প্রতিবেদন কাকে বলে । গবেষণা প্রতিবেদনের প্রকারভেদ আলোচনা কর

আসসালামু আলাইকুম প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকে বিষয় হলো প্রতিবেদন কাকে বলে । গবেষণা প্রতিবেদনের প্রকারভেদ আলোচনা কর জেনে নিবো। তোমরা যদি পড়াটি ভালো ভাবে নিজের মনের মধ্যে গুছিয়ে নিতে চাও তাহলে অবশ্যই তোমাকে মনযোগ সহকারে পড়তে হবে। চলো শিক্ষার্থী বন্ধুরা আমরা জেনে নেই আজকের প্রতিবেদন কাকে বলে । গবেষণা প্রতিবেদনের প্রকারভেদ আলোচনা কর।

প্রতিবেদন কাকে বলে । গবেষণা প্রতিবেদনের প্রকারভেদ আলোচনা কর
প্রতিবেদন কাকে বলে । গবেষণা প্রতিবেদনের প্রকারভেদ আলোচনা কর

প্রতিবেদন কাকে বলে।গবেষণা প্রতিবেদনের প্রকারভেদ আলোচনা কর

উত্তর ভূমিকা : গবেষণার প্রতিবেদন হচ্ছে গবেষণার উদ্দেশ্য অনুযায়ী প্রাপ্ত ফলাফলকে সুশৃঙ্খলভাবে প্রতিবেদন আকারে উপস্থাপন করা। গবেষণার প্রতিবেদন গবেষণার চূড়ান্ত পর্যায়ে লিখিত একটি কথিকা। এর মাধ্যমে গবেষণার সম্পূর্ণ রূপে বহিঃপ্রকাশ ঘটে। 

অর্থাৎ গবেষণা প্রতিবেদন গবেষণার যথার্থতা প্রকাশ করে। কেননা গবেষণার মাধ্যমে কী পাওয়া গ্লে তা গবেষণা প্রতিবেদনের মাধ্যমে জানা সম্ভব হয়। গবেষণা প্রতিবেদনে মূলত একদিকে যেমন প্রচলিত আনে নতুন সংযোজন, তেমনি বাস্তব পদক্ষেপ গ্রহণের একটি হাতিয়ার।

প্রতিবেদন : গবেষণা প্রতিবেদন হলো গবেষণার উদ্দেশ্যে সংগৃহীত তথ্যাবলির সংক্ষিপ্ত ও সামঞ্জস্যপূর্ণ বিবরণ। বস্তুত আধুনিক বিশ্বের প্রতিটি আনুষ্ঠানিক রীতি, পরিকল্পনা ও কর্মসূচির অন্যতম ভিত্তি ও পূর্বশর্ত হিসেবে গবেষণা প্রতিবেদনের গুরুত্ব ও ভূমিকা অনস্বীকার্য।

বিশেষভাবে বলতে গেলে, "সুনির্দিষ্ট উদ্দেশ্য সামনে রেখে সরেজমিনে অনুসন্ধানের পর সংগৃহীত তথ্যাবলির সংক্ষিপ্ত ও সামঞ্জস্যপূর্ণ উপস্থাপনই হলো গবেষণা প্রতিবেদন।”

প্রামাণ্য সংজ্ঞা :

গুড়ি ও হাট (Goode and Hatt) বলেন, “প্রতিবেদন হচ্ছে গবেষণার সর্বশেষ ধাপ এবং এর উদ্দেশ্য হলো গবেষণা পিপাসুদের নিকট গবেষণার সম্পূর্ণ ফলাফল ও সিদ্ধান্ত উপস্থাপন করা।”

এস. এ. আমিনুজ্জামান তার 'Introduction of Social Research' গ্রন্থে উল্লেখ করেন, “যেকোনো বিবরণ অনুসন্ধানের, ফলাফলের নিয়মতান্ত্রিক বিবৃতি হলো প্রতিবেদন, যা কিছু লোক কর্তৃক প্রণীত সুনির্দিষ্ট এবং সুনির্দিষ্ট তথ্যাবলির ওপর প্রতিষ্ঠিত।”

জি. আর, টেরির মতে, "A Resaerch report is a formal presentation of summary information dealing with utilization of resources or status of operation useful in evaluation of progress making decisions and directing activities."

