গবেষণা প্রতিবেদনের কাঠামো আলোচনা কর

আসসালামু আলাইকুম প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকে বিষয় হলো গবেষণা প্রতিবেদনের কাঠামো আলোচনা কর জেনে নিবো। তোমরা যদি পড়াটি ভালো ভাবে নিজের মনের মধ্যে গুছিয়ে নিতে চাও তাহলে অবশ্যই তোমাকে মনযোগ সহকারে পড়তে হবে। চলো শিক্ষার্থী বন্ধুরা আমরা জেনে নেই আজকের গবেষণা প্রতিবেদনের কাঠামো বর্ণনা কর।

গবেষণা প্রতিবেদনের কাঠামো আলোচনা কর
গবেষণা প্রতিবেদনের কাঠামো আলোচনা কর

গবেষণা প্রতিবেদনের কাঠামো আলোচনা কর

  • অথবা, গবেষণা প্রতিবেদনের কাঠামো বর্ণনা কর। 
  • অথবা, গবেষণা প্রতিবেদনের কাঠামো উল্লেখ কর।

উত্তর ভূমিকা : গবেষণার প্রতিবেদন হচ্ছে গবেষণার উদ্দেশ্য অনুযায়ী প্রাপ্ত ফলাফলকে সুশৃঙ্খলভাবে প্রতিবেদন আকারে উপস্থাপন করা। গবেষণার প্রতিবেদন গবেষণার চূড়ান্ত পর্যায়ে লিখিত একটি কথিকা। 

একটি গবেষণার সর্বাপেক্ষা গুরুত্বপূর্ণ লিখিত রূপ হলো গবেষণা প্রতিবেদন। এর মাধ্যমে গবেষণার সম্পূর্ণ রূপে বহিঃপ্রকাশ ঘটে। অর্থাৎ গবেষণা প্রতিবেদন গবেষণার যথার্থতা প্রকাশ করে। কেননা গবেষণার মাধ্যমে কি পাওয়া গেল তা গবেষণা প্রতিবেদনের মাধ্যমে জানা সম্ভব হয়।

গবেষণা প্রতিবেদনের কাঠামো : গবেষণা প্রতিবেদন লেখার জন্য একক কোনো স্বীকৃত কাঠামো নেই। তবে যেকোনো ধরনের গবেষণা প্রতিবেদন লেখার সময় কতিপয় নিয়ম অনুসরণ করা হয়ে থাকে। 

এ সাধারণ নিয়ম অনুসরণ করে কোনো প্রতিবেদন প্রণীত হলে তা একটি সর্বজনীন 'আকৃতি সম্বলিত প্রতিবেদনের রূপ লাভ করে। অর্থাৎ প্রতিবেদনটি চাহিদা অনুযায়ী পরিমিত কাঠামোলাভ করতে সমর্থ হয় ।

সাধারণত একটি গবেষণা প্রতিবেদনের তিনটি অংশ থাকে । যথা : 

ক. প্রারম্ভিক অংশ, 

খ, মূল অংশ, এবং 

গ. নির্দেশিকা। 

সাধারণভাবে কোনো গবেষণা প্রতিবেদন লেখার সময় নিম্নোক্তভাবে গঠন কাঠামো অনুসরণ করা হয়। তবে বিশেষ প্রযোজনে কোনো নতুন অংশ এতে সংযোজিত হয়, আবার কোনো কোনো অংশ বাদ পড়ে যায়। গবেষণার অন্তর্ভুক্ত বিষয়সমূহের পার্থক্যহেতু এ ব্যবস্থা গৃহীত হয়। 

নিম্নে প্রতিবেদনের অংশসমূহ উল্লেখ করা হলো :

ক. প্রারম্ভিক অংশ : গবেষণা প্রতিবেদনের মূল অংশ শুরুর পূর্বে একটি অলংকারিক অংশ থাকে যা প্রতিবেদনের কাঠামো সুদৃঢ় করে । এর কয়েকটি অংশ হলো :

