জ্ঞানবিজ্ঞানের পৃষ্ঠপোষক হারুন অর রশীদের কৃতিত্ব মূল্যায়ন কর

আসসালামু আলাইকুম প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকে বিষয় হলো জ্ঞানবিজ্ঞানের পৃষ্ঠপোষক হারুন  অর রশীদের কৃতিত্ব মূল্যায়ন কর জেনে নিবো। তোমরা যদি পড়াটি ভালো ভাবে নিজের মনের মধ্যে গুছিয়ে নিতে চাও তাহলে অবশ্যই তোমাকে মনযোগ সহকারে পড়তে হবে। চলো শিক্ষার্থী বন্ধুরা আমরা জেনে নেই আজকের জ্ঞানবিজ্ঞানের পৃষ্ঠপোষক হারুন অর রশীদের কৃতিত্ব মূল্যায়ন কর ।

জ্ঞানবিজ্ঞানের পৃষ্ঠপোষক হারুন অর রশীদের কৃতিত্ব মূল্যায়ন কর
জ্ঞানবিজ্ঞানের পৃষ্ঠপোষক হারুন অর রশীদের কৃতিত্ব মূল্যায়ন কর

জ্ঞানবিজ্ঞানের পৃষ্ঠপোষক হারুন অর রশীদের কৃতিত্ব মূল্যায়ন কর

উত্তর : ভূমিকা : বিশ্বের ইতিহাসে হারুন-অর-রশিদ সর্বশ্রেষ্ঠ সম্রাট। তিনি শুধু বিপুল ঐশ্বর্য, বিদ্রোহ দমন এবং উন্নতমানের জীবনযাত্রার জন্য বিখ্যাত ছিলেন না। জ্ঞানবিজ্ঞানের উৎকর্ষ সাধনে যে অবদান রেখেছিলেন সে জন্য বিশ্বের ইতিহাসে উজ্জ্বল হয়ে রয়েছে। মধ্যযুগে তার রাজত্বকাল ইসলামি সভ্যতা এবং সংস্কৃতি বিকাশে এক বিরাট সাক্ষ্য। তিনি জ্ঞানবিজ্ঞান, সাহিত্য, কাব্য ও সংগীত প্রভৃতির পৃষ্ঠপোষক ছিলেন এবং জ্ঞানবিজ্ঞান তথা সার্বিক উন্নতির জন্য প্রচুর অর্থ ব্যয় করেছিলেন ।

 তার রাজ দরবারে বহু জ্ঞানী, গুণী ও পণ্ডিত ব্যক্তির সমাগম ছিল। তার সময় বিভিন্ন বিদেশি গ্রন্থ আরবি ভাষায় অনুবাদ করা হয়েছিল। তাছাড়া বিভিন্ন গ্রন্থ ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেছিলেন। এভাবে তিনি বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে জ্ঞানবিজ্ঞান, সাহিত্য ও শিল্পের ব্যাপক উন্নতি সাধন করে ইতিহাসে চির স্মরণীয় হয়ে আছেন।

→ জ্ঞানবিজ্ঞানের পৃষ্ঠপোষক হিসেবে হারুন-অর-রশিদের কৃতিত্ব : খলিফা হারুন-অর-রশিদের সময়ে জ্ঞানবিজ্ঞানের ব্যাপক উৎকর্ষ সাধিত হয় । নিম্নে জ্ঞানবিজ্ঞানের ক্ষেত্রে হারুনের কৃতিত্ব আলোচনা করা হলো ”

১. জ্ঞানবিজ্ঞান ও সাহিত্য চর্চার দ্বার উন্মোচন : আব্বাসীয় সিংহাসনে অধিষ্ঠিত হওয়ার পর বিভিন্ন বিদ্রোহ দমন এবং রাজ্যের সংহতি বিধানের পর জ্ঞানবিজ্ঞান ও সাহিত্য চর্চার দ্বার খুলে দেন। তার রাজপ্রাসাদ ছিল জ্ঞানী-গুণী লোকদের তীর্থস্থান। ফলে বিভিন্ন দেশের কবি, সাহিত্যিক, বিজ্ঞানীরা তার রাজ দরবার অলংকৃত করেছিলেন।

