পরিবেশ সংরক্ষণে ও দুর্যোগ মোকাবেলায় নারীদের আন্দোলনের ভূমিকা আলোচনা কর

পরিবেশ সংরক্ষণে ও দুর্যোগ মোকাবেলায় নারীদের আন্দোলনের ভূমিকা আলোচনা কর
পরিবেশ সংরক্ষণে ও দুর্যোগ মোকাবেলায় নারীদের আন্দোলনের ভূমিকা আলোচনা কর

পরিবেশ সংরক্ষণে ও দুর্যোগ মোকাবেলায় নারীদের আন্দোলনের ভূমিকা আলোচনা কর

  • অথবা, পরিবেশ রক্ষার নারীর আন্দোলন কি কি বিশ্লেষণ কর।

উত্তর : ভূমিকা : বনসম্পদ রক্ষা এবং উন্নয়নের মাধ্যমে আবারো প্রমাণিত হয় নারীরাই সবচেয়ে বেশি ঘনিষ্ঠ। ইতিহাসের বিভিন্ন অধ্যায়ে বিশেষ করে সাম্প্রতিক সময়ে ঘটে যাওয়া কয়েকটি নারী আন্দোলনকে কেস স্টাডি হিসেবে অধ্যয়ন করলে এ ধারণা আরো মজবুত হয় ।

বনসম্পদ সংরক্ষণে নারীদের বিশেষ করে তৃতীয় বিশ্বের সুবিধা বঞ্চিত নারীদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ ও আন্দোলন জেন্ডার পরিবেশ আলোচনায় নতুন মাত্রা যোগ করেছে।

মেরী আন্দোলন : তিনটি নারী আন্দোলনের কথা জানা যায়। 

১. কেনিয়ার মৈথিয়া দল;

২. ভারতে চিপকো আন্দোলন ও

৩. কেনিয়ার সবুজ বেষ্টনী আন্দোলন।

এ তিনটি নারী আন্দোলনের উল্লেখের পাশাপাশি একটি গবেষণার সারসংক্ষেপ আলোচনা করা হয়েছে। যেখানে বাংলাদেশের নারীরা দুর্যোগ মোকাবেলা করতে গিয়ে কি কি ভূমিকা পালন করেছে। 

১. কেনিয়ার টমথিয়া দল : প্রাকৃতিক সম্পদ বিপর্যয়ের বিপরীতে কাথিকা মৃত্তিকা ও পানি সংরক্ষণ প্রজেক্ট নারীদের একটি চমৎকার উদ্যোগ হিসেবে বিবেচিত হয়েছে। 

কেনিয়ার এই এলাকাটি গুল্ম ও চাষের জন্য কৃষকদেরকে প্রচুর পরিশ্রম করতে হয়। স্থানীয় জনসাধারণের মধ্যে পানি এবং বিদ্যুতের সরবরাহ নিশ্চিত হয়নি। 

এই ঘটনা ১৯২০ সাল থেকে চলছিল প্রায় ১৯৭০ সাল পর্যন্ত। এর ফলে ৭০ এর দশকের শুরুতে ব্যাপক ভূমিকায় এবং এর প্রতিক্রিয়া হিসেবে খাদ্য উৎপাদন হ্রাস পেতে শুরু করে। 

ফলে মানুষের অস্তিত্ব হুমকির সম্মুখীন হয়। এর প্রেক্ষাপটে মৈথিয়া দলের ১৫ জন নারী কর্মী প্রতি সপ্তাহে দুইবার যেকোনো একজন সদস্যের কৃষি খামারে কাজ করতে শুরু করে। 

সপ্তাহে আরেক দলে তারা বাঁধ নির্মাণ, ভূমি ক্ষয় রোধে কাজ করে। প্রতিটি দল প্রতি বছরে ১৫০০-৪০০০ মিটার বাঁধ সংস্কার করতে সক্ষম হয়। মৈথিয়া দলের আরেকটির গুরুত্বপূর্ণ অবদান হচ্ছে পানি সংরক্ষণ।

পানি সংরক্ষণ তারা পানি সংরক্ষণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। কৃষি খামারে এই পানি উৎপাদনে ব্যাপক সহায়তা করে। মৈথিয়া দলের সদস্যরা এসবের পাশাপাশি বিভিন্ন উপার্জন বর্ধক কার্যক্রম শুরু করে। 

যার ফলে ঝুড়ি তৈরি ও রুটি তৈরি প্রকল্প অন্তর্ভুক্ত ছিল। মৈথিয়া দলের নিবেদিত নারী কর্মীরা কোন ধরনের বাইরের সাহায্য ছাড়াই স্থানীয় পর্যায়ে সফল হয়। 

এই নারীদল বিশ্বে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করতে সক্ষম হয়। এই দলের নারী কর্মীরা বর্তমানে নদী থেকে অবৈধ বালু উত্তোলন এবং মাটিকাটা বন্ধে ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। এছাড়াও পানি সংরক্ষণকল্পেও তারা অব্যাহত আন্দোলন চলিয়ে যাচ্ছে।

২. ভারতের চিপকো আন্দোলন : ১৯৭০ এর দশকে বন বিভাগ বাণিজ্যিক কর্মসূচির ভিত্তিতে ওক কাঠ এবং বড় বৃক্ষ নিধন শুরু করে। অথচ এই বনসম্পদের ওপর দীর্ঘ কয়েক শতক ধরে স্থানীয় নারীদের প্রাকৃতিক অধিকার ছিল। 

