সামাজিক বনায়ন কি । সামাজিক বনায়ন বলতে কি বুঝায়

সামাজিক বনায়ন কি । সামাজিক বনায়ন বলতে কি বুঝায়
সামাজিক বনায়ন কি । সামাজিক বনায়ন বলতে কি বুঝায়

সামাজিক বনায়ন কি । সামাজিক বনায়ন বলতে কি বুঝায়

  • অথবা, সামাজিক বনায়ন কাকে বলে?
  • অথবা, সামাজিক বনায়নের সংজ্ঞা দাও ।

উত্তর : ভূমিকা : মানুষ আদিমকাল থেকে শুরু করে আজ পর্যন্ত পরিবেশের সাথে নিজেকে মানিয়ে নিতে সক্ষম হয়েছে। এর কারণ মানুষ পরিবেশের ধারক ও বাহক। 

মানুষ আদিকালে বনাঞ্চল থেকে ফলমূল সংগ্রহ করে তাদের জীবিকা নির্বাহ করত। আজও মানুষ বনের সাথে সম্পৃক্ত। তবে আদিমকালের মত বেশি নির্ভরশীল ছিল না। 

মানুষের চেয়ে বেশি ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বিদ্যমান প্রকৃতির সাথে বনের। কারণ গাছ হলো প্রকৃতির একটা অংশ। মানুষ এখন তার নিত্য চাহিদা পূরণ করার জন্য বনভূমি গড়ে তুলেছে কৃত্রিমভাবে। 

এটি সামাজিক বনায়ন নামে পরিচিত। আমাদের দেশে সামাজিক বনায়ন এখন বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে একথা সত্য যে, সামাজিক বনায়ন সৃষ্টি না হলে। আমাদের দেশে বনাঞ্চলের পরিমাণ অনেক কমে যেত।

সামাজিক বনায়ন : সামাজিক বনায়ন এর ইংরেজি প্রতিশব্দ হলো Social forestry. কৃত্রিমভাবে এ বন তৈরি করে। মূলত পতিত ও অনাবাদী জমি এবং জলাশয় ভরাট করা জমিতে। 

এ ধরনের বনায়ন তৈরি করা হয়। আমাদের দেশে গ্রামাঞ্চলে এ ধরনের বনায়ন সৃষ্টি করা হয়। আমাদের দেশের সামাজিক বনায়নের মাধ্যয়ে অনেক মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ হয়। 

মানুষ কৃত্রিমভাবে যে বনাঞ্চল তৈরি করে, কোনো রকম প্রাকৃতিক স্পর্শ ছাড়াই তাকে সামাজিক বনায়ন নামে অভিহিত করা হয়। 

৭০ দশকের পর থেকে এ ধরনের বনায়ন এর পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়েছে। আমাদের দেশে বর্তমানে সামাজিক বনায়ন বেশি রয়েছে। 

গাজীপুর ও ময়মনসিংহ জেলায়। তবে আমাদের দেশে সরকারিভাবে নোয়াখালী ও কক্সবাজার জেলায় এ ধরনের বনভূমি দেখা যায়। 

এটি তৈরিতে যথেষ্টভাবে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা রয়েছে। তবে আমাদের দেশে গ্রামীণ পরিবেশে এ ধরনের বনায়ন ব্যক্তিগত উদ্যোগে গড়ে ওঠে। 

আমাদের দেশের সামাজিক বনায়ন সৃষ্টির মাধ্যমে পতিত জমি আর ফাঁকা থাকছে না। এতে অনেক মানুষ উৎসাহ পেয়ে এ ধরনের বনায়ন সৃষ্টিতে অনেকেই ঝুঁকে পড়েছে। তবে যদি সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা থাকত তবে এ ধরনের বন আরো বেশি হতো।

প্রামাণ্য সংজ্ঞা : বিভিন্ন সংস্থা ও সমাজবিজ্ঞানী ও পরিবেশবিজ্ঞানী বিভিন্নভাবে সামাজিক বনায়নের সংজ্ঞা প্রদান করেছেন। 

সংজ্ঞাগুলো নিম্নরূপ : পরিবেশবিজ্ঞানী Gilmur and Fisher এর মতে, “গ্রাম্য লোকজন কর্তৃক বন নিয়ন্ত্রণ ও ব্যবস্থাপনা হলো সামাজিক বনায়ন ।”

ওয়েস্টরস-এর মতে, “সামাজিক বনায়ন হলো এমন এক ধরনের বনায়ন যা দরিদ্র মানুষদের সহায়তা প্রদান করে। এটি কৃষিভূমি ও গ্রামীণ সম্প্রদায়ের ক্ষেত্রে বৃক্ষরোপণ ও ব্যবস্থাপনার সাথে কৃষক ও ভূমিহীনদের সম্পৃক্ত করে।”

জাতিসংঘের মতে, “সামাজিক বনায়ন হলো এমন এক ধরনের বন ব্যবস্থাপনা যার সাথে গ্রাম এলাকার জনগোষ্ঠী জড়িত এবং এর মাধ্যমে মানুষ তাদের জীবিকা, জ্বালানি ও কাঠ সংগ্রহ করে।”

সুতরাং, সামাজিক বনায়ন হলো এমন এক ধরনের বনায়ন যেখানে মানুষ সম্পূর্ণ নিজ উদ্যোগে ও নিজ ব্যবস্থাপনায় গাছপালা রোপণ করে । এ ধরনের বনভূমি এখন বেশ জনপ্রিয়তা লাভ করেছে।

উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, সামাজিক বনায়ন একটি দেশের প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষার জন্য বেশ কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। 

আমাদের দেশে বনভূমির পরিমাণ প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম। তবে বনজ সম্পদের পরিমাণ বৃদ্ধি করতে হলে যৌথ বা একক প্রচেষ্টায় সামাজিক বনায়নের কোনো বিকল্প নেই। 

ইতোমধ্যে আমাদের দেশে সামাজিক বনায়নের ব্যাপক প্রভাব লক্ষ্য করা যায়। যদি সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পাওয়া যায় তবে এ ধরনের বনভূমির পরিমাণ অনেক বেড়ে যাবে । 

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url
আরও পড়ুনঃ
আরও পড়ুনঃ