গবেষণা প্রতিবেদন লেখার প্রচলিত রীতি সমূহ আলোচনা কর

আসসালামু আলাইকুম প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকে বিষয় হলো গবেষণা প্রতিবেদন লেখার প্রচলিত রীতি সমূহ আলোচনা কর জেনে নিবো। তোমরা যদি পড়াটি ভালো ভাবে নিজের মনের মধ্যে গুছিয়ে নিতে চাও তাহলে অবশ্যই তোমাকে মনযোগ সহকারে পড়তে হবে। চলো শিক্ষার্থী বন্ধুরা আমরা জেনে নেই আজকের প্রতিবেদন লিখনের প্রচলিত রীতিগুলো বর্ণনা কর।

গবেষণা প্রতিবেদন লেখার প্রচলিত রীতি সমূহ আলোচনা কর
গবেষণা প্রতিবেদন লেখার প্রচলিত রীতি সমূহ আলোচনা কর

গবেষণা প্রতিবেদন লেখার প্রচলিত রীতি সমূহ আলোচনা কর

  • অথবা, প্রতিবেদন লিখনের প্রচলিত রীতিগুলো বর্ণনা কর ।
  • অথবা, গবেষণা প্রতিবেদন লিখনের রীতিনীতি উল্লেখ কর ।

উত্তর ভূমিকা : আধুনিক সমাজব্যবস্থায় গবেষণাকর্ম কিংবা অন্য যেকোনো গুরুত্বপূর্ণ কাজের জন্য প্রতিবেদন তৈরি করতে হয়। সমাজে বিদ্যমান নানাবিধ ঘটনাবলির প্রেক্ষিতে প্রতিনিয়ত বিভিন্ন আঙ্গিকে বিভিন্ন ধরনের প্রতিবেদন তৈরি হচ্ছে। 

গবেষণা প্রতিবেদনে গবেষণার সম্পূর্ণরূপে বহিঃপ্রকাশ ঘটে। গবেষণার ক্ষেত্রে প্রতিবেদন তৈরি অত্যন্ত তাৎপর্যের সাথে বিবেচিত হয়। গবেষণার পূর্ণতা প্রকাশ পায় প্রতিবেদন লেখার মধ্য দিয়ে। 

প্রত্যেক গবেষককে তার গবেষণার আনুষঙ্গিক পরীক্ষা নিরীক্ষা, তথ্য সংগ্রহ এবং বিশ্লেষণের পর গবেষণার প্রতিবেদন তৈরি করতে হয় ।

গবেষণা প্রতিবেদন লিখনের প্রচলিত রীতিসমূহ: প্রতিবেদনের প্রকৃতি ভেদে কিছুটা পার্থক্য থাকলেও প্রায় সব প্রতিবেদন লেখার সময় নিম্নোক্ত বিষয়গুলোর প্রতি নজর দিতে হয় :

প্রতিবেদন লিখনের ক্ষেত্রে গুডি ও হ্যাট কতকগুলো প্রচলিত রীতি অবলম্বনের কথা বলেছেন। যথা :

ক. সমস্যা উপস্থাপন এবং তাত্ত্বিক প্রস্তাবনার সম্পর্ক বর্ণনা করা।

খ. গবেষণার নক্শা বর্ণনা এবং উপাত্ত সংগ্রহ করার পদ্ধতি সম্পর্কে আলোচনা।

গ. উপাত্ত বিশ্লেষণ ও গবেষণার ফলাফল উপস্থাপন করা।

ঘ. প্রকল্প ও ফলাফলের সম্পর্ক সম্বন্ধে আলোচনা করা।

৩. সবিশেষ সিদ্ধান্ত গ্রহণ এবং এর প্রায়োগিক তাৎপর্য ও তাত্ত্বিক ভিত্তি নির্দেশ করা। সমাজবিজ্ঞানী মার্গারেট স্টারি এর মতে-

ক. কাদের অর্থের বিনিময়ে কে বা কারা গবেষণাটি পরিচালনা করেন;

খ. গবেষণাটির উদ্দেশ্যাবলি কী?

গ. গবেষণা শুরু ও সমাপ্তির তারিখ ও সময়;

ঘ. জনসমষ্টি বৃত্তান্ত, নমুনা, আকার ও নমুনায়নের পদ্ধ

. গবেষণা পরিচালক, সহকারী ও মাঠকর্মীদের উপাত্ত সংগ্রহের কলাকৌশল ও উপকরণাদি;

চ. গবেষণার ফলাফল;

ছ. প্রাসঙ্গিক তথ্যাবলি;

জ. প্রকল্পের সাথে অনুরূপ অন্যান্য গবেষণার ফলাফলের সম্পর্ক ও প্রভাব;

ঝ. প্রকল্পের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ ও সাতিজীন তথ্যাবলি এবং

