শহরায়ন ও নগরায়নের বৈশিষ্ট্য কি কি

আসসালামু আলাইকুম প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকে বিষয় হলো শহরায়ন ও নগরায়নের বৈশিষ্ট্য কি কি জেনে নিবো। তোমরা যদি পড়াটি ভালো ভাবে নিজের মনের মধ্যে গুছিয়ে নিতে চাও তাহলে অবশ্যই তোমাকে মনযোগ সহকারে পড়তে হবে। চলো শিক্ষার্থী বন্ধুরা আমরা জেনে নেই আজকের শহরায়ন ও নগরায়নের বৈশিষ্ট্য কি কি ।

শহরায়ন ও নগরায়নের বৈশিষ্ট্য কি কি
শহরায়ন ও নগরায়নের বৈশিষ্ট্য কি কি

শহরায়নের বৈশিষ্ট্যগুলো কি উল্লেখ কর

শহরায়ন ও নগরায়ণে বৈশিষ্ট্য গুলো লিখ 

উত্তর : ভূমিকা : শহরায়ন বা নগরায়ণের প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো কৃষিপ্রধান জনসমষ্টি থেকে বৃহত্তর সমষ্টিতে স্থানান্তর করা। পরিবর্তিত আধুনিক জীবন ব্যবস্থাও শহরায়নের অন্যতম প্রধান বৈশিষ্ট্য। 

আর এই জীবন ব্যবস্থায় ব্যবসা-বাণিজ্য, আর্থিক লেনদেন, উন্নত পরিবহণ, যোগাযোগ ব্যবস্থা, বিভিন্ন প্রশাসনিক, সংস্কৃতিক, চিত্তবিনোদন কেন্দ্র, শিক্ষা, চিকিৎসা, চাকরি ও অন্যান্য নাগরিক সুযোগ-সুবিধা প্রভৃতি বিশেষভাবে লক্ষণীয়। 

অর্থাৎ গতিশীল সমাজ ব্যবস্থথা নগরায়ণের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলেও এক্ষেত্রে কৃত্রিমতা ও যান্ত্রিকতা নগরায়ণের অন্যতম দিক। বিভিন্ন ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান এবং শহরায়ন বা নগরায়ণের বৈশিষ্ট্য বিশ্লেষণ করলে এর মধ্যে নিম্নলিখিত বৈশিষ্ট্য লক্ষ করা যায়।

Nels Anderson and K. Ishwaran নগরায়ণের বিভিন্ন বৈশিষ্ট্যের মধ্যে প্রধান পাঁচটি বৈশিষ্ট্যের কথা উল্লেখ করেছেন। এগুলো হলো :

১. অর্থভিত্তিক অর্থনীতি; 

২. লিখিত দলিল;

৩. উদ্ভাবন ও কৌশল;

৪. প্রশাসন ও

৫. সাংস্কৃতিক উদ্ভাবন ।

Najrul Islam "Essays on Urbanization: Urban Planning and Development" -এ বর্ণিত নগরায়ণের বৈশিষ্ট্যসমূহ হলো :

১. মোট নগর ইউনিটের সংখ্যা।

২. নগরীর মোট লোকসংখ্যার পরিমাণ (৫০ হাজার থেকে ১ লক্ষ মেট্রোপলিটন এলাকায় এক মিলিয়ন এবং মেগাসিটি এলাকায় ২ কোটিরও বেশি)।

৩. উচ্চ শ্রম হার।

৪. অকৃষিমূলক পেশায় অধিক লোক নিয়োজিত । 

৫. সনাতনী/ঐতিহ্যগত বিষয়গুলো পরিহার। 

৬. আধুনিক জীবনব্যবস্থা।

৭. নগর কাঠামো এবং কেন্দ্রীয় সরকার প্রবণতা এবং

৮. জনমিতিক, অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক, মনোগত প্রপঞ্চ ।

জাতিসংঘের রিপোর্টে নগরায়ণের ৫টি বৈশিষ্ট্যের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এগুলো হলো :

১. প্রশাসনিক সদর কার্যালয়

২. স্থানীয় স্বায়ত্তশাসন বা পৌরসভা । 

৩. অকৃষিমূলক বৃত্তি।

৪. ন্যূনতম নির্দিষ্ট লোকসংখ্যা ।

৫. আধুনিক সুযোগ-সুবিধা। যথা- রাস্তাঘাট, বিদ্যুৎ, হাসপাতাল, অফিস-আদালত, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, পয়ঃনিষ্কাশন, নলের সাহায্যে পানি সরবরাহ ইত্যাদি ।

