চর্যাপদ বিধৃত ধর্মতত্ত্বের পরিচয় দাও

চর্যাপদ বিধৃত ধর্মতত্ত্বের পরিচয় দাও

অথবা, চর্যার ধর্ম ও সাধন প্রণালির ব্যাখ্যা কর 

অথবা, 'চর্যাপদে' বৌদ্ধ সিদ্ধার্থচার্যদের যে ধর্মমত ও সাধনতত্ত্বের প্রকাশ ঘটেছে তার সংক্ষিপ্ত পরিচয় দাও 

অথবা, চর্যায় বিধৃত ধর্মমত সম্পর্কে একটি নাতিদীর্ঘ নিবন্ধ রচনা কর।

অথবা, চর্যাপদে সিদ্ধাচার্যদের ধর্মমত ও সাধনতত্ত্বের প্রকাশ ঘটেছে তার সংক্ষিপ্ত পরিচয় দাও। অথবা, চর্যার ধর্মদর্শন অথবা অধ্যাত্মতত্ত্ব বিশ্লেষণ কর

চর্যাপদ বিধৃত ধর্মতত্ত্বের পরিচয় দাও
চর্যাপদ বিধৃত ধর্মতত্ত্বের পরিচয় দাও

উত্তর : চর্যার পদগুলো একটি বিশেষ উদ্দেশ্যে রচিত। এগুলো বৌদ্ধ সহজিয়া সাধকদের রচিত আধ্যাত্মিক সাধন সংগীত। পদগুলোর জন্ম সাধকদের বিশিষ্ট ধর্ম ও দার্শনিক বিশ্বাসকে কেন্দ্র করে। তাই চর্যাগীতিকে শুধু সাহিত্যতত্ত্বের দিক দিয়ে বিচার করলে হবে না। এর ধর্মতত্ত্বকে একেবারে বাদ দেওয়া চলবে না। কেননা গানগুলোর সাহিত্য মূল্য খুবই কম, ধর্ম মূল্যই প্রধান। 

চর্যাপদ বৌদ্ধ সহজিয়া সাধক সম্প্রদায়ের গুহ্য সাধক সংকেত বহন করেই আত্মপ্রকাশ করেছিল। "চর্চা' নাম থেকেই বুঝা যায় যে এই পদগুলোতে তত্ত্বের চেয়ে আচরণের দিকটিই বেশি থাকবে। এর কারণ চর্যাকাররা সাধনার বিভিন্ন প্রক্রিয়া এবং সাধনালব্ধ নিগূঢ় উপলব্ধি এ পদগুলোর মধ্য দিয়ে প্রকাশ করেছেন। তবে এসব প্রক্রিয়া ও উপলব্ধিগুলো সূক্ষ্মভাবে পর্যবেক্ষণ করলে দেখা যাবে এগুলোর মাধ্যমে বৌদ্ধধর্মীয় চিন্তাধারায় বিশেষ বিশেষ অভিপ্রায় আর উপলব্ধিই আত্মপ্রকাশ করেছে।

চর্যাপদের ধর্মতত্ত্ব জটিল। এ বিষয়ে পণ্ডিতদের মধ্যে প্রচুর মতভেদ আছে। কারো মতে চর্যার ধর্মতত্ত্ব প্রধানত দার্শনিক মতবাদের উপর প্রতিষ্ঠিত। কেউ বা বলেছেন চর্যার ধর্মতত্ত্বে তন্ত্র ও যোগের উল্লেখ রয়েছে। সাধারণ আলোচনায় দেখা যায়, চর্যার গানগুলোর মূল পটভূমিকা হচ্ছে বৌদ্ধধর্ম। বৌদ্ধধর্মের দার্শনিক ভাবনা দুটি ভাগে বিভক্ত- একটি হলো| মহাযান ও অপরটি হীনযান । 