 বিজ্ঞানী, দার্শনিক, কবি, সাহিত্যিক প্রমুখের সাহায্যে বাগদাদকে জ্ঞানভান্ডার রূপে গড়ে তুলেছিলেন। তাছাড়া বিভিন্ন স্কুল, কলেজ, মাদরাসা, মসজিদ প্রতিষ্ঠা করে ধর্মতত্ত্বসহ বিজ্ঞান ভিত্তিক শিক্ষা প্রদান করা হতো । তার প্রচেষ্টায় এ যুগ সমগ্র ইসলামের ইতিহাসে একটি গৌরবোজ্জ্বল যুগের সূচনা করেছিল।

২. জ্ঞানবিজ্ঞান ও শিল্পের পৃষ্ঠপোষক : হারুন-অর-রশিদ জ্ঞানবিজ্ঞান ও শিল্পের একনিষ্ঠ পৃষ্ঠপোষক ছিলেন। তিনি কবি, সাহিত্যিক, বিজ্ঞানী ও দার্শনিকদের তার সভায় আমন্ত্রণ করতেন। ফলে খলিফার পৃষ্ঠপোষকতায় জ্যোতির্বিদ্যা, চিকিৎসাশাস্ত্র, শিক্ষাদীক্ষা, সংগীত, স্থাপত্য, ধর্মতত্ত্ব ও দর্শন প্রভৃতি তার সময়ে ব্যাপক উৎকর্ষ লাভ করে । তার রাজ দরবার ছিল জ্ঞানীদের মিলন কেন্দ্র ।

৩. শিক্ষা ও সংস্কৃতির প্রসার : খলিফা হারুন-অর-রশিদের সময়ে শিক্ষা ও সংস্কৃতির ব্যাপক প্রসার ঘটেছিল। সে সময় অসংখ্য স্কুল, কলেজ, বিদ্যালয়, মসজিদ প্রভৃতি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান | স্থাপন করা হয়েছিল। এ সমস্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বিভিন্ন পণ্ডিত | ব্যক্তিবর্গ শিক্ষা প্রদান করতেন। ফলে ক্রমাগত ছাত্র সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছিল। কবি, সাহিত্যিক, সংগীতজ্ঞ প্রমুখ তার রাজত্বকালকে অমরত্ব দান করে । 

সে সময়ের বিখ্যাত গায়ক ও সরকার ছিলেন ইব্রাহিম আল মাওসিলি, সিয়াত এবং ইবনের জামি প্রমুখ। হারুন নিজেও কবি ছিলেন। তাছাড়া বিখ্যাত লম্পট কবি আবু-নুওয়াস একসঙ্গে রশিদের অন্তরঙ্গ সম্পর্ক ছিল। এ থেকেই বুঝা যায়, তার সময়ে শিক্ষা ও সংস্কৃতির বিকাশ ঘটেছিল।

৪. জ্ঞানী-গুণী ও কবি-সাহিত্যিকদের সমাদর : খলিফা জ্ঞানী-গুণী ও কবি-সাহিত্যিকদের পৃষ্ঠপোষকতা করতেন। তিনি তার রাজ্যের জ্ঞানী-গুণী ও কবি-সাহিত্যিকদের খুব বেশি কদর করতেন। তার রাজদরবার বিজ্ঞানী, দার্শনিক, ধর্মতত্ত্ববিদ, শিল্পী দ্বারা অলংকৃত হয়েছিল।

 তিনি নিজেও সুপরিচিত কবি ছিলেন। তিনি তার প্রেমিকা জৈনিক রোমান ধর্মযাজকের কন্যা হেলেনের উদ্দেশ্যে বহু কবিতা রচনা করেছিলেন। তাছাড়া তিনি বহু কবি ও সাহিত্যিকদের পুরস্কৃত করেছিলেন। হারুনের উদ্দেশ্যে রচিত একটি কাসিদার জন্য মারওয়ান ইবনে আবিহাফসাকে তিনি প্রচুর ধন সম্পদ দ্বারা পুরস্কৃত করেছিলেন।

৫. চিকিৎসা-শাস্ত্রে অবদান : খলিফা হারুন অর-রশিদের এর সময়ে চিকিৎসা শাস্ত্রে উন্নতি ঘটেছিল। তার আমলে চিকিৎসা বিজ্ঞানের চর্চার যুগ শুরু হয়। খলিফা চিকিৎসা পদ্ধতির উন্নতির জন্য সাম্রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে চিকিৎসা বিদ্যালয় ও হাসপাতাল স্থাপন করেছিলেন। এ সময় চিকিৎসা বিজ্ঞানের উপর বহু গ্রন্থ রচিত হয়েছিল। হারুন সে সময় জনগণের কল্যাণের জন্য বাগদাদে একটি হাসপাতাল নির্মাণ করেন।