১. গবেষণার শিরোনাম : প্রতিবেদনের প্রথম ধাপ হচ্ছে শিরোনাম । প্রতিবেদন লেখার সময় এর মূল বিষয়ের সাথে সম্পর্ক রেখে একটি অর্থবহ ও সুন্দর শিরোনাম প্রদান করতে হয় যেন গবেষণার বিষয়ের সাথে সংগতিপূর্ণ হয় ।

২. গবেষক ও প্রতিষ্ঠানের নাম : গবেষণা প্রতিবেদনে গবেষক এবং প্রতিষ্ঠানের নাম উল্লেখ করা জরুরি । শিরোনামের নিচে গবেষকের নাম, ঠিকানা, শিক্ষাগত যোগ্যতা, পদমর্যাদা ইত্যাদি লিখতে হয় । অনেকসময় সংক্ষিপ্তাকারে ঠিকানা লেখা হয় তবে পূর্ণাঙ্গ ঠিকানা উল্লেখ করা উচিত

৩. মুখবন্ধ ও কৃতজ্ঞতা স্বীকার : গবেষণা প্রতিবেদনে মুখবন্ধ লিখতে হয় । প্রতিবেদনের আকার ছোট হলে মুখবন্ধ না লিখলেও চলে । অনেকে মুখবন্ধ ও ভূমিকাকে এক করে দেখে। 

মুখবন্ধে সাধারণত বিষয় নির্বাচনের কারণ, সমস্যার রূপ প্রকৃতি এবং এর অন্তর্নিহিত উদ্দেশ্য সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত বিবরণ থাকে । মুখবন্ধের পরে অপর পৃষ্ঠায় কৃতজ্ঞতাস্বীকার থাকে ।

৪. সূচিপত্র : সূচিপত্র গবেষণা প্রতিবেদনের প্রথমেই হয়ে থাকে । প্রতিবেদন লেখার ক্ষেত্রে একটি সূচিপত্র প্রদান আবশ্যক যাতে পাঠক অতি সহজে তা অনুধাবন করতে পারেন। সূচিপত্রের আকার আকৃতি এক ধরনের হয়। অনেক সূচিপত্রে কেবল অধ্যায়ের নাম ও পৃষ্ঠা নম্বর থাকে ।

খ. মূল অংশ : গবেষণার মূল বিষয়বস্তু এ অংশে বিদ্যমান থাকে। এর কয়েকটি অংশ রয়েছে। যেমন—

১. ভূমিকা : প্রতিবেদনের এ পর্যায়ে গবেষণা সম্পর্কে ভূমিকা প্রদান করতে হয়। এর মাধ্যমে প্রতিবেদনের মূল অংশের সূত্রপাত ঘটে। ভূমিকা প্রতিবেদনের অতি গুরুত্বপূর্ণ পর্যায় । ভূমিকা থেকেই প্রতিবেদনের মূল অংশের সূত্রপাত হয় ।

২. গবেষণা পদ্ধতি : ভূমিকা প্রদানের পরবর্তী ধাপে গবেষণা কাজ পরিচালনার জন্য গবেষণা পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়ে থাকে। গবেষণা পদ্ধতি কেমন তাও প্রতিবেদন তৈরির সময় বিবেচনা করা দরকার। এ পর্যায়ে পদ্ধতি সম্পর্কে সুস্পষ্ট বিবরণ পেশ করতে হয় ।

৩. ফলাফল : গবেষণার ফলাফল প্রতিবেদনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। প্রতিবেদন তৈরির সময় গবেষণার ফলাফল তুলে ধরা উচিত। উপাত্ত উপস্থাপনের ক্ষেত্রে ছক, 

চিত্র বা সারণি ব্যবহার করা হয় অর্থাৎ যখন যেভাবে প্রয়োজন সেভাবে উপস্থাপন করতে হয় । তথ্য উপস্থাপনের একাধিক কৌশলের মধ্যে যথাযথ কৌশল গ্রহণ করতে হবে।