বুদ্ধদেব তাঁর নিজের ধর্মোপলব্ধিকে কখনো দার্শনিক ব্যাখ্যার অধীন হতে দেননি। তাঁর মৃত্যুর পর বৌদ্ধধর্মের নেতারা মতভেদ হেতু দ্বিধাবিভক্ত হয়ে পড়ে এবং আনুমানিক খ্রিষ্টপূর্ব দ্বিতীয় শতকে মহাযান ধর্মমতের উদ্ভব ঘটে। মহাযানীদের ধর্মাচরণের উদ্দেশ্য শুধু নিজের মুক্তি লাভ নয়, সমগ্র জীবের মুক্তিলাভ এবং এঁদের চূড়ান্ত লক্ষ্যও | অহত্ত্ব লাভ নয়, বোধিসত্তাবস্থা লাভ।

অন্যদিকে, যারা বুদ্ধ নির্দেশিত পথে নির্বাণ সিদ্ধকে সাধনার চরম উদ্দেশ্য বলে মনে করতেন, তারা হীনযান নামে পরিচিত হলো। এঁরা মনে করতেন ধ্যান বা কঠোর আচার অনুষ্ঠানের মাধ্যমে সংসারচক্রের আবর্ত থেকে ব্যক্তিগত মুক্তি তথা অহত্ত্ব লাভই ধর্মাচরণের আসল লক্ষ্য।

হীনযানের শ্রেষ্ঠ প্রয়াস হয়েছিল নির্বাণ লাভের উপায় হিসেবে ধ্যানধারণা ও নৈতিক আচার পদ্ধতির নিষ্ঠাপূর্ণ চর্চার মাধ্যমে অস্তিত্বকে অনস্তিত্বে বিলোপ করার শূন্যতাময় সাধনা। অন্যপক্ষে মহাযানী সাধনপন্থার পরিণামী উদ্দেশ্য, নির্বাণ লাভ অর্থে অনস্তিত্বে বিলুপ্ত হওয়া নয়; বুদ্ধত্ব লাভ। 

মহাযানী দর্শন প্রত্যেক সত্তার মধ্যেই বুদ্ধত্বলাভের সুপ্ত সম্ভাবনাকে স্বীকার করেছে। সেই সম্ভাবিত শক্তির বিভিন্ন বিকাশ পর্যায়ে মহাজ্ঞান আয়ত্ত করে পরিণামী বুদ্ধত্বে প্রতিষ্ঠিত হতে হয়। কিন্তু হীনযানদের দৃষ্টিতে এটি একটি অনস্তিত্বমূলক অবস্থা।

অন্যপক্ষে মহাযানী দর্শনে বুদ্ধত্বের পরিকল্পনা অপেক্ষাকৃত ইতিবাচক। বুদ্ধত্ব অর্থ বোধিচিত্তের অধিকার লাভ। মহাযানী বৌদ্ধদের মতে অরূপ বা শূন্যতা ও করুণা বা প্রেমের মিলনে বোধচিত্ত উৎপন্ন হয়, আর বোধিচিত্ত লাভের মধ্য দিয়ে উপনীত হওয়া যায় বোধিসত্তাবস্থা, তারপর ক্রমে বুদ্ধত্ব লাভ হয়।

ফলে নানা ধরনের লোক মহাযানে প্রবেশ লাভ করে। ফলে মহাযানের রূপান্তর ও রূপবিচিত্রতা দেখা দেয়- দেখা| দেয় পৃথক পন্থা। প্রথম যুগের মহাযান আচার্যরা এই মত প্রকাশ করেছিলেন যে সাধক ছয়টি 'পারমিতা' বা 'দান', ‘ক্ষান্তি’, ‘বীর্য', 'ধ্যান' ও 'প্রজ্ঞা' নামক ছয়টি পরম গুণের অনুশীলন করলেই বোধিসত্তাবস্থাকে স্থায়ী করতে পারেন। 

