খলিফা আল মাহদীর শাসনকাল আলোচনা কর

 আসসালামু আলাইকুম প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকে বিষয় হলো খলিফা আল মাহদীর শাসনকাল আলোচনা কর জেনে নিবো। তোমরা যদি পড়াটি ভালো ভাবে নিজের মনের মধ্যে গুছিয়ে নিতে চাও তাহলে অবশ্যই তোমাকে মনযোগ সহকারে পড়তে হবে। চলো শিক্ষার্থী বন্ধুরা আমরা জেনে নেই আজকের খলিফা আল মাহদীর শাসনকাল সম্পর্কে বর্ণনা দাও ।

খলিফা আল মাহদীর শাসনকাল আলোচনা কর
খলিফা আল মাহদীর শাসনকাল আলোচনা কর

খলিফা আল মাহদীর শাসনকাল আলোচনা কর

  •  অথবা, খলিফা আল মাহদীর শাসনকাল সম্পর্কে বর্ণনা দাও ৷
  • অথবা, খলিফা আল মাহদীর রাজত্বকাল আলোচনা কর।

 উত্তর : ভূমিকা : আব্বাসীয় বংশের দ্বিতীয় খলিফা খলিফা আবু জাফর আল মনসুর তার নিজের পুত্র মুহাম্মদকে আল মাহদী নামে ভূষিত করে ক্ষমতায় বসান। 

আল মাহদী ছিলেন আব্বাসীয় বংশের তৃতীয় খলিফা। আব্বাসীয় শাসনের মধ্যে তার শাসনামলেই সবচেয়ে শান্তি বিরাজ করে। তার শাসনামলে তিনি অত্যন্ত দক্ষতার পরিচয় দিয়ে থাকেন।

→ খলিফা আল মাহদীর শাসনকাল : খলিফা আল মাহদী ছিলেন শাসক হিসেবে খুবই ভদ্র, উদার, ক্ষমাশীল ও সহিষ্ণু। তবে রাষ্ট্রের নিরাপত্তার জন্য তিনি কঠোরতাও অবলম্বন করতেন। নিম্নে তার শাসনামল সম্পর্কে আলোচনা করা হলো-

১. উদার শাসননীতি : শাসক হিসেবে আল মাহদী ছিলেন অত্যন্ত উদার একজন শাসক। তিনি শাসনের ক্ষেত্রে কঠোরতার পরিবর্তে উদারতার আশ্রয় নেন। 

প্রজাবৎসল ও মহানুভব খলিফা হিসেবে তিনি অন্যায়ভাবে কারারুদ্ধ ব্যক্তিদের মুক্তি দান করেন। তার শাসনামলে তিনি হিজাসীদের অর্থাৎ মক্কা ও মদিনার অধিবাসীদের ৩ কোটি দিরহাম বিতরণ করেন।

২. সামাজিক উন্নতিতে আল মাহদী : তিনি শুধু একজন শাসকই নন, বরং একজন সমাজ নির্মাতাও। তিনি তার সাম্রাজ্যের বহু জায়গায় মাদ্রাসা ও মসজিদ নির্মাণ করেন। 

পুরাতন প্রতিষ্ঠানগুলোকে সংস্কার করেন। তিনি পারস্যের কাদেরিয়া থেকে আবু উপদ্বীপের জাবালা পর্যন্ত নির্মিত রাস্তার দুপাশে সরাইখানা নির্মাণ করেন।

৩. ভণ্ড নবি দমন : আল মাহদী ক্ষমতায় থাকাকালীন সময়ে | ধর্মভ্রষ্ট হাশিম বিন হাকিম খোরাসানে বিদ্রোহ করে। খর্বাকৃতি ও  কদাকার হাশিম সর্বদা মুখ আচ্ছাদিত রাখতো যার জন্য তাকে | অবগুণ্ঠনাবৃত নবি বলে অভিহিত করা হতো। সে নিজেকে নবি বলে দাবি করতো। তাই খলিফা তার বিরুদ্ধে সেনা প্রেরণ করেন ।

৪. বিদ্রোহ দমন : খলিফা আল মাহদী ছিলেন অনেক শান্ত ও উদার একজন শাসক। কিন্তু বিশৃঙ্খলা কিংবা সাম্রাজ্যের নিরাপত্তার ক্ষেত্রে তিনি কঠোরতা অবলম্বন করতেন। তাই তিনি তার সময়ে ঘটে যাওয়া অনেক বিদ্রোহ সুন্দরভাবে দমন করতে সক্ষম হন ৷

