হিজরতের কারণ ও ফলাফল আলোচনা কর
আসসালামু আলাইকুম প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকে বিষয় হলো হিজরতের কারণ ও গুরুত্ব আলোচনা কর জেনে নিবো। তোমরা যদি পড়াটি ভালো ভাবে নিজের মনের মধ্যে গুছিয়ে নিতে চাও তাহলে অবশ্যই তোমাকে মনযোগ সহকারে পড়তে হবে। চলো শিক্ষার্থী বন্ধুরা আমরা জেনে নেই আজকের হিজরতের কারণ ও গুরুত্ব আলোচনা করো টি।
হিজরতের কারণ ও ফলাফল আলোচনা কর |
হিজরতের কারণ ও ফলাফল আলোচনা কর
উত্তর : ভূমিকা : বিশ্ব মুসলিম ইতিহাসে হিজরত একটি তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা। যুগে যুগে যারাই ইসলামের আদর্শ প্রচারে আত্মনিয়োগ করেছেন তাদের কেউই নিজ জন্মভূমিতে সমাদৃত হননি। নিজ জন্মভূমিতে তারা হয়েছেন লাঞ্ছিত, উপেক্ষিত আর নির্যাতিত। মানবতার মহান শিক্ষক মহানবি (সা.)-এর জীবনেও এর ব্যতিক্রম হয়নি। কুরাইশদের অত্যাচার নির্যাতনে অতিষ্ঠ হয়ে ৬২২ খ্রিস্টাব্দে মদিনায় হিজরত করে মহানবি (সা.). ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি ঘটান। এই হিজরত ইসলামের ইতিহাসে এক নবযুগের সূচনা ঘটায় ।
— হিজরতের কারণসমূহ : হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর হিজরতের পেছনে অনেকগুলো কারণ নিহিত ছিল। নিম্নে হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর মক্কা থেকে মদিনায় হিজরতের চারটি কারণ আলোচনা করা হলো :
১. প্রাকৃতিক প্রভাব : অনুর্বর ও পর্বতময় মক্কার অধিবাসীরা শুষ্ক জলবায়ু ও উষ্ণ আবহাওয়ার জন্য বদমেজাজী, জড়বাদী ও রুক্ষ স্বভাবের ছিল। অপরদিকে মদিনার সুশীতল স্বাস্থ্যকর আবহাওয়া ও শস্য-শ্যামলা ভূমি অধিবাসীদেরকে মার্জিত, দয়ালু, পরোপকারী ও নম্রস্বভাবী রূপে গড়ে তোলে। ফলে মদিনায় আল্লাহর একত্ববাদ প্রচার করা মহানবির (সা.) পক্ষে খুব সহজ হয়।
২. মনস্তাত্ত্বিক কারণ : বিশ্ব ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায় যে, মহাপুরুষগণ তার নিজ দেশেই সবচেয়ে বেশি বিরোধিতার সম্মুখীন হন। মহানবির ক্ষেত্রেও এর ব্যতিক্রম ঘটেনি। তাই মক্কায় যখন তার প্রতি নির্যাতন ও বিরোধিতা চরম আকার ধারণ করে, তখন তিনি মদিনায় হিজরত করেন। হিজরতের একটি প্রধান কারণ ছিল মনস্তাত্ত্বিক কারণ ।
৩. কৌলীন্য ও আভিজাত্য : আভিজাত্য ও কৌলীন্য প্রথা রক্ষণশীল বিধর্মী কুরাইশদের মধ্যে এরূপ মজ্জাগত ছিল যে, ইসলামের সাম্য ও শান্তির বাণীতে এই প্রথা ছিন্নভিন্ন হওয়ার উপক্রম হয়। ফলে অভিজাত শ্রেণি মহানবিকে সহ্য করতে পারেনি। সৈয়দ আমীর আলী যথার্থই বলেন, “পূর্বতন বৈষম্য দূরীভূত করিয়া সকলকে সমান অধিকার প্রদান তাদের রীতিনীতি বিরুদ্ধ ছিল”
৪. কুরাইশদের নির্যাতন : হিজরতের একটি অন্যতম কারণ ছিল কুরাইশদের নির্যাতন। মক্কায় প্রকাশ্য ইসলাম প্রচার করায় এবং ইসলামের প্রতিপত্তি বৃদ্ধিতে নিজেদের স্বার্থহানীর আশংকায় কুরাইশরা মহানবির উপর চরম নির্যাতন চালায়। ফলে তিনি হিজরত করতে বাধ্য হন ।
৮. আত্মীয়তার সম্পর্ক : পিতা আব্দুল্লাহ ও প্রপিতামহ হাসিম মদিনায় বিবাহ করেছিলেন। এই সম্পর্কের কারণেই মদিনাবাসী মহানবির প্রতি ছিল সহৃদয় ও আন্তরিক। এছাড়া মাতৃকূলের দিক দিয়ে মদিনার সাথে মহানবির আত্মিক সম্পর্ক তার মদিনায় হিজরতের অন্যতম কারণ।
৬. মুসাবের অনুকূল রিপোর্ট : মদিনাবাসীর আমন্ত্রণে মহানবি (সা.) হিজরতের পূর্বে তার সহচর মুসাবকে মদিনার পরিবেশ সম্পর্কে ধারণা নেওয়ার জন্য নির্দেশ দেন। মুসাব মদিনার ব্যাপারে অনুকূল রিপোর্ট দিলে মহানবি হিজরত করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, হিজরতের পর থেকে ইসলামের প্রচার ও প্রসার প্রতিনিয়ত বৃদ্ধি পেতে থাকে এবং ইসলামের ইতিহাসের এক নতুন যুগের সূচনা করে। সুতরাং একথা নিঃসন্দেহে বলা যায়, হিজরত হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর জীবনের সফলতার চাবিকাঠি এবং আদর্শ বাস্তবায়নের সহায়ক।
আর্টিকেলের শেষকথাঃ হিজরতের কারণ ও গুরুত্ব আলোচনা কর
আমরা এতক্ষন জেনে নিলাম হিজরতের কারণ ও ফলাফল আলোচনা কর টি। যদি তোমাদের আজকের এই পড়াটিটি ভালো লাগে তাহলে ফেসবুক বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারো। আর এই রকম নিত্য নতুন পোস্ট পেতে আমাদের আরকে রায়হান ওয়েবসাইটের সাথে থাকো।