 এই হাসপাতালের প্রধান ছিলেন জুরজী ইবনে বকতিয়াও। তিনি এই হাসপাতালের চিকিৎসা পদ্ধতির উন্নতির জন্য প্রচুর অর্থ প্রদান করতেন। ফলে সে সময় বহু মূল্যবান ঔষধ আবিষ্কৃত হয়েছিল। সার্বিক বিচারে তার সময়ে চিকিৎসা শাস্ত্রে চরম উৎকর্ষ সাধিত হয়েছিল।

৬. হাদিস ও বিভিন্ন গ্রন্থ সংরক্ষণ : তার রাজত্বকালে হাদিস চর্চাসহ বিভিন্ন গ্রন্থ রচিত হয়। হাদিস ও এ সমস্ত গ্রন্থ সংরক্ষণে খলিফা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন। মূলত হারুনের পৃষ্ঠপোষকতায় এটা সম্ভব হয়েছিল। ফলে মুসলিম সমাজের সংস্কৃতি, ঐতিহ্য, রীতিনীতি ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা পেয়েছিল।

 এ সম্পর্কে ঐতিহাসিক সপুলার বলেন, “শিয়াসম্প্রদায়ের পরিবর্তে তারাই রসুল (সা.) এর হাদিস সংরক্ষণে এবং মুসলিম সমাজকে ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করেছে।” তাই হাদিস সংরক্ষক হিসেবে তার কৃতিত্ব অতুলনীয় ।

৭. হাদিস শাস্ত্রের চর্চা : খলিফা হারুন-অর-রশিদের সময়ে হাদিসের ব্যাপক চর্চা শুরু হয়। বিভিন্ন মসজিদ ও মাদরাসায় গুরুরা ছাত্রদের শিক্ষা প্রদান করতেন। তার সময়ে ইমাম বুখারী (রহঃ) ছিলেন বিখ্যাত মুহাদ্দেস। তিনি খলিফার সাহচর্যে অসংখ্য হাদিস সংগ্রহ করেছিলেন। তাছাড়া অসংখ্য ব্যক্তি তার পৃষ্ঠপোষকতায় অসংখ্য হাদিস গ্রন্থ সংকলন করেছিলেন। ফলে তার সময়ে হাদিস চর্চার এক নব দিগন্তের সূচনা হয়েছিল ।

৮. হানাফি স্কুলের উৎকর্ষ : খলিফা হারুন অর রশিদ প্রধান কাজী আবু ইউসুফের নেতৃত্বে এ সময় সুন্নি সম্প্রদায়ভুক্ত হানাফি স্কুল চরম উৎকর্ষ লাভ করেছিল। আমীর আলী বলেন, “হানাফি ধর্মবিধি আবু হানিফার নামানুসারে নামকরণ করা হলেও প্রকৃত পক্ষে এটা রশিদের প্রধান বিচারপতি আবু ইউসুফের সৃষ্টি বিশেষ।” তাই হানাফি স্কুল ও ধর্ম প্রতিষ্ঠায় হারুনের কৃতিত্ব অপরিসীম ।

৯. ধর্মতত্ত্বের উন্নতি সাধন : খলিফা হারুন অর রশিদ একজন ধার্মিক শাসক ছিলেন। তার সময়ে মুসলিম ধর্মতত্ত্বের ব্যাপক উন্নতি ও প্রসার ঘটেছিল। তার সময়ে বিশ্ববিখ্যাত ধর্মতত্ত্ববিদের আবির্ভাব ঘটেছিল। এ সময়ে ধর্মতত্ত্বে যারা অসাধারণ জ্ঞানার্জন করেছিলেন এবং কুরআন বিষয়ে সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা প্রদান করেছিলেন তাদের মধ্যে  ইমাম আবু হানিফা, মুসা আল কাজিম, শাফেয়ী, হাম্মাদ, আবু ইউসুফ, সুফিয়ান, ইবনে উবাইনা প্রমুখ ছিলেন বিখ্যাত। তাই হারুন সে সমস্ত ধর্মতত্ত্ববিদকে ব্যাপক পৃষ্ঠপোষকতা দান করেছিলেন ।

