রণালি পরিবেশের মাধ্যমেই প্রতিফলিত হয়ে থাকে। 

পরিবেশ ও মানুষের আন্তঃসম্পর্কের প্রতিফল হলো আজকের এ আধুনিক সভ্যতা। মানবসভ্যতার উৎপত্তি ক্রমবিকাশ এবং পতনে পরিবেশের ভূমিকা অপরিহার্য। 

অনুকূল পরিবেশ মানব সংস্কৃতি ও সভ্যতা অতি দ্রুত উন্নতি লাভ করে থাকে। অপরপক্ষে প্রতিকূল পরিবেশ মানব সংস্কৃতি ও সভ্যতার বিকাশে অন্তরায় সৃষ্টি করে। 

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url
আরও পড়ুনঃ
আরও পড়ুনঃ