৫. আলী পন্থিদের দমন : আলীপন্থি মুহাম্মদ ও ইব্রাহীমকে আবু জাফর আল আসাদ হত্যা করলেও তাদেরকে সমূলে ধ্বংস করতে পারেননি। আল মাহদীর শাসনামলে আলীপন্থি প্রধান উজির ইয়াকুব ইবন দাউদ আব্বাসীয় শাসনের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করলে তাকে বন্দি করা হয়।

৬. বাইজান্টাইনদের সাথে যুদ্ধ : পূর্বে স্বাক্ষরিত চুক্তি ভেঙে বাইজান্টাইনগণ মুসলিম সাম্রাজ্যে লুটতরাজ শুরু করলে আল মাহদী তার পুত্র হারুনকে সমরাভিযানে প্রেরণ করেন।

৭৮৪ সালে বাইজান্টাইন সম্রাজ্ঞী আইরিন বাৎসরিক বিপুল কর দানে স্বীকৃত হয়ে যুবরাজ হারুনের সাথে সন্ধি করেন। পরবর্তীতে তিনি তার পুত্রকে অর-রশীদ বা ন্যায়নিষ্ঠ উপাধি প্রদান করেন।

৭. সংবাদকর্মী নিয়োগ : শাসনকার্য সুন্দরভাবে পরিচালনার স্বার্থে খলিফা আল মাহদী সংবাদকর্মী নিয়োগ করেন। তিনি 'আমিন' নামক কর্মচারী নিযুক্ত করে দূর-দূরাঞ্চলের সংবাদ আরোহণ করতেন।

৮. জনহিতকর কার্যাবলি পালন : খলিফা আল মাহদী ছিলেন প্রজাবৎসল শাসক। তিনি বহু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান স্থাপন করেন। তিনি পারস্যের কাদেরিয়া থেকে আরব উপদ্বীপের জাবালা পর্যন্ত নির্মিত রাস্তার দুইপাশে সরাইখানা নির্মাণ ও নিরাপত্তার জন্য প্রহরীর ব্যবস্থা করেন।

৯. ন্যায়বিচার নিশ্চিতকরণ : আল মাহদী পিতা আল মনসুর কঠোর রক্তপাত নীতিতে বিশ্বাসী ছিলেন। অপরদিকে তার পুত্র আল মাহদী কঠোর রক্তপাত নীতি পরিত্যাগ করেন। তিনি বিদ্রোহ দমন করার জন্য খুব বেশি নিষ্ঠুরতার পরিচয় দেননি। 

আল মাহদী গুরুতর বিদ্রোহীদের সঙ্গেও অত্যন্ত সহনশীলতার পরিচয় দিয়েছেন। কেউ গুরুতর অপরাধ করলে তাকে বন্দি করে রাখতেন কিন্তু তিনি কখনো কাউকে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত করেননি। সাম্রাজ্যে শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য বিদ্রোহীদের প্রতি উদারতা দেখিয়েছেন।

উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, আব্বাসীয় খেলাফতের সময়ে সবচেয়ে শান্তিপূর্ণ সময় ছিল আল মাহদীর শাসনামল। তিনি তার দশ বছরের শাসনামলে সাম্রাজ্য সুসংহত ও সুসমৃদ্ধ করে তৈরি করেন। তিনি বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে বর্বরতা অবলম্বন করলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় কখনোই অতিরিক্ত ছিল না। তার শাসনকাল আব্বাসীয় খেলাফতকালে সবচেয়ে শান্তিপূর্ণ শাসন হিসেবে খ্যাতি অর্জন করে ।

আর্টিকেলের শেষকথাঃ খলিফা আল মাহদীর শাসনকাল সম্পর্কে বর্ণনা দাও

আমরা এতক্ষন জেনে নিলাম খলিফা আল মাহদীর রাজত্বকাল আলোচনা কর। যদি তোমাদের আজকের এই পড়াটিটি ভালো লাগে তাহলে ফেসবুক বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারো। আর এই রকম নিত্য নতুন পোস্ট পেতে আমাদের আরকে রায়হান ওয়েবসাইটের সাথে থাকো।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url
আরও পড়ুনঃ
আরও পড়ুনঃ