১০. অনুবাদ বিভাগ স্থাপন : খলিফা হারুন অর রশিদের `সময় অনুবাদ বিভাগ স্থাপন করা হয়েছিল। মূলত তিনি পিতামহ আল মনসুর কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত অনুবাদ বিভাগের সম্প্রসারণ করেছিলেন। বিভিন্ন ভাষায় লিখিত বিখ্যাত বইগুলো এই অনুবাদ | বিভাগ আরবি ভাষায় অনুবাদ করতো। এই অনুবাদ বিভাগের প্রধান | গ্রন্থাগারিক ছিলেন ফজল ইবনে নওকত। 

তিনি জ্যোতিষশাস্ত্রের | উপর লিখিত অনেক বই আরবি ভাষায় অনুবাদ করেছিলেন। তার সময়ে গুরুত্বপূর্ণ অনুবাদ ছিল ইউক্লিডের এলিমেন্ট এবং টলেমির আল মাজেস্ট গ্রন্থসমূহ। তাছাড়া জ্যোতির্বিদ্যা, চিকিৎসাশাস্ত্র এবং অঙ্ক বিষয়ে বিভিন্ন পুস্তক আরবি ভাষায় অনুবাদ করা হয়েছিল। তাছাড়া বিখ্যাত অনুবাদক ছিলেন হাজ্জাজ ।

১১. আরব্য উপন্যাসের সংকলন : হারুন অর রশিদ ছিলেন। আরব্যোপন্যাসের নায়ক। তিনি আরব্য উপন্যাসের সর্বশ্রেষ্ঠ রোমাঞ্চকর ব্যক্তিত্ব। বাগদাদ ছাড়া যেমন হারুন অসম্পূর্ণ তেমনি হারুন ছাড়া আরব্যোপন্যাস অজ্ঞাত। তাছাড়া তার সময়ে বহু উপান্যাস রচিত ও সংকলিত হয়। 

এ সম্পর্কে ঐতিহাসিক সপুলার বলেন, “এক সহস্র রজনী নামে আরব, পারস্য এবং ভারতীয় উপখ্যান সংবলিত কাহিনীর তিনিই অন্যতম প্রধান উপলক্ষ ছিলেন, যা তার আমলে সংগৃহীত হতে থাকে এবং বা মিশরে চতুর্দশ পঞ্চদশ শতকের পূর্বে সম্পূর্ণভাবে সংকলিত হয়নি। এভাবে তিনি তার যুগকে সংকলনের যুগে পরিণত করেছিলেন ।

১২. সঙ্গীত ও নৃত্য চর্চা : খলিফা হারুন অর রশিদের সময় সঙ্গীত ও নৃত্য চর্চার ব্যাপক প্রসার ঘটেছিল। খলিফা হারুন অর রশিদ এবং তার উত্তরাধিকারী খলিফাদের চুম্বকের মতোই আকর্ষণ ছিল সঙ্গীত, গায়ক, গায়িকা, নর্তকি এর প্রতি। এ সময় নৃত্য ও সংগীত চর্চায় মুখরিত ছিল রাজদরবার। অসংখ্য বেতন ভোগী গায়ক- গায়িকা ছিল। হারুনের যুগে বিখ্যাত গায়ক ও সুরকার ছিলেন ইবরাহীম আল মাওসিলি, সিয়াত এবং ইবনে জামি। 

তবে সর্বশ্রেষ্ঠ সঙ্গীতজ্ঞ ছিলেন ইবরাহীম আল মাওসিলি। যার সংগীতে মুগ্ধ হয়ে খলিফা ১৫,০০০ দিরহাম পুরস্কার দেন এবং মাসিক ১০,০০০ দিরহাম বেতন প্রদান করতেন। তাছাড়া অসংখ্য সুন্দরী নর্তকি রাজদরবারে নৃত্যে অংশগ্রহণ করতো এবং চা অব্যাহত রাখত ।খলিফা হারুন অর রশিদ

১৩. স্কুল ও মাদরাসা নির্মাণ : শিক্ষার সম্প্রসারণ এবং শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়নে অসংখ্য স্কুল ও মাদরাসা প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। এসমস্ত প্রতিষ্ঠান ধর্মতত্ত্ব, দর্শন ও বিজ্ঞানভিত্তিক শিক্ষা প্রদান করা হতো। খলিফা তার পুত্রদের উন্মুক্ত শিক্ষা প্রদানের জন্য বিখ্যাত ব্যাকরণবিদ আসমাকে নিযুক্ত করেছিলেন। এ সমস্ত প্রতিষ্ঠানে বিভিন্ন বিজ্ঞানভিত্তিক অনুবাদ গ্রন্থ পড়ানো হতো। 