ছয়টি পারমিতার সঙ্গে আরো, চারটি পারমিতা যুক্ত হয়েছিল- 'উপায়', 'প্রণিধান', 'বল' ও 'জ্ঞান'। কিন্তু পরবর্তীকালে সর্বসাধারণে মহাযান ধর্মে প্রবেশ করলে আচার্যরা সাধারণ মানুষের কথা মনে রেখে বিধান দিলেন যে মন্ত্রশক্তির প্রয়োগেও এই বোধিসত্তাকে স্থায়ী করা যায়।সঅল সমাহিঅ কাহি করিঅই।সুখ দুখেতে নিচিত মরিঅই। এড়িঅউ ছান্দ বাজকরণ কপটের আস। সুনু পথে ভিড়ি লাহরে পাস

মতের প্রতিফলন দেখা যায় চর্যাগীতিকার লুইপাদ, কুক্কুরীপাদ, কাহ্নপাদ ও বিরূপপাদের রচিত পদে। ৪০ সংখ্যক পাস। বজ্রযান সাধন পদ্ধতির অপরিহার্য অঙ্গ শুরু। গুরু নির্দেশিত পথেই তারা মুক্তি অন্বেষায় সাধনা করতো। বজ্রযান কাহ্নপাদের বক্তব্য, জো মন- গোঅর আলাজালা। আগম পোখী ইঠা যালা

আগমন পুথি ইত্যাদি মিথ্যামালা, কারণ যা কিছু মন তথা ইন্দ্রিয়গোচর তাই নিষ্ফল। অন্যদিকে সহজান ইন্দ্রিয়গোচর নয়। কায়বাকচিত্ত যার মধ্যে প্রবেশ করতে পারে না, সেই সহজ স্বরূপকে ব্যাখ্যা করা যায় কিভাবে। অতএব,

আর এজন্য চর্যাকারের নির্দেশ :

জেতই বোলী ভেতৰি টাল ।

গুরু বোব সে সীসা কাল 1 (৪০নং চর্যা)

উত্তুরে উজু ছাড়ি মা লেধু রে বাঙ্ক ।

বিঅড়ি বোহি মা জাহ্নুরে লাফ। (৩২নং চর্যা)

বৌদ্ধধর্মের বিভিন্ন যানের সাথে চর্যাপদের সম্পর্ক আছে। তবে মহাযানের শাখার বিবর্তিত রূপের সাথে চর্যাপদে বিধৃত ধর্মমতের মিল বেশি। সহজযান, মন্ত্রযান, বজ্রযান- সব ধরনের গানের কথাই চর্যাগীতিগুলোতে আছে। আচার্য হরপ্রসাদ শাস্ত্রী চর্যাগীতিকাগুলোকে 'বৌদ্ধ সহজিয়া মতে বাংলা গান' বলে উল্লেখ করেছেন। অধ্যাপক মনীন্দ্রমোহন বসুর মতে চর্যাগুলো সহজিয়া মতের বাহক।

সামগ্রিক আলোচনায় দেখা যাচ্ছে যে, চর্যাকারগণ লৌকিক জগতের বস্তুতে ধর্মীয় প্রতীক হিসেবে গ্রহণ করে গুহ্য গূঢ়ার্থক সংকেত দ্বারা তাঁদের সাধন পদ্ধতির কথা ব্যক্ত করেছেন। চর্যাপদে বিশেষ কোনো খানের সাধন পদ্ধতিকেই বড় করে দেখাননি। মহাযান পন্থার বিভিন্ন বিবর্তিত রূপের পরিচয়ে চর্যাগুলো সমৃদ্ধ ।ফলে 'মন্ত্র', 'মুদ্রা' ও 'মণ্ডল' সংযুক্ত হয়ে তান্ত্রিক বৌদ্ধধর্মের উদ্ভব ঘটে।