৪. আলোচনা ও সুপারিশ : প্রতিবেদনের অতিগুরুত্বপূর্ণ অংশ হচ্ছে আলোচনা ও সুপারিশ। তবে এক্ষেত্রে আলোচনার অংশকে বেশি প্রাধান্য দেওয়া হয়। আলোচনা নাতিদীর্ঘ ও জ্ঞানগর্ভ হওয়া আবশ্যক। 

প্রাপ্ত ফলাফলের তাত্ত্বিক ও ব্যবহারিক গুরুত্ব এ অংশে উল্লেখ করা হয়। প্রতিবেদনে কিছু সুপারিশমালা উপস্থাপন করা হয়। গবেষণা পরিচালনায় কোনো সমস্যা বা ভুলত্রুটি পরিলক্ষিত হলে তাও এখানে উল্লেখ করতে হয়।

৫. সারাংশ : প্রতিটি প্রতিবেদনে গবেষণার সারবস্তুর পৃষ্ঠা আলোচনা করা হয় সারাংশের মধ্যে। যাতে করে সারাংশের মধ্যে গবেষণার পুরো চিত্র উল্লেখ করা থাকে এবং খুব সহজে এ সম্পর্কে সম্যক ধারণা লাভ করা যায়। সারাংশ হচ্ছে সমগ্র গবেষণার একটি সংক্ষিপ্ত রূপ।

গ. নিদের্শিকা ; প্রতিবেদনের সর্বশেষ ধাপ হলো নির্দেশিকা। এর পর্যায় দুটি। যথা :

১. প্রাসঙ্গিক গ্রন্থপুঞ্জি : এ পর্যায়ে বিভিন্ন বইপুস্তক, প্রবন্ধ, পত্রপত্রিকা, সাময়িকিতে প্রকাশিত প্রবন্ধ, তত্ত্ব প্রভৃতি থেকে সাহায্য নেওয়া হয় গবেষণার তাত্ত্বিক পর্যালোচনা করার জন্য। জার্নাল বা অপ্রকাশিত থিসিস কিংবা গ্রন্থাবলি যা থেকে তথ্য নেওয়া হয়েছে তা উল্লেখ করতে হয় ।

২. পরিশিষ্ট : একটি পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদনে গুরুত্বসহকারে পরিশিষ্ট উল্লেখ করতে হয়। গবেষণার মূল অংশে যেসব তথ্য ব্যবহার করা হয়নি এমন কিছু তথ্য এ পর্যায়ে উল্লেখ করতে হয়। ভবিষ্যতে যদি কোনো গবেষক এ নিয়ে কোনো গবেষণা করতে চান, তাহলে এসব তথ্য প্রমাণ তার কাজে লাগতে পারে।

উপসংহার : উপর্যুক্ত আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে বলা যায় যে, গবেষণা কাঠামোর প্রতিটি পর্যায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিবেদন তৈরির সময় সতর্কতার সাথে বিষয় বিবেচনা করতে হবে। 

প্রতিবেদন তৈরির কাজটি সামাজিক গবেষণার সর্বশেষ পর্যায়। গবেষণায় প্রাপ্ত ফলাফলের ভিত্তিতেই সাধারণত একটি প্রতিবেদন তৈরি করা হয়। গবেষণার ফলাফল ভিত্তিক প্রতিবেদন প্রণয়ন বিভিন্নভাবে হতে পারে ।

আর্টিকেলের শেষকথাঃ গবেষণা প্রতিবেদনের কাঠামো আলোচনা কর

আমরা এতক্ষন জেনে নিলাম গবেষণা প্রতিবেদনের কাঠামো উল্লেখ কর। যদি তোমাদের আজকের এই পড়াটিটি ভালো লাগে তাহলে ফেসবুক বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারো। আর এই রকম নিত্য নতুন পোস্ট পেতে আমাদের আরকে রায়হান ওয়েবসাইটের সাথে থাকো।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url
আরও পড়ুনঃ
আরও পড়ুনঃ