আরাকানে রোসাঙ্গে বাংলা সাহিত্য চর্চায় নিয়োজিত কবিদের পরিচয় দাও
আরাকানে (রোসাঙ্গে) বাংলা সাহিত্য চর্চায় নিয়োজিত কবিদের পরিচয় দাও।
![]() |
আরাকানে (রোসাঙ্গে) বাংলা সাহিত্য চর্চায় নিয়োজিত কবিদের পরিচয়
দাও। |
উত্তর: আরাকানের বৌদ্ধ রাজাদের আনুকূল্যে বাংলা সাহিত্যের চর্চা করে যেসব কবি খ্যাতি অর্জন করেছিলেন তাদের পরিচয় নিম্নে প্রদত্ত হল-
সৈয়দ সুলতান (১৫৫০-১৬৬৪ খ্রিঃ) : সুফী সাধক ও রাধাকৃষ্ণের পদাবলী গায়ক সৈয়দ সুলতান চট্টগ্রামের পরাগলপুরবাসী। তাঁর রচিত গ্রন্থ— ১. নবীবংশ, ২. রসুল বিজয়, ৩ শব-ই-মিরাজ, ৪. ওফাত-ই-রসুল, ৫. জ্ঞানপ্রদীপ, ৬. জয়কুন রাজার লড়াই ইত্যাদি। মুহম্মদ খান (১৫৮০-১৬৫০ খ্রিঃ) সৈয়দ সুলতানের শিষ্য মুহম্মদ খানের কাব্যগুলো- ১. মুক্তাল হোসেন, ২. হানিফার লড়াই, ৩. কিয়ামতনামা, ৪. কাসেমের লড়াই ইত্যাদি। আব্দুল হাকিম : আব্দুল হাকিমের কাব্য — ১. ইউসুফ জোলেখা, ২. লালমতি সয়ফুল মুলুক, ৩. শিহাবউদ্দিননামা, ৪. নূরনামা, ৫. নসীহতনামা, ৬, চারি মোকামভেদ, ৭. কারবালা, ৮. শহরনামা।
ফকীর গরীবুল্লাহ (১৬৭০-১৭৭০ খ্রিঃ) হুগলী জেলার বালিয়া পরগণার অন্তর্গত হাফিজপুর গ্রামে তাঁর জন্ম। তাঁর কাব্যগুলো— ১. আমীর হামজা, ২. ইউসুফ জোলেখা, ৩. মোডাল হোসেন বা জঙ্গনামা, ৪. সোনাভান, ৫. সত্যপীরের পুঁথি।
দৌলত কাজী (১৬০০-১৬৩৮ খ্রিঃ) চট্টগ্রাম জেলার রাউজান থানার সুলতানপুর গ্রামের দৌলত কাজী আরাকান রাজ শ্রী সুধর্মার রাজত্বকালে অমাত্য আশরাফ খানের পৃষ্ঠপোষকতায় 'সতীময়না ও লোর চন্দ্রানী' নামে কাব্য রচনা করেন। অতঃপর তিনটি কাব্য রচনায় হাত দিয়ে অসমাপ্ত রেখেই তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
আলাওল (১৬০৭-১৬৮৯ খ্রিঃ) : সপ্তদশ শতকের কবিদের মধ্যে আলাওল শ্রেষ্ঠ। চট্টগ্রাম জেলার হাটহাজারী থানার জোবরা গ্রামের সৈয়দ বংশে তাঁর জন্ম। তিনি ফারসি সাহিত্য থেকে— 'সেকেন্দারনামা', 'সয়ফুল মুলুক বদিউজ্জামান', 'হপ্তপয়কর', 'ধর্ম বিষয়ক তোহফা' এবং মাগন ঠাকুরের আদেশে হিন্দী কবি মালিক মুহম্মদ জায়সীর 'পদুমাবৎ' কাব্য অবলম্বনে 'পদ্মাবতী' কাব্য রচনা করেন। কিছু পদাবলী ও আধ্যাত্ম সংগীত তিনি রচনা করেন। দৌলত কাজীর অসমাপ্ত কাব্য সমাপ্ত করেন।
মরদন (১৬০০-১৬৪০ খ্রিঃ) : প্রেমগাথার রচয়িতা মরদন রাজা শ্রী সুধর্মার পৃষ্ঠপোষকতায় 'নসীরানামা' রচনা করেন।
কোরেশী মাগন ঠাকুর (১৬০০-১৬৬০ খ্রিঃ) : আরাকান রাজসভার অন্যতম কবি। তিনি রোসাঙ্গ রাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। আলাওলের অন্যতম পৃষ্ঠপোষক। তাঁর রচিত কাব্য 'চন্দ্রাবতী'।
আব্দুল করিম খন্দকার : তিনি আরাকান রাজ্যের কোষাধ্যক্ষ আতিবর নামক ব্যক্তির আদেশে ১৬৯৮ খ্রিঃ 'দুল্লা মজলিস' রচনা করেন। 'হাজার মসাইল' ও 'নূরনামা' নামে দুটি কাবাও তিনি রচনা করেছেন।
.png)