পিটার লিটল বলেন, “গবেষণা প্রতিবেদন হলো গবেষণার চূড়ান্ত ফল, যাতে পর্যবেক্ষণ, পরীক্ষণ ও অনুসন্ধানের মাধ্যমে প্রাপ্ত কোনোকিছুর বিবরণ থাকে এবং বিবরণের সাথে সুপারিশ ও উপসংহার যুক্ত হয়। "

ড. আবু তাহেরের মতে, “প্রণালিবদ্ধ উপায়ে কোনো অনুসন্ধান কর্মের প্রাপ্ত ফলাফলের যৌক্তিক ও সামঞ্জস্যপূর্ণ বিস্তারিত বিবরণই হচ্ছে গবেষণা প্রতিবেদন।”

গবেষণা প্রতিবেদনের প্রকারভেদ : গবেষণার প্রকৃতি অনুসারে প্রতিবেদন উপস্থাপনের প্রকৃতিগত পরিবর্তন হয়ে থাকে মাত্র। নিম্নে প্রতিবেদনের কয়েকটি রূপ উল্লেখ করা হলো :

ক. বিস্তৃত বা দীর্ঘ প্রতিবেদন (যেমন— থিসিস);

খ. মাঝারি প্রতিবেদন (যেমন- গবেষণামূলক প্রবন্ধ);

গ. সংক্ষিপ্ত প্রতিবেদন (যেমন- গবেষণার সিনোপসিস); ঘ. তথ্যমূলক প্রতিবেদন;

ঙ. বিশ্লেষণমূলক প্রতিবেদন;

চ. নিরীক্ষাধর্মী প্রতিবেদন;

ছ. প্রশাসনিক প্রতিবেদন;

ড. সুপারিশমূলক প্রতিবেদন ইত্যাদি।গবেষণার প্রতিবেদনের আরও কিছু প্রকরণ রয়েছে। 

নিম্নে সেগুলোর বিস্তারিত আলোচনা করা হলো :

১. পত্রিকা প্রকাশনাভিত্তিক প্রতিবেদন : বৃত্তিমুখী সাময়িকপত্র বা পত্রিকায় প্রতিবেদন লিখন বিশেষ কৌশলগত পরিকাঠামোয় সাজানো থাকে, এ ধরনের প্রতিবেদন হবে সংক্ষিপ্ত। অর্থাৎ গবেষককে সংক্ষিপ্ত পরিসরে গবেষণার মূল প্রতিপাদ্য তুলে ধরার কৌশল অর্জন করতে হবে। 

এখানে পূর্ববর্তী সময়ের অন্যান্য সহায়ক গবেষণাসমূহের এবং গবেষকের নামোল্লেখ বিশেষ প্রাধান্য পেয়ে থাকে, যদিও এখানে বিস্তারিত পরিশিষ্টের প্রয়োজন হয় না। তবে নির্দেশক এ পদ্ধতিগত শর্তাবলি প্রচ্ছন্নের উদ্দেশ্যে লিখিত হয়ে থাকে ।

২. গ্রন্থ প্রকাশনাভিত্তিক প্রতিবেদন : একটি গ্রন্থ হলো প্রচারের অন্যতম মাধ্যম। সামাজিক গবেষণামূলক গ্রন্থে গবেষণামূলক প্রবন্ধের খসড়াচিত্রের ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়ে থাকে। তবে গবেষণাপত্র নির্ধারিত প্রতিষ্ঠানে উপস্থিত হবার পর, অথবা গ্রন্থাকারে প্রকাশিত হওয়ার পরই গণমাধ্যমে প্রকাশ সম্ভব হয়। 

কোনো কোনো ক্ষেত্রে সাংবাদিকগণ ও গবেষকের সঙ্গে প্রশ্নোত্তরের মাধ্যমে প্রাপ্ত তথ্যের উল্লেখযোগ্য বিষয়গুলো অবগত হয়ে চূড়ান্ত প্রকাশনার পূর্বে টেলিফোনে গঠনের মাধ্যমে তা নির্ভুল প্রমাণিত করে দিতে পারেন। আবার গবেষক প্রবন্ধ আকারেও তা গণমাধ্যমে প্রদান করতে পারেন ।

৩. পাঠ্যসূচি অনুযায়ী গবেষণা প্রতিবেদন : এ ধরনের প্রতিবেদনপত্র প্রামাণ্যের ভিত্তিতে সুসংহত আলাপ-আলোচনা এবং যথাযথ পদ্ধতিসমূহের ব্যবহারের মধ্য দিয়ে গড়ে ওঠে। 

