বাস্তুতন্ত্রের উপর মানুষের প্রভাব কি । বাস্তুতন্ত্রের উপর মানুষের প্রভাব দেখাও

বাস্তুতন্ত্রের উপর মানুষের প্রভাব কি । বাস্তুতন্ত্রের উপর মানুষের প্রভাব দেখাও
বাস্তুতন্ত্রের উপর মানুষের প্রভাব কি । বাস্তুতন্ত্রের উপর মানুষের প্রভাব দেখাও

বাস্তুতন্ত্রের উপর মানুষের প্রভাব কি । বাস্তুতন্ত্রের উপর মানুষের প্রভাব দেখাও

উত্তর : অধিকতর সুখ স্বাচ্ছন্দ্য এবং দীর্ঘ ঊর্ধ্বতনের জন্য মানুষের হস্তক্ষেপে অবৈধভাবে পরিবেশ পরিবর্তন ঘটছে। মানুষের পরিবেশ পরিবর্তনকারী ক্রিয়াকলাপের ফলে সৃষ্ট হচ্ছে দূষণ এবং পুরো বাস্তুতন্ত্রের উপর প্রভাব পড়ছে। 

নিম্নে বাস্তুতন্ত্রের উপর মানুষের প্রভাব দেখানো হলো :

১. সজীব শর্তের অবৈধ পরিবর্তন :

(ক) প্রতিযোগী জীবের আবির্ভাবের দ্বারা : কোনো বাস্তুতন্ত্রের সুস্থিতি নির্ভর করে ঐ বাস্তুতন্ত্রের খাদ্য শৃঙ্খলের শিকারী শিকার সদস্য জীবের প্রকৃতি এবং সংখ্যার ভারসাম্যের ওপর। 

বাস্তুতন্ত্রের সদস্য নয় এমন কোনো নতুন শিকারী ও জীবের আবির্ভাব ঘটলে ঐ বাস্তুতন্ত্রের সমগোত্রীয় শিকারী জীবের সঙ্গে খাদ্য আহরণের বিষয়ে প্রতিযোগিতা শুরু হয়। 

খাদ্যের হ্রাসের পূর্বের শিকারী জীবের সংখ্যা হ্রাস পায়। ফলে ঐ বাস্তুতন্ত্র সামগ্রিকভাবে বিপন্ন হয়ে পড়ে ।

(খ) শিকারী প্রাণী দূরীকরণের মাধ্যমে : আধুনিক সভ্যতার বিজয়রথের ধাক্কায় বিভিন্ন শিকারী জীব যথা- ভল্লুক, ঈগল বাজপাখি প্রভৃতি প্রাণী জীবমণ্ডল থেকে বিলুপ্তির পথে। 

তাই সব প্রাণী বেঁচে থাকলেও আজ তারা বেশ বিপদগ্রস্ত। শিকারী প্রাণীর সংখ্যা প্রাথমিক পর্যায়ে অস্বাভাবিক হারে বেড়ে যায়। 

কিন্তু পরবর্তী পর্যায়ে খাদ্যের অভাবে ক্রমশ হ্রাস পায়। এরূপ প্রভাব দ্বারা সমগ্র বাস্তুতন্ত্রের সুস্থিতি বিনষ্ট হয় এবং পরিবেশের উপর বিরূপ প্রভাব পড়ে ।

২. অজীব শর্তের অবৈধ পরিবর্তন : মানুষের অবৈধ হস্তক্ষেপের ফলে অজীব শর্তের পরিবর্তন ঘটছে। অজীব শর্তের পরিবর্তনগুলোর মধ্যে বায়ু, স্থল, পানি দূষণ এবং সাধারণ সম্পদের সঞ্চয় হ্রাস অন্যতম ।

(ক) দূষণ : ভারি বায়ু এবং অশ্বমণ্ডলের দূষণের ফলে যে অস্বাভাবিক পরিবেশের সৃষ্টি হয় তার প্রভাবে জীবজগৎ প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে প্রভাবিত হয়। 

বর্জ্য পদার্থ মিশ্রিত জলের প্রক্রিয়াকরণ প্ল্যান্ট থেকে যেসব ক্লোরিন যৌগ নদীর পানিতে মিশে তার প্রভাবে নদীর ঐ অঞ্চলের সমস্ত মাছ মারা যায় বা ঐ স্থান থেকে চলে যায়।

নদী, হ্রদ এবং সমুদ্রপথে তেল পরিবহণকারী ট্যাংকার থেকে পড়ে যাওয়া তেলের প্রভাবে মাছ, সরীসৃপ প্রজাতির প্রাণী এবং বিভিন্ন পাখি মারা যায়। 

বিভিন্ন পাওয়ার প্ল্যান্ট থেকে উক্ত পানি নদীতে পড়ার ফলে তাপীয় দূষণের সৃষ্টি হয়। তার প্রভাবে মাছ এবং মাছের খাদ্য জীবের মৃত্যু ঘটে। 

বায়ুমণ্ডলে কার্বন ডাই- অক্সাইড, মিথেন প্রভৃতি গ্যাসের পরিমাণ বৃদ্ধির কারণে বায়ু দূষণ এবং জলবায়ুর পরিবর্তন ঘটছে। এর কারণে পরিবেশগত ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে।

(খ) সম্পদ হ্রাস : মানুষের প্রয়োজনে অজীব এবং সবীজ সম্পদের বাধাহীন অপচয়ের ফলে প্রাকৃতিক সম্পদের হ্রাস ঘটছে। এছাড়া অন্যান্য প্রজাতির ব্যবহার্য সম্পদ শুধু মানুষের প্রয়োজনে ব্যবহার করা হচ্ছে। 

যেমন-পাহাড়ে পানির উৎস পাহাড়ী ঝরনায় গতিপথ পরিবর্তন করে নগরায়নের কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে। ফলে প্রাকৃতিক জলধারাগুলো শুকিয়ে যাচ্ছে। 

যার কারণে জলের অভাবে ঐ অঞ্চলের বিভিন্ন উদ্ভিদ এবং প্রাণী প্রজাতি জীবমণ্ডল থেকে চিরতরে হারিয়ে যাচ্ছে। 

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url
আরও পড়ুনঃ
আরও পড়ুনঃ