চর্যার পদকর্তা হিসেবে ভুসুকুপা-এর পরিচয় তুলে ধর

চর্যার পদকর্তা হিসেবে ভুসুকুপা-এর পরিচয় তুলে ধর।

চর্যার পদকর্তা হিসেবে ভুসুকুপা-এর পরিচয় তুলে ধর।
চর্যার পদকর্তা হিসেবে ভুসুকুপা-এর পরিচয় তুলে ধর।

উত্তর:
বাংলা সাহিত্যের প্রাচীন নিদর্শন চর্যাপদ। চর্যাপদে ২৩ জন কবির সাড়ে ৪৬টি পদ রয়েছে। ভুসুকুপা চর্যাপদ গ্রন্থের বিশিষ্ট কবি। চর্যাগীতিকোষ বৃত্তিতে কাহ্নপার পর ভুসুকুপার চর্যাই অধিক। তাঁর রচিত মোট আটটি পদ (৬, ২১, ২৩, ২৭, ৩০, ৪১, ৪৩, ৪৯)। ভুসুকু নিজেকে রাউতু বলে উল্লেখ করেছেন (৪১ ও ৪৩ পদে)।

হরপ্রসাদ শাস্ত্রী ও সুকুমার সেন মঞ্জুশ্রীর উপাসক শান্তিদেবের সাথে তাঁকে অভিন্ন ভেবেছেন। ভুসুকুপা দীপঙ্কর শ্রীজ্ঞান অতীশের পঞ্চ শিষ্যের অন্যতম। ভুসুকুপা খ্রিস্টীয় একাদশ শতাব্দীর মধ্যভাগে জীবিত ছিলেন।

তাঁর ৪র্থ সংখ্যক পদে বাংলার বিখ্যাত নদী পদ্মা (পউআঁখাল) এর উল্লেখ আছে। ফলে তিনি পূর্ব বাংলার অধিবাসী। হরপ্রসাদ শাস্ত্রী বলেছেন, ভুসুকুপা-এর বাড়ি জাহোর অর্থাৎ প্রাচীন যশোর।

 ১২৯৫ খ্রিস্টাব্দে অনুলিপিকৃত তাঁর চতুরাভরণ গ্রন্থের পাণ্ডুলিপি আবিষ্কৃত হয়েছে। অতএব একাদশ শতকে ভুসুকুপা-এর আবির্ভাব অসংগত নয়।সুকুমার সেন ভুসুকুপা-কে রাজপুত্র বলেছেন। তিনি তাঁর পদের 'রাউতু ভুসুকু' বলতে অশ্বারোহী যুদ্ধ ব্যবসায়ী বংশের সন্তান বলে চিহ্নিত করেছেন।

 তিনি ভুসুকু নামের বিবর্তন দেখিয়েছেন ভুসুক্ষ্ম > ভুসুকু ভুসুকুপা যোগী সাধক ছিলেন, তবে বৈরাগী ছিলেন না। তাঁর গানে সেকালের অতি সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রার ছবি পাওয়া যায়। এগুলোর ঐতিহাসিক মূল্য অনস্বীকার্য। ভুসুকুপা-এর পদের জীবনবাদী দৃষ্টিভঙ্গি প্রাচীন পদকর্তাদের মধ্যে তাঁকে স্বতন্ত্র করেছে।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url
আরও পড়ুনঃ
আরও পড়ুনঃ