এ প্রতিবেদনে পাঠ্যসূচি অনুযায়ী পদ্ধতিসমূহ ব্যবহৃত হয়েছে কি না তা প্রশিক্ষককে স্পষ্টভাবে বুঝিয়ে দিতে হবে। অর্থাৎ ছাত্র গবেষক নির্ধারিত পদ্ধতিসমূহ সম্পর্কে যথেষ্ট ওয়াকিবহাল কি না তা তার প্রতিবেদন লিখনের ধরন থেকে প্রশিক্ষক বুঝে নিতে পারে।

৪. দায়িত্বপ্রাপ্ত গবেষণা প্রতিবেদন : যদি কোনো ব্যক্তি বা সংস্থা বা গবেষণামূলক সংগঠন কোনো সরকারি বা বেসরকারি সংগঠনের অর্থানুকূল্যে গবেষণার দায়িত্ব পেয়ে থাকেন তবে গবেষণার নির্দিষ্ট মেয়াদ শেষে সেই ব্যক্তি বা সংস্থা সেই পৃষ্ঠপোষক প্রতিষ্ঠানের কাছে গবেষণার ফলাফলসহ প্রতিবেদন পেশ করতে বাধ্য থাকেন।

৫. বৃত্তিভোগী বা বুদ্ধিজীবীদের সম্মানার্থে উত্থাপিত পদ্ধতি : এ ধরনের গবেষণার পদ্ধতিগত আলোচনাসমূহকে কম গুরুত্ব প্রদান এবং গবেষণার কেন্দ্রীয় আলোচ্য বিষয়ের উপবিষয়গুলোকে প্রাধান্য দিয়ে গবেষণা প্রতিবেদন তৈরি হয়। 

এ প্রতিবেদনে নির্ধারিত গবেষণার সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত অন্যান্য গবেষণাপত্রে শ্রোতামণ্ডলির আগ্রহের ওপর প্রাধান্য দিয়ে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে আলোচনা করা হয়ে থাকে । গবেষকের এখানে দায়িত্ব হলো প্রতিটি প্রশ্নের বুদ্ধিদীপ্ত এবং যৌক্তিক মীমাংসা করা ।

৬. গণমাধ্যমভিত্তিক প্রতিবেদন : এ ধরনের প্রতিবেদন দ্বারা গবেষণার বিস্তারিত বিষয়বস্তুকে সংক্ষিপ্ত আকারে গণমাধ্যমে জনগণের অবগতির উদ্দেশ্যে তুলে ধরা হয়। তবে গবেষণাপত্র নির্ধারিত প্রতিষ্ঠানে উপস্থাপিত হওয়ার পর, অথবা গ্রন্থাকারে প্রকাশিত হওয়ার পরই কেবল গণমাধ্যমে প্রকাশ সম্ভব হয়।

কোনো ক্ষেত্রে সাংবাদিক ও গবেষকের সঙ্গে প্রশ্নোত্তরের মাধ্যমে প্রাপ্ত তথ্যের উল্লেখযোগ্য বিষয়গুলো অবগত হয়ে চূড়ান্ত প্রকাশনার পূর্বে টেলিফোনে পঠনের মাধ্যমে তা নির্ভুল প্রমাণিত করে দিতে পারেন।

উপসংহার : উপর্যুক্ত আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে বলা যায় যে, সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যকে সামনে রেখে সরেজমিনে অনুসন্ধানের পর সংগৃহীত তথ্যাবলির সুস্পষ্ট ও সংক্ষিপ্ত উপস্থাপনই হলো গবেষণা প্রতিবেদন। 

এটি হচ্ছে গবেষক ও পাঠকের মধ্যকার সেতুবন্ধন। বস্তুত গবেষণা প্রতিবেদন একদিকে যেমন প্রচলিত জ্ঞানের নতুন সংযোজন, তেমনি বাস্তব পদক্ষেপ গ্রহণের একটি অন্যতম হাতিয়ার।

আর্টিকেলের শেষকথাঃ প্রতিবেদন কাকে বলে । গবেষণা প্রতিবেদনের প্রকারভেদ আলোচনা কর

আমরা এতক্ষন জেনে নিলাম প্রতিবেদন কাকে বলে । গবেষণা প্রতিবেদনের প্রকারভেদ আলোচনা কর। যদি তোমাদের আজকের এই পড়াটিটি ভালো লাগে তাহলে ফেসবুক বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারো। আর এই রকম নিত্য নতুন পোস্ট পেতে আমাদের আরকে রায়হান ওয়েবসাইটের সাথে থাকো। 

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url
আরও পড়ুনঃ
আরও পড়ুনঃ