বাংলা সাহিত্য চর্চার পাদপীঠ হিসেবে আরাকান রাজসভার সংক্ষিপ্ত পরিচয় দাও

 বাংলা সাহিত্য চর্চার পাদপীঠ হিসেবে আরাকান রাজসভার সংক্ষিপ্ত পরিচয় দাও।

বাংলা সাহিত্য চর্চার পাদপীঠ হিসেবে আরাকান রাজসভার সংক্ষিপ্ত পরিচয় দাও।
বাংলা সাহিত্য চর্চার পাদপীঠ হিসেবে আরাকান রাজসভার সংক্ষিপ্ত পরিচয় দাও।

উত্তর: সপ্তদশ শতকের মাঝামাঝি সময় থেকে প্রায় দেড়শ বছর চট্টগ্রাম আরাকান রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত ছিল। এ সংযোগের ফলে আরাকান রাজ্যে বাংলা সাহিত্য ও সংস্কৃতির প্রভাব ব্যাপক ও গভীর হয়। আরাকানেরা বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী হলেও তাদের ধর্ম সহিষ্ণুতার দরুন বৌদ্ধ ও ইসলামী সংস্কৃতির মধ্যে সমন্বয় ঘটেছিল। 

পঞ্চদশ শতক থেকে বাংলা সংস্কৃতির সাথে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ থাকলেও সপ্তদশ শতাব্দীতে আরাকানে সমৃদ্ধ সাহিত্য সৃষ্টি হয়েছিল সেখানকার রাজা ও রাজ পরিষদের পৃষ্ঠপোষকতায়। তারা বৌদ্ধ হলেও সাংস্কৃতিক দিক দিয়ে খাঁটি বৌদ্ধ ছিল না। 

বাংলা সাহিত্য চর্চায় তাদের গভীর অনুরাগ ছিল, তাছাড়া আরাকান রাজারা দীর্ঘদিন ধরে তাদের নামের সাথে মুসলিম উপাধি ব্যবহার করেছেন। তাদের রাজসভায় উচ্চ পদগুলো মুসলমানদের দখলেই ছিল। কারণ আরাকানে নিজস্ব সভ্যতা সংস্কৃতির চেয়ে মুসলিম সংস্কৃতি অনেকটা উন্নত ছিল। 

আরাকান রাজসভায় আরবি ফারসি এবং তুর্কি মতবাদে অনুরক্ত কবিদের আবির্ভাব ঘটে এবং বিদগ্ধ মুসলমান ফারসি ছেড়ে বাংলা রচনায় উৎসাহ বোধ করেন। আরাকান রাজা, সেনাপতি প্রভৃতির মধ্যে এক প্রতিযোগিতা লেগে যায় - কে কতজন কবির পৃষ্ঠপোষকতা করতে পারেন। 

আর সেই সুযোগেই সৈয়দ সুলতান, আব্দুল হাকিম, ফকীর গরীবুল্লাহ, আলাওল প্রমুখ কবিসহ আরও অন্যান্য কবিরা আরাকানে বসবাসের সুযোগ পায় এবং তাদের পৃষ্ঠপোষকতায় বাংলা কাব্য চর্চা করে বাংলা সাহিত্যকে সমৃদ্ধ করেন।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url
আরও পড়ুনঃ
আরও পড়ুনঃ