ঞ. গবেষণালবদ্ধ ফলাফলের তাত্ত্বিক ও প্রায়োগিক তাৎপর্য।

প্রতিবেদন যাতে নির্ভুল, সঠিক ও গ্রহণযোগ্য হয় সেজন্য গবেষককে প্রতিবেদন তৈরি করার সময় বা লিখনের সময় আরও কিছু বিষয় বিবেচনা করতে হয়। নিম্নে সেগুলো আলোচনা করা হলো :

১. সঠিক শিরোনাম : প্রতিবেদন প্রণয়নের সময় শিরোনামের দিকে খেয়াল রাখতে হবে যাতে তা সঠিক হয়। কেননা সঠিক শিরোনামের মাধ্যমে প্রতিবেদনের ধরনটি সহজেই অনুমান করা যায়।

২. বাস্তবতা ও নির্ভরতা : গবেষককে অবশ্যই বাস্তবতার নিরিখে প্রতিবেদনটি প্রণয়ন করতে হবে এবং তৈরিকৃত প্রতিবেদনটি যাতে তথ্যনির্ভর হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।

৩. সময়মতো উপস্থাপন : প্রতিবেদন উপস্থাপনে গবেষককে সময়ের দিকটিতে বেশি বিবেচনা করতে হবে। কেননা সঠিক সময়ে প্রতিবেদনটি উপস্থাপন না করলে এর কোনো মূল্য থাকবে না।

৪. পরিকল্পনা : প্রতিবেদন প্রণয়ন করার জন্য প্রথমেই একটি সুষ্ঠু পরিকল্পনা দরকার, কখন, কোথায়, কীভাবে কোন উদ্দেশ্যে প্রতিবেদন তৈরি করতে হবে সে সম্পর্কে গবেষককে পূর্বেই একটি পরিকল্পনা তৈরি করে নিতে হয়।

৫. ব্যাকরণগত শুদ্ধতা : প্রতিবেদন লেখার সময় গবেষককে ভাষা প্রয়োগের দিকে খেয়াল রাখতে হবে। অর্থাৎ সুন্দর শব্দ - চয়ন এবং ভাষার ব্যাকরণগত দিকটি যাতে শুদ্ধ হয়, সেদিকে তীক্ষ্ণ দৃষ্টি রাখতে হবে।

৬. সুস্পষ্ট বক্তব্য : প্রতিবেদন প্রণয়নের সময় গবেষককে লক্ষ রাখতে হবে, তিনি যে বক্তব্য উপস্থাপন করেছেন তা যেন স্পষ্ট হয় এবং পাঠক সহজে তা উপলব্ধি করতে পারে।

৭. নির্দিষ্ট কাঠামো : প্রতিবেদনের কোনো চিরন্তন কাঠামো নেই। তথাপি প্রতিবেদনটি প্রণয়ন করার সময় সুনির্দিষ্ট কাঠামো অনুসরণ করলে এটি পূর্ণাঙ্গতা পাবে।

৮. সংক্ষিপ্ত সার : অনেক সময় পাঠকের পক্ষে পুরো প্রতিবেদনটি পড়া হয়ে ওঠে না। তাই প্রতিবেদনের একটি সংক্ষিপ্ত সার থাকলে পাঠকের পক্ষে সহজে প্রতিবেদনটি সম্পর্কে একটি সুন্দর ধারণা লাভ করা সম্ভবপর হয় ।

৯. সুস্পষ্ট উদ্দেশ্য : প্রতিবেদন প্রণয়নের সময় খেয়াল রাখতে হবে যাতে প্রতিবেদনের উদ্দেশ্যসমূহ স্পষ্টভাবে বিধৃত থাকে। কেননা কি উদ্দেশ্যে প্রতিবেদন প্রণয়ন হচ্ছে সে সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা না থাকলে পাঠকের কাছে তা গ্রহণযোগ্য হবে না। 

উপসংহার : উপর্যুক্ত আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে বলা যায় যে, সাধারণত গবেষণা রিপোর্ট প্রণয়নের সময় উদ্দেশ্য, অর্থানুকুল্য, বিষয়বস্তু, হাইপোথিসিস বা ফলাফলের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ বিষয়াবলিকে গুরুত্ব দিতে হয়। 

অধিকন্তু, প্রতিবেদনে গবেষণার ফলাফলের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ ও সঙ্গতিবিহীন তথ্যাবলি এবং গবেষণাটির ইতিবাচক ও নেতিবাচক দিকের বর্ণনা থাকা বাঞ্ছনীয় । গবেষণাকর্মের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হলো গবেষণার প্রতিবেদন লেখা।

আর্টিকেলের শেষকথাঃ গবেষণা প্রতিবেদন লেখার প্রচলিত রীতি সমূহ আলোচনা কর

আমরা এতক্ষন জেনে নিলাম গবেষণা প্রতিবেদন লিখনের রীতিনীতি উল্লেখ কর। যদি তোমাদের আজকের এই পড়াটিটি ভালো লাগে তাহলে ফেসবুক বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারো। আর এই রকম নিত্য নতুন পোস্ট পেতে আমাদের আরকে রায়হান ওয়েবসাইটের সাথে থাকো। 

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url
আরও পড়ুনঃ
আরও পড়ুনঃ