পলাশীর যুদ্ধ জয়ে নবাব সিরাজউদ্দৌলার একমাত্র ভরসা সম্পর্কে ধারণা দাও
পলাশীর যুদ্ধ জয়ে নবাব সিরাজউদ্দৌলার একমাত্র ভরসা সম্পর্কে ধারণা দাও
![]() |
পলাশীর যুদ্ধ জয়ে নবাব সিরাজউদ্দৌলার একমাত্র ভরসা সম্পর্কে ধারণা দাও |
উত্তর: ২২ জুন ১৭৫৭। পলাশীর প্রান্তরে আসন্ন যুদ্ধে বিপর্যয়ের আকাঙ্ক্ষায় উদ্বিগ্ন সিরাজ গভীর রাতে নিদ্রাহীন সময় অতিবাহিত করছেন। সেনাপতি মোহনলাল উপস্থিত হন নবাবের কাছে। উদ্বিগ্ন নবাব ইংরেজের আচরণে ক্ষুব্ধ, বিস্মিত। সভ্য জাতি বলে পরিচিত কিন্তু বাংলায় তাদের আচরণ কত না জঘন্য।
মোহনলাল আসন্ন যুদ্ধে নবাব পক্ষের প্রভূত শক্তির বর্ণনা দিলে আশাহত সিরাজ তার কথায় অনিবার্য পতনের অপেক্ষাকেই মূর্ত করে তোলেন। বিশ্বাসঘাতক মীরজাফর ও তার অনুসারীরা সিরাজের পক্ষে যুদ্ধ করবে, সে বিশ্বাস নেই। ইংরেজ ও মীরজাফরের একাধিক গোপন চিঠি ধরা পড়েছে। সিরাজ আজ বিচলিত। এ সময় হাজির হয় বিশ্বাসভাজন মীর মর্দান।
তিনি পলাশীর যুদ্ধক্ষেত্রে নবাব পক্ষের কৌশল প্রণয়ন করেছেন। নবাব ছাউনির সামনে থেকে যুদ্ধে নেতৃত্ব দেবেন মোহনলাল, সাঁফ্রে আর মীর মর্দান। পশ্চিম দিকে গঙ্গার তীরে বদ্রে আলী খাঁ, তারই কাছে নৌবেসিং। বামপ্রান্তে মীরজাফর, রায় দুর্লভ, ইয়ার লতিফ খাঁ। নবাব স্পষ্ট দেখেন যে, যুদ্ধে নবাব পক্ষ জিততে থাকলে মীরজাফরেরা যুক্ত হবে ক্লাইভের সাথে।
যুদ্ধক্ষেত্রে মীরজাফরদের না রাখার কথায় সিরাজ বলেন- তাহলে তারা রাজধানী দখল করে বসবে। দুশ্চিন্তাই সিরাজকে বেশি করে পীড়া দেয় দেখে মোহনলাল সিরাজকে আশ্বস্ত করেন যে, তাদের প্রাণ থাকতে নবাবের ক্ষতি কেউ করতে পারবে না।
সিরাজের কষ্ট সেখানেই যে, মোহনলাল, মীর মর্দানের মত আস্থাভাজন সেনাপতিরা জীবনের শেষ রক্তবিন্দু দিয়ে দেশের জন্য লড়ে যাবে অথচ দেশের স্বাধীনতা রক্ষা হবে না। এ কথাই সিরাজকে আজ বেশি করে উদ্বিগ্ন করে তোলে ।
-
আগামীকালের যুদ্ধে সেনাবাহিনীর অভ্যন্তরীণ গোলযোগ এড়াতে মীরজাফরকেই সিপাহসালার করতে হবে। সে থাকবে যুদ্ধ করা না করার সর্বময় কর্তা। ইংরেজের তুলনায় সিরাজের সৈন্যবাহিনী যেমন বিশাল; গোলাবারুদ, কামানও তেমনি প্রতুল।
কিন্তু সেখানে বিশ্বাসঘাতকতাও হবে প্রচণ্ড। তাই সিরাজের শেষ ভরসা তার সেনাবাহিনীর ওপর নয়, তার একমাত্র ভরসা পলাশীর যুদ্ধক্ষেত্রে বাংলার স্বাধীনতা মুছে যাবার সূচনা দেখে মীরজাফর, রায় দুর্লভ, ইয়ার লতিফদের মনে যদি দেশপ্রীতি জেগে ওঠে তবেই রক্ষা,
.png)