এই তান্ত্রিক বৌদ্ধধর্মই কিছুদিনের মধ্যে সাধারণ নাম গ্রহণ করে 'বজ্রযান' নামে পরিচিত হয়। এই বজ্রযানের মধ্যে মন্ত্র, মুদ্রা, মণ্ডল ব্যতীত নানা প্রকার দেবদেবীর পূজা অৰ্চনা, ধ্যানধারণা অন্যান্য তান্ত্রিক ক্রিয়াবিধি, তান্ত্রিক যৌনাচার ও যোগ সাধনা প্রবর্তিত হলো। বজ্রযানদের মতে সর্বশূন্যতার মহাজ্ঞানই নির্বাণ। এই নির্বিকল্পকে তারা মহাজ্ঞান ভাব-সম্ভব বলে কল্পনা করেছেন। 

তার নাম নিয়েছেন। নৈরাত্মা'। 'নৈরাত্মা' হচ্ছে 'দেবী' অর্থাৎ 'নারী' আর 'বোধিচিত্ত', 'দেব' বা 'পুরুষ'। এই 'বোধিচিত্ত' যখন নৈরাত্মায় লগ্ন হয়ে নৈরাত্মাতেই বিলীন হয় তখনই হয় 'মহাসুখ' বা 'আনন্দ' এর উদ্ভব।

বজ্রযানের অন্যতম রূপান্তর সহজযান। সহজিয়াদের সাধনা সম্প্রদায়গত নৈষ্ঠিকতার চেয়ে ব্যক্তিগত আচার উপলব্ধির উপর অধিকতর নির্ভরশীল ছিল। গুরু প্রদর্শিত উপায়ে দেহ সাধনার মধ্য দিয়ে ব্যক্তিগত সিদ্ধিলাভের আকাঙ্ক্ষাই ছিল সহজযানের মধ্যে প্রবল। 

চর্যাপদে এই ব্যক্তিগত উপলব্ধিময় আত্মলীন সিদ্ধির আনন্দই সাহিত্যে রূপলাভ করেছে। চর্যাপদাবলীর প্রামাণ্য থেকে বুঝা যায় মানুষের রূপের মধ্যে যে একটি অরূপ সত্তা রয়েছে শরীরের মধ্যে যে এক অশরীরী রয়েছে তাকে উপলব্ধি করাই ছিল বৌদ্ধ সহজিয়াদের চরম লক্ষ্য। পদকর্তা চাটিলপা বলেছেন,ভবণই গহণ গম্ভীর বেগে বাহী।দুআস্তে চিলি মাঝে ন থাহী ॥ (৫নং চর্যা)

চাটিলের মতে শূন্যতা হলো জ্ঞানবাদী নিবৃত্তির দিক, করুণা হলো কুশলবাদী প্রবৃত্তির দিক- এর যেকোনো একটি ছেড়ে অপরটি আশ্রয় করলেই পরম সত্য থেকে বিচ্যুত হয়ে কাদায় গিয়ে পড়তে হবে। করুণা ও শূন্যতাকে পরস্পর পরস্পরের মাঝে অন্বয়ভাবে যুক্ত করে নিতে পারলেই হবে বোধিচিত্ত লাভ। অতএব, ধামার্থে চাটিল সাক্ষম গঢ়ই। পারগামী লোঅ নীভর তরই ফাড়িঅ মোহতৰু পাৰ্টী জোড়িতা। অদঅদিঢ়ি টাঙ্গি নির্বাণে কোডিঅ ! (৫নং চর্যা)

