সমাজসংস্কারে হাজী শরীয়তুল্লাহর অবদান লেখ
সমাজসংস্কারে হাজী শরীয়তুল্লাহর অবদান লেখ | সমাজসংস্কারে হাজী শরীয়তুল্লাহর ভূমিকা উল্লেখ কর
প্রশ্ন ৩.০৬ | সমাজসংস্কারে হাজী শরীয়তুল্লাহর অবদান লেখ ।
অথবা, সমাজসংস্কারে হাজী শরীয়তুল্লাহর ভূমিকা উল্লেখ কর।
উত্তর ভূমিকা : ভারতীয় উপমহাদেশে সংস্কার আন্দোলনের মাধ্যমে যে কয়জন ব্যক্তিত্ব বিখ্যাত হয়ে আছেন তাঁদের মধ্যে হাজি শরীয়তুল্লাহ অন্যতম। হাজি শরিয়তুল্লাহ প্রথমদিকে ধর্মীয় সংস্কারে কাজ করলেও আস্তে আস্তে তার কার্যক্রম সমাজসংস্কারে রূপ নেয় এবং মুসলমানদের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি, শিক্ষাবিস্তার, শ্রেণিবৈষম্য দূরীকরণ ইত্যাদি ক্ষেত্রে বিশেষ অবদান রাখে।
সমাজসংস্কারে হাজী শরীয়তুল্লাহর অবদান লেখ সমাজসংস্কারে হাজী শরীয়তুল্লাহর ভূমিকা উল্লেখ কর |
● সমাজসংস্কারে হাজি শরিয়তুল্লাহর অবদান : নিম্নে সমাজসংস্কারে হাজি শরীয়তুল্লাহর অবদান সংক্ষেপে আলোচনা করা হলো-
১. কুসংস্কার দূরীকরণ : কুসংস্কার দূরীকরণে হাজি শরীয়তুল্লাহর অবদান অপরিসীম। ইসলামের মূল শিক্ষা থেকে বিচ্ছিন্নতা এবং দীর্ঘদিন হিন্দুদের সাথে বসবাস করার কারণে মুসলমানদের মধ্যে অনেক সামাজিক কুসংস্কার প্রবেশ করে। যেমন— ভেলা ভাসানো, গাজিকালুর প্রশস্তি গাওয়া, সমাধিসৌধ নির্মাণ, সমাধিতে ফুল দেওয়া, আলোকসজ্জা করা, হিন্দুদের পূজাপার্বণে অংশগ্রহণ করা ইত্যাদি। এসব সামাজিক কুসংস্কার দূরীকরণে শরিয়তুল্লাহ অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন ।
২. মুসলমানদের সচেতনকরণ : মুসলমানদের সচেতনকরণে হাজি শরিয়তুল্লাহ তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন । তিনি ধর্মীয় আলোচনা ও পুস্তিকা প্রকাশের মাধ্যমে বাংলার কৃষক সমাজকে সচেতন করে তোলেন যার ফলে অনেক সমাজসংস্কার সাধন হয়।
৩. শ্রেণিবৈষম্য হ্রাসকরণ : হাজি শরিয়তুল্লাহ মুসলমানদের মধ্যে শ্রেণিবৈষম্য হ্রাসে প্রচেষ্টা চালান। তিনি মুসলমানদের মধ্যে আশরাফ আতরাফ শ্রেণি বিলুপ্ত ঘোষণা করেন।
৪. শিক্ষাবিস্তার : হাজি শরীয়তুল্লাহ মুসলমানদের জন্য স্কুল, মাদরাসাসহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান স্থাপন করেন এবং উক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ইসলামি শিক্ষার পাশাপাশি আধুনিক শিক্ষার ব্যবস্থা করেন । এছাড়াও তিনি মুসলিম ছাত্রদের জন্য বৃত্তির ব্যবস্থা করেন।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, ভারতীয় উপমহাদেশের সমাজসংস্কার আন্দোলনে হাজি শরীয়তুল্লাহ একজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব । তিনি ধর্মীয় সংস্কারের পাশাপাশি সমাজসংস্কারে অবদান রেখে ইতিহাসে বিখ্যাত হয়ে আছেন। তার ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় সমাজ থেকে কবরপূজা, ভেলা ভাসানো, সমাধিসৌধ নির্মাণ, সমাধিতে ফুল দেওয়া ইত্যাদি কুসংস্কারমূলক কার্যক্রম অনেকাংশে হ্রাস পায়