তার পৃষ্ঠপোষকতায় আবু ইউসুফ “কিতাবুল খারাজ” নামে একটি রাজত্ব বিষয়ে গ্রন্থ রচনা করেছিলেন। খলিফা জ্ঞানবিজ্ঞানের উপর প্রচুর গ্রন্থ সংগ্রহ করেছিলেন। ফলে এ সময় শিক্ষা ও জ্ঞানবিজ্ঞানের প্রসার ঘটেছিল।

১৪. ইতিহাস ও আইনশাস্ত্র চর্চা: খলিফা হারুন-অর-রশিদের আমলে ইতিহাস ও আইন শাস্ত্র চর্চার সূচনা হয়েছিল। লৌকিক উপাখ্যান, প্রাক-ইসআমিক আরবের কাহিনী ও হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর জীবন বৃত্তান্তই আব্বাসীয় ইতিহাস চর্চার প্রাথমিক বিষয়বস্তু ছিল। এভাবে হারুনের যুগে ইতিহাস চর্চার সূত্রপাত হয়। পরবর্তীতে ইতিহাস চর্চা ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পেয়েছিল। 

তাছাড়া হারুন আইন শাস্ত্র চর্চার পৃষ্ঠপোষক ছিল। তার শাসনব্যবস্থা মূলত কোরআন হাদিসের উপর প্রতিষ্ঠিত ছিল। এতেই প্রমাণ পাওয়া যায় যে, আব্বাসীয় আইনের ভিত্তি ছিল হাদিস ও কোরআন। এভাবে তার সময় আইন শাস্ত্র চর্চাও বৃদ্ধি পেয়েছিল।.

উপসংহার : উপরিউক্ত আলোচনার প্রেক্ষিতে বলা যায় যে, খলিফা হারুন-অর রশিদের আমলে জ্ঞানবিজ্ঞান, কাব্য ও সাহিত্যের চরম উৎকর্ষ সাধিত হয়েছিল। খলিফা জ্ঞানী-গুণী, পণ্ডিত, কবি, সাহিত্যিকদের একনিষ্ঠভাবে পৃষ্ঠপোষকতা করতেন। এমনকি তার রাজ দরবারে অনেক জ্ঞানী-গুণী পণ্ডিতদের নিয়ে সভা বসাতেন। জ্ঞানবিজ্ঞানের উৎকর্ষের জন্য অসংখ্য স্কুল, কলেজ, মাদরাসা ও মসজিদ নির্মাণ করেছিলেন। 

ফলে চিকিৎসাশাস্ত্র, কাব্য, ইতিহাস, আইনশাস্ত্র এবং সংগীত চর্চার ব্যাপক প্রসার ঘটে। তাছাড়া তার আমলে বিভিন্ন গ্রন্থ সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছিল। উপন্যাস সংকলন এবং অনুবাদ বিভাগ প্রতিষ্ঠা জ্ঞানবিজ্ঞান চর্চার ক্ষেত্রে নতুন মাত্র সংযোজন করেছিলেন। তাই ঐতিহাসিক Philip K. Hitti বলেছেন-"এ যুগ পৃথিবীর ইতিহাসকে সে কারণে গৌরবোজ্জ্বল করেছে। তা হচ্ছে এ আমলে ইসলামের ইতিহাসে জ্ঞানবিজ্ঞানের ক্ষেত্রে সর্বাপেক্ষা অধিকতর উৎকর্ষ সাধিত হয়।"

আর্টিকেলের শেষকথাঃ জ্ঞানবিজ্ঞানের পৃষ্ঠপোষক হারুন অর রশীদের কৃতিত্ব মূল্যায়ন কর

আমরা এতক্ষন জেনে নিলাম জ্ঞানবিজ্ঞানের পৃষ্ঠপোষক হারু অর রশীদের কৃতিত্ব মূল্যায়ন কর । যদি তোমাদের আজকের এই পড়াটিটি ভালো লাগে তাহলে ফেসবুক বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারো। আর এই রকম নিত্য নতুন পোস্ট পেতে আমাদের আরকে রায়হান ওয়েবসাইটের সাথে থাকো। 

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url
আরও পড়ুনঃ
আরও পড়ুনঃ