সহজযানী সাধকরা ছিলেন তন্ত্রনির্ভর। তান্ত্রিকদের মতে দেহের মেরুদও হচ্ছে মেরু পর্বত। এর উত্তরাংশ অর্থাৎ ঊর্ধ্বভাগে রয়েছে সুমেরু এবং কুমেরু হচ্ছে সর্বনিতে। সুমেরুতে সহস্রার এবং কুমেরুতে মূলাধার চক্র অবস্থিত। মূলাধার চক্রে সার্ধ-ত্রিবলিত কুণ্ডলীর মধ্যে কুল কুণ্ডলিনী রূপিনী শক্তি সুষুপ্তা এই নিদ্রিতা শক্তিকে যোগসাধনা দ্বারা জাগাতে হবে এবং সেই সাধনা বলে তাকে ঊর্ধ্বাভিমুখে নিয়ে যেতে হবে- বিভিন্ন চক্র অতিক্রম করে সহস্রারে শিবের সাথে মিলন করতে পারলেই সাধক অদ্বয় সভ্য লাভ করবে।

তান্ত্রিক কায়া সাধনার আর একটি দিক হচ্ছে, দেহের নাড়িকে সংবৃত করে সাধনার পথে অগ্রসর হওয়া। বাম দিকের ইড়া নাড়ি এবং ডান দিকের পিঙ্গলা নাড়ি যথাক্রমে মুক্তি ও শিবরূপে কল্পিত হয়, এদের মধ্যবর্তী হচ্ছে সুমুদ্রা। এই ইড়া পিঙ্গলার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত অপ্রাণ ও প্রাণবায়ুকে যোগসাধনার দ্বারা সুষুম্না নাড়ি পথে চালিত করে সাধক সিদ্ধি লাভ করেন। 

সহজিয়া সাধকেরা মহাসুখ লাভের একই প্রক্রিয়া বর্ণনা করেছেন। মহাযানী বৌদ্ধদের শূন্যতা ও করুণা সহজযানী বৌদ্ধদের প্রজ্ঞা ও উপায়ে পরিণত হয়েছে। এই প্রজ্ঞা ও উপায়ই ললনা ও রসনা নামে পরবর্তী পর্যায়ে ইড়া পিঙ্গলার সঙ্গে অভিন্ন হয়ে গেছে এবং বোধিচিত্ত অবধুতিকারূপে শেষ পর্যন্ত অভিন্ন কল্পিত হয়েছে সুধুদার সাথে। এই ললনা-রসনা- অবধুতিকা নানা বিচিত্র রূপকে চর্যাপদে আত্মপ্রকাশ করেছে।

বৌদ্ধতন্ত্র অনুসারে, ললনা ও রসনার মিলনে যে বোধিচিত্ত উৎপন্ন হয়, নির্মাণকার্যে অবস্থানকালে সে হচ্ছে সংবৃত বোধিচিত্ত— এই বোধিচিত্তের স্বভাব চঞ্চল এবং নিচের দিকে ধাবিত হওয়ার প্রবণতা থাকে তার। যোগ-সাধনা বলে একে ঊর্ধ্বগামী করতে পারলে সে রূপান্তরিত হয় পারমার্থিক বোধিচিত্তে। এই পারমার্থিক বোধিচিত্তই চর্যাপদে সহজ সুন্দরী, নৈরামণি, নৈরাত্মাদেবী প্রভৃতি নামে পরিচিত।

চর্যাগীতিতে যে ধর্ম সাধনার ইঙ্গিত আছে তা প্রধানত এই সহজযান বৌদ্ধধর্মের। এই ধর্মসাধনার সাধন পদ্ধতি সহজ। সহজযানীরা দেবদেবী, মন্ত্র-তন্ত্র, আচার-অনুষ্ঠান, যপতপ কোনো কিছু স্বীকার করে না। তারা বিশ্বাস করে দেশের মধ্যে বৌদ্ধ বা পরমজ্ঞান অবস্থান করেন। তাদের মতে শূন্যতা হলো নারী, আর করুণা হলো পুরুষ। এ উভয়ের মিলনে যে মহাসুখ বা আনন্দ সেটাই চরম সত্য। চর্যাগীতির প্রথম পদে লুইপাদ বলেছেন,

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url
আরও পড়ুনঃ
আরও পড়ুনঃ