১৯৭৪ সালে উত্তর প্রদেশ বনবিভাগের অনুমতিক্রমে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে বৃক্ষনিধন শুরু হয়। আর এ ঘটনার প্রতিবাদে নারীরা বনে নেমে যায় এবং স্বতঃস্ফূর্তভাবে প্রত্যেক গাছ জড়িয়ে ধরে কাঠ নিধনকারীদের বাধা দেয় এ ঘটনা পরিবেশ আন্দোলনে এক নতুন মাত্রা থেকে যোগ করে। 

কারণ পরিবেশ আন্দোলনের দীর্ঘ ইতিহাসে এ ধরনের বাধা প্রদান শুধু নতুনই নয় বরং হৃদয়গ্রাহী। স্থানীয় নারীরা এ আন্দোলনে শক্তিশালী চাপসৃষ্টিকারী দল হিসেবে কাজ করে এবং প্রাকৃতিক সম্পদ পরিকল্পনার নতুন ক্ষেত্রে ভাবনা যোগ করে। ফলে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে কাঠ নিধন বন্ধ হয়ে যায়।

সুদমুক্ত ঋণের ব্যবস্থা । ১৯৮২ সালে এ আন্দোলনের নারী কর্মীরা তাদের কর্মীদের জন্য সুদমুক্ত ঋণের ব্যবস্থা করে। 

এর ফলে নারী কর্মীরা আর্থিকভাবে অনেকটাই স্বাবলম্বী হয়ে উঠে এবং বনসম্পদের ওপর তাদের অধিকার নিশ্চিতকরণে সচেষ্ট হয়।

বনসম্পদ উৎপাদনে মুখ্য ভূমিকা। এ ঘটনার ধারা বাহ্যিকতায়, তারা অবৈধ কাঠ সংগ্রাহকদের বিতাড়ন করতে সক্ষম হয়। 

পরবর্তীতে তারা এসব বনে নার্সারি স্থাপন করে, যা আরো পরে গ্রামে গ্রামে বনসম্পদ উৎপাদনে মুখ্য ভূমিকা রাখে। 

এ আন্দোলনের ফলে ১৯৮৭ সালে পশুখাদ্য ঘাস ও জালানি কাঠের জন্য বনবিভাগ স্থানীয় নারীদের প্রাকৃতিক অধিকারের বিষয়টি মেনে নেয়। চিপকো আন্দোলনের আরেক দফা বিজয় এভাবেই সূচিত হয়। 

পরবর্তীতে এই আন্দোলনের কর্মীরা তাদের সদস্যদের জ্বালানি সাশ্রয়ী চুলা এবং রান্নার তৈজসপত্র সরবরাহ করে। ফলে বনের উপর জ্বালানি সংগ্রহের চাপ কমে যায় এবং বনসম্পন রক্ষা পায়।

৩. কেনিয়ার সবুজ বেষ্টনী আন্দোলন : কেনিয়ার সবুজ বেষ্টনী আন্দোলন প্রকল্প স্থানীয় পর্যায় ছাড়িয়ে আফ্রিকার অন্যান্য সম্প্রদায় এবং বিশ্বের অন্যান্য দেশেও ব্যাপক কার্যকর ভূমিকা রাখতে সক্ষম হয়। 

পরিবেশের বিভিন্ন প্রয়োজন অনুসারে এ আন্দোলন ভিন্ন ভিন্ন ইস্যুতে কাজ করে। এ আন্দোলনের একটি অংশে স্থানীয় নারীরা বীজ থেকে চারা গাছ তৈরি করে প্রান্তিক কৃষক এবং জন কল্যাণমূলক প্রতিষ্ঠানে বিতরণ করে। 

যারা এ প্রকল্পে যুক্ত তাদেরকে নগদ অর্থ দেয়া হয়। ফলে তারা উর্পাজনক্ষম হয়ে উঠে, যা নারীদেরকে সমাজে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে সাহায্য করে। 

সবুজ বেষ্টনী প্রকল্প যেটা কেনিয়া সবুজ গাছে জড়িয়ে ফেলতে হয়। এ উদ্দেশ্য এ আন্দোলনের নারী কর্মীরা ৬০০ নার্সারি চালনা করে। 

এ আন্দোলনের ৫০,০০০ নারীকর্মীদের মাধ্যমে এ পর্যন্ত প্রায় ৭ মিলিয়ন বৃক্ষ লাগানো সম্ভব হয়েছে। সম্প্রদায়ভিত্তিক বৃক্ষায়ন কর্মসূচির আদর্শ উদাহরণ হিসেবে কেনিয়ার সবুজ বেষ্টনী আন্দোলন শীর্ষস্থানীয় ও অনুকরণযোগ্য বলে বিবেচিত হয়েছে। 

পরিবেশ রক্ষার পাশাপাশি উপার্জনধর্মী বিভিন্ন প্রকল্প প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করে নারীরাই কিভাবে নিজেদের এবং পরিবেশের প্রকৃত সংরক্ষক হয়ে ওঠে এ আন্দোলন তারই প্রমাণ।

উপসংহার : পরিশেষে বল যায় যে, নারী আন্দোলন বিশ্বে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। তারা একদিকে ব্যাপক গাছ লাগিয়েছে অন্যদিকে অর্থনৈতিক ভাবে স্বাবলম্বী হয়েছে। 

The Green belt movement aims to bring environment restoration along with societie's economic growth. This movement leaded by 'magthai' focused on restoration of Kenya's rapidly diminishing forests as well as empowering the rural woman through environ nental preservation, with a special emphasis on planting indigenous trees. 

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url
আরও পড়ুনঃ
আরও পড়ুনঃ