মারি অরি, পারি যে, কৌশলে। — ব্যাখ্যা কর
মারি অরি, পারি যে, কৌশলে। — ব্যাখ্যা কর।
![]() |
| মারি অরি, পারি যে, কৌশলে। — ব্যাখ্যা কর। |
উত্তর মেঘনাদবধ কাব্যে ইন্দ্রজয়ী মেঘনাদ লক্ষ্মণের চিরশত্রু। এর পূর্বেও মেঘনাদের হাতে লক্ষ্মণ একবার জীবন দিয়েছে, দেবতার আশীর্বাদে সে জীবন' ফেরত পেয়েছে। মেঘনাদ কাল যুদ্ধে আসবে, ফলে রাঘবেরা সবাই ভীত-সন্ত্রস্ত।
দেবতাদের পরামর্শে দেব প্রেরিত অস্ত্র নিয়ে মিত্র বিভীষণের সাথে লক্ষ্মণ রাবণের অন্দরমহলে প্রবেশ করে। মেঘনাদ যুদ্ধে যাবার আগে পিতার নির্দেশে নিকুম্ভিলা যজ্ঞাগারে পূজার জন্য গিয়েছে। এ সময় লক্ষ্মণ গিয়ে নিরস্ত্র মেঘনাদের উপর চড়াও হয়।
মেঘনাদ লক্ষ্মণকে আতিথেয়তা গ্রহণ করতে অনুরোধ জানায়, সেই অবকাশে সে অস্ত্রাগার থেকে অস্ত্র আনার অনুমতি চায়। কিন্তু লক্ষ্মণ জানে যে, অস্ত্রধারী মেঘনাদের সাথে সে যুদ্ধে পেরে উঠবে না। তাই নিরস্ত্র মেঘনাদকেই সে মারতে উদ্যত হয়।
তাই সে যুক্তি দেয় যে, শিকারির চিরশত্রু বাঘকে জালে পেয়ে শিকারি কি কখনও ছেড়ে দেয়, তেমনি লক্ষ্মণ আজ সুযোগ পেয়ে মেঘনাদকে ছেড়ে দেবে না। এভাবে শত্রুকে মারা যদিও ক্ষত্রিয়দের বা যোদ্ধাদের রীতিসিদ্ধ নয়, তবু যেহেতু মেঘনাদের জন্ম রক্ষঃকুলে, লক্ষ্মণ তার সাথে কেন ক্ষত্রিয় রীতি প্রয়োগ করবে।
শত্রুকে বধই হচ্ছে মূল উদ্দেশ্য, ফলে তা যে কৌশলেই হোক তাতে কোন অপরাধ নেই। মূল অভিপ্রায় শত্রুবধ, সেটাই সে করবে। এর মধ্য দিয়ে কবি লক্ষ্মণকে অত্যন্ত ভীরু কাপুরুষ ও অমানবিক করে তুলেছেন ।
