উপাত্ত বিশ্লেষণ কাকে বলে । উপাত্ত বিশ্লেষণ পদ্ধতি সম্পর্কে আলোচনা কর

আসসালামু আলাইকুম প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকে বিষয় হলো উপাত্ত বিশ্লেষণ কাকে বলে । উপাত্ত বিশ্লেষণ পদ্ধতি সম্পর্কে আলোচনা কর জেনে নিবো। তোমরা যদি পড়াটি ভালো ভাবে নিজের মনের মধ্যে গুছিয়ে নিতে চাও তাহলে অবশ্যই তোমাকে মনযোগ সহকারে পড়তে হবে। চলো শিক্ষার্থী বন্ধুরা আমরা জেনে নেই আজকের উপাত্ত বিশ্লেষণ কাকে বলে । উপাত্ত বিশ্লেষণ পদ্ধতি সম্পর্কে আলোচনা কর।

উপাত্ত বিশ্লেষণ কাকে বলে । উপাত্ত বিশ্লেষণ পদ্ধতি সম্পর্কে আলোচনা কর
উপাত্ত বিশ্লেষণ কাকে বলে । উপাত্ত বিশ্লেষণ পদ্ধতি সম্পর্কে আলোচনা কর

উপাত্ত বিশ্লেষণ কাকে বলে । উপাত্ত বিশ্লেষণ পদ্ধতি সম্পর্কে আলোচনা কর

উত্তর ভূমিকা : সামাজিক গবেষণার একটি প্রধান অনুষঙ্গ হচ্ছে তথ্য। তথ্যকে বিশ্লেষণের মাধ্যমে গবেষণার উপযোগী করা হয় । 

কারণ মাঠপর্যায় থেকে সংগৃহীত অবিন্যস্ত তথ্য বা উপাত্ত দ্বারা গবেষণাকার্য সম্পাদন করলে তা থেকে প্রাপ্ত ফলাফল যথাযথ হয় না। শ্রেণিবদ্ধকরণ, সংকেতায়ন ও তালিকাবদ্ধকরণ হচ্ছে তথ্য বিশ্লেষণের উল্লেখযোগ্য মাধ্যম বা উপায় ।

উপাত্ত বিশ্লেষণ : সমাজ গবেষণায় প্রাপ্ত উপাত্তসমূহ বিশ্লেষণ ও ব্যাখ্যাদান গবেষণা প্রক্রিয়ার এটি, গুরুত্বপূর্ণ কাজ। সাধারণত উপাত্ত প্রক্রিয়াজাতকরণের কাজটি সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনের পরেই উপাত্ত বিশ্লেষণের কাজটি শুরু হয় । 

উপাত্ত বিশ্লেষণের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে গবেষণা প্রশ্নের উত্তর দেওয়া। সামাজিক গবেষণার অত্যন্ত সুচিন্তিত, বুদ্ধিবৃত্তীয় এবং সৃজনশীল কাজ হলো তথ্য বিশ্লেষণ ।

প্রামাণ্য সংজ্ঞা :

ফ্রেড. এন. কর্লিনজার (Fred. N. Kerlinger) তাঁর 'Foundations of Behavioral Research' গ্রন্থে বলেন, "Analysis means the categorizing, ordering, manipulating and summarizing of data to obtain to research questions." 

অর্থাৎ, গবেষণার প্রশ্নের উত্তর অর্জন করার জন্য উপাত্তকে শ্রেণীকরণ, সুবিন্যস্তকরণ, সংগতিসাধন এবং সংক্ষিপ্তকরণই হচ্ছে উপাত্ত বিশ্লেষণ ।

জোহান গালতুং বলেন, (Johan Gultung) "Analysis for data refers to seeing the data in the light of hypothesis or research questions and the prevailing theories and drawing conclusions that are amenable to theory formation as far as possible.” 

অর্থাৎ, উপাত্ত বিশ্লেষণ হলো গবেষণার প্রশ্ন, পূর্বানুমান অথবা প্রচলিত তত্ত্বের আলোকে সংগৃহীত উপাত্তসমূহের বিশ্লেষণ করা এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা যাতে এসব সিদ্ধান্ত তত্ত্ব গঠনে সহায়ক হয় ।

উপাত্ত বিশ্লেষণ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে গবেষণার উদ্দেশ্য অর্জিত হয়। গবেষণা পূর্বানুমানের সত্যতা নিরূপণ করা হয় এবং এ প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে প্রচলিত তত্ত্ব যাচাই করা হয় এবং নতুন তত্ত্ব গঠন করা হয়।

উপাত্ত বিশ্লেষণের ধরন বা প্রক্রিয়া : একটি তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হিসেবে উপাত্ত বিশ্লেষণের কয়েকটি ধরন রয়েছে। নিম্নে এ সম্পর্কে আলোচনা করা হলো :

সুষ্ঠুভাবে উপাত্ত বিশ্লেষণের জন্য নিম্নোক্ত তিনটি কাজ করতে হয়—

১. উপাত্তের সূক্ষ্ম নিরীক্ষণ; 

২. কার্যকারণ বিশ্লেষণ ও 

৩. বিষয়বস্তু বিশ্লেষণ।

১. উপাত্তের সূক্ষ্ম বিশ্লেষণ : এক্ষেত্রে গবেষককে সংগৃহীত উপাত্তকে বিন্যস্ত ও প্রক্রিয়াজাতকরণের পর তথ্যসমূহের মধ্যে কোনো ধরনের সম্পর্ক আছে কি না বা তথ্যগুলো যথার্থই গবেষণা কাজের উপযোগী কি না তা বিশ্লেষণ ও নিরীক্ষণ করা হয়ে থাকে ৷