→ সার্বিকভাবে নগরায়ণের যে সকল বেশিষ্ট্য নির্দিষ্ট করা যায় তা হলো :

১. নগর জনসংখ্যার দ্রুত বৃদ্ধি ।

২. শহরায়ন বা নগরায়ণ মানুষের চিন্তা ও আচরণের মৌলিক পরিবর্তন এনে দেয় ।

৩. দ্রুত শিল্পায়ন : শিল্পকারখানার শিল্প শ্রমিকের সংখ্যা বৃদ্ধি এবং শ্রমবিভাগ ও পেশাগত বৈচিত্র্যতা ।

৪. বর্তমান বিশ্বে অর্থনীতির বিশ্বায়ন ও উদারীকরণ এবং পাশ্চাত্য সংস্কৃতির আধিপত্য।

৫. শহরায়ন মূলত একটি জীবনযাত্রা পদ্ধতি ।

৬. শহরায়ন মূল্যবোধ ও দৃষ্টিভঙ্গিতে ব্যাপক পরিবর্তন এনে দেয় । 

৭. সরকারি-বেসরকারি ও আধা-সরকারি সেবা খাতগুলোর ব্যাপক সম্প্রসারণ ।

৮. নগর অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের ব্যাপক সম্প্রসারণ।

৯. শহরায়ন প্রক্রিয়ায় নগরে বসবাস করা অপরিহার্য নয় । 

১০. কৃষিভিত্তিক পেশা থেকেও নগরে জীবনযাপন করা সম্ভব। 

১১. শহরায়ন প্রক্রিয়া মানুষের ব্যবহারিক রীতিনীতির ক্ষেত্রে পরিবর্তন সাধন করে।

১২. বিভিন্ন ধরনের নাগরিক সুযোগ-সুবিধা । যথা কর্মসংস্থান, আবাসন, পরিবহণ, নাগরিক ভৌত সুযোগ-সুবিধা, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বিনোদন ব্যবস্থা, নিরাপত্তা, শান্তি-শৃঙ্খলার নিশ্চয়তা প্রভৃতির সহজপ্রাপ্যতা ।

১৩. বিভিন্ন ধরনের প্রশাসনিক ও রাজনৈতিক কেন্দ্ৰ ।

১৪. নগর জীবন পদ্ধতি মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করে । 

১৫. দ্রুত সামাজিক প্রেক্ষাপট পরিবর্তন সামাজিক সম্পর্ক ও বন্ধনের শৈথিল্যতা।

১৬. জীবনযাত্রা ব্যবস্থায় ব্যাপক মাত্রায় কৃত্রিমতা ও যান্ত্রিকতার উদ্ভব।

উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, নহরায়ণ বা শহরায়ন প্রক্রিয়ায় শিল্পায়ন ও আধুনিক নতুন নতুন প্রযুক্তিগত উপকরণ ও বিলাস্য বহুল জীবন জড়িয়ে থাকায় অধিবাসীদের জীবনযাত্রা কৃত্রিম ও যান্ত্রিক প্রকৃতির শহুরে বিজ্ঞ ও পণ্ডিত ব্যক্তিদের সমাবেশ, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, ব্যবসায় কেন্দ্র, উন্নত যোগাযোগ নেটওয়ার্ক, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের বসবাস ও অনুশীলনস্থল ছোট-বড় সব ধরনের নগর রয়েছে। 

নগরের বৈশিষ্ট্য পর্যালোচনা করলে আমাদের মতো বিকাশশীল দেশে ছোট নগরগুলো নগরের সংজ্ঞায় পড়ে না। তারপরও বাংলাদেশে এসব শহর বা নগরগুলোর গুরুত্ব অপরিসীম ।

আর্টিকেলের শেষকথাঃ শহরায়ন ও নগরায়নের বৈশিষ্ট্য কি কি

আমরা এতক্ষন জেনে নিলাম শহরায়ন ও নগরায়নের বৈশিষ্ট্য কি কি । যদি তোমাদের আজকের এই পড়াটিটি ভালো লাগে তাহলে ফেসবুক বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারো। আর এই রকম নিত্য নতুন পোস্ট পেতে আমাদের আরকে রায়হান ওয়েবসাইটের সাথে থাকো।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url
আরও পড়ুনঃ
আরও পড়ুনঃ