২. কার্যকারণ সম্পর্ক বিশ্লেষণ : এক্ষেত্রে গবেষককে সংগৃহীত উপাত্তকে বিন্যস্ত ও প্রক্রিয়াজাতকরণের পর তথ্যসমূহের মধ্যে কোনো কার্যকারণ সম্পর্ক আছে কি না অথবা দেখানো যেতে পারে কি না ইত্যাদি বিষয়গুলো আলোচনা করা হয় । 

৩. বিষয়বস্তু বিশ্লেষণ : বিষয়বস্তু বিশ্লেষণ পদ্ধতিতে আচরণ সম্পর্কিত সংগৃহীত উপাত্তকে বৈজ্ঞানিক উপাত্তে রূপান্তর করা হয়। এ পদ্ধতি সামাজিক গবেষণায় সংগৃহীত অসংগঠিত উপাত্তকে শ্রেণিবদ্ধকরণ এবং সংগঠিত করে বৈজ্ঞানিক রূপদানে সহায়তা করে । 

পরিসংখ্যানগত বিশ্লেষণ : উপাত্ত বিশ্লেষণের অন্যতম প্রধান উপায় বা পদ্ধতি হচ্ছে পরিসংখ্যানগত বিশ্লেষণ পদ্ধতি । পরিসংখ্যানগত বিশ্লেষণ দুধরনের হয়ে থাকে। যথা : 

i. বর্ণনাত্মক পরিসংখ্যান; 

ii. সিদ্ধান্ত গ্রহণমূলক পরিসংখ্যান । 

i. বর্ণনাত্মক পরিসংখ্যান : বর্ণনাত্মক পরিসংখ্যানের ক্ষেত্রে সারণিতে গণসংখ্যা নিবেশনে উপস্থাপিত উপাত্তসমূহকে শতকরা হার, গাণিতিক গড়, মধ্যমা, প্রচুরক, পরিসর, পরিমিত ব্যবধান, সহসম্বন্ধ, নির্ভরণ, কাইবর্গ, ইত্যাদির প্রয়োগ বিশ্লেষণ করা হয় ।

ii. সিদ্ধান্ত গ্রহণমূলক পরিসংখ্যান : এক্ষেত্রে সারণিতে উপস্থাপিত উপাত্তসমূহের ফলাফল অর্থাৎ নমুনা থেকে প্রাপ্ত ফলাফল সমগ্রকের সাথে কতটা সংগতিপূর্ণ তা পরিমাপ করা হয় ।

উপাত্তসমূহের ব্যাখ্যাদান ও পারস্পরিক সম্পর্ক বর্ণনা করার ক্ষেত্রে গবেষককে প্রথমে সহজসরল বর্ণনা হতে শুরু করে পর্যায়ক্রমে জটিল ব্যাখ্যা উপস্থাপনে সচেষ্ট হতে হয়। 

এ কারণে গবেষণার সঠিক ফলাফল প্রকাশের জন্য পর্যায়ক্রমে একচলক ও বহুচলক সারণি বিশ্লেষণের মাধ্যমে বিভিন্ন চলকের মধ্যকার সম্পর্কও জটিলতম ও গভীরতম স্তরে পৌঁছায়।

একচলক বিশিষ্ট বিশ্লেষণ হলো, একটিমাত্র চলকের ওপর ভিত্তি করে সেই চলকের বৈশিষ্ট্যগুলোর বিন্যাসকে পরীক্ষা করে দেখা ৷ একচলক বিশিষ্ট বিশ্লেষণ প্রক্রিয়ায় অনেক ধরনের পরিসংখ্যানগত পদ্ধতি ও কৌশল ব্যবহার করা হয়ে থাকে। 

এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য পদ্ধতি ও কৌশলগুলো হলো গণসংখ্যা নিবেশন, কেন্দ্রীয় প্রবণতা ও বিস্তৃতির পরিমাপসহ বিন্যাসের রূপ ও আকৃতির বিভিন্ন পরিমাপ। বহুচলক বিশিষ্ট বিশ্লেষণ হলো একাধিক চলকের মধ্যকার সম্পর্ক বিশ্লেষণের মাধ্যমে চলকের বৈশিষ্ট্যগুলো অনুধাবন করা ।

উপসংহার : উপর্যুক্ত আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে বলা যায় যে, সামাজিক গবেষণায় তথ্যকে তত্ত্বে পরিণত করতে যেসব প্রক্রিয়া বা পদ্ধতি কার্যকর ভূমিকা পালন করে তালিকাবদ্ধকরণ, শ্রেণিবদ্ধকরণ, সারণিবদ্ধকরণ ও সংকেতায়ন তার মধ্যে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য । তালিকাবদ্ধকরণ গবেষণার কার্যকারিতা ও উপযোগিতা বৃদ্ধি করে ।

আর্টিকেলের শেষকথাঃ উপাত্ত বিশ্লেষণ কাকে বলে । উপাত্ত বিশ্লেষণ পদ্ধতি সম্পর্কে আলোচনা কর

আমরা এতক্ষন জেনে নিলাম উপাত্ত বিশ্লেষণ কাকে বলে । উপাত্ত বিশ্লেষণ পদ্ধতি সম্পর্কে আলোচনা কর। যদি তোমাদের আজকের এই পড়াটিটি ভালো লাগে তাহলে ফেসবুক বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারো। আর এই রকম নিত্য নতুন পোস্ট পেতে আমাদের আরকে রায়হান ওয়েবসাইটের সাথে থাকো।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url
আরও পড়ুনঃ
আরও পড়ুনঃ