বানু হাম্মাদ বংশের শাসনকাল সম্পর্কে লিখ

বানু হাম্মাদ বংশের শাসনকাল সম্পর্কে লিখ - আসসালামু আলাইকুম প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকে বিষয় হলো বানু হাম্মাদ বংশের শাসনকাল সম্পর্কে লিখ জেনে নিবো। তোমরা যদি পড়াটি ভালো ভাবে নিজের মনের মধ্যে গুছিয়ে নিতে চাও তাহলে অবশ্যই তোমাকে মনযোগ সহকারে পড়তে হবে। চলো শিক্ষার্থী বন্ধুরা আমরা জেনে নেই আজকের বানু হাম্মাদ বংশের শাসনকাল সম্পর্কে লিখ । আমাদের গুগল নিউজ ফলো করুন। 

বানু হাম্মাদ বংশের শাসনকাল সম্পর্কে লিখ
বানু হাম্মাদ বংশের শাসনকাল সম্পর্কে লিখ

বানু হাম্মাদ বংশের শাসনকাল সম্পর্কে লিখ

অথবা, বানু হাম্মুদ বংশের শাসনকাল উল্লেখ কর।

উত্তর : ভূমিকা : বানু হাম্মুদগণ ছিলেন মৌরতানিয়ার ইদ্রিসী বংশোদ্ভূত। শায়েখ হাম্মুদ বিন মায়মুন বিন আহম্মদ বিন আলী বিন উবায়দুল্লাহ বিন উমর বিন ইদ্রিসের দুই পুত্র হাজীব আল মনসুরের সময় আফ্রিকা হতে কর্ডোভায় আশ্রয় গ্রহণ করেন এবং সামরিক অফিসার হিসাবে চাকরিতে যোগদান করেন। 

পরবর্তীকালে সুলায়মান আল মুস্তাইনের খিলাফতকালে বড় ভাই আল কাসিম আলজেসিরার গভর্নর এবং ছোট ভাই আলী তাঞ্জিয়ার ও সিউটার গভর্নর পদে নিযুক্ত হন। আলী মালাগা অধিকার করেন এবং কর্ডোভা দখল করেন। 

তিনি “আমিরুল মুমিনীন” খেতাব ধারণ করেন। পরবর্তীকালে তিনি তার দাস কর্তৃক নিহত হলে ১০১৮ খ্রিস্টাব্দে মার্চ মাসে তার জ্যেষ্ঠ ভ্রাতা আল কাসিম তার স্থলাভিষিক্ত হন। 

সুবিচার ও বুদ্ধিমান কাসিম শান্তি প্রতিষ্ঠার পর আবিসিনিয়ান স্লাভ ও আসওয়াদী স্লাভদের সমন্বয়ে সেনাবাহিনী গড়ে তোলেন। এর ফলে আরব ও বার্বারগণ অসন্তুষ্ট হয়ে ইয়াহিয়া ইবনে আলীর সাথে যোগদান করে । 

কাসিম তার ভ্রাতুষ্পুত্র ইয়াহিয়া ইবনে আলী কর্তৃক ১০২১ খ্রিস্টাব্দে সিংহাসনচ্যুত হন। তিনি মালাগার সিংহাসন পুনর্দখল করেন এবং প্রায় সাত বছর রাজত্ব করেন। 

বানু হাম্মুদ রাজবংশ ১০১০-১০৫৭ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত দীর্ঘ ৪৭ বছর: মালাগা ও আলজিসিরাসে শাসনকরে স্পেনের ইতিহাসে এক ভিন্ন অধ্যায়ের সৃষ্টি করেন । নিম্নে বানু হাম্বুর শাসনকাল আলোচনা করা হলো :

ইয়াহিয়া ইবনে আলী : কাসিমের মৃত্যুর পর ইয়াহিয়া ইবনে আলী মালাগার সিংহাসন পুনর্দখল করেন এবং আলজেসিরা অধিকার করেন এবং প্রায় দশ বছর শাসন করেন। তিনি ছিলেন দৃঢ়চেতা ও দক্ষ শাসক । তিনি সেভিল আক্রমণ করলে ১০৩৫ খ্রিস্টাব্দে নভেম্বর মাসে কাজীপুত্র ইসমাইল কর্তৃক পরাজিত ও নিহত হন ।

প্রথম ইদ্রিস ও মুহাম্মদ : ইয়াহিয়ার পর তার ভ্রাতা প্রথম ইদ্রিস মালাগাতে এবং তার পিতৃব্যপুত্র মুহাম্মদ আলজেসিরার ক্ষমতা দখল করেন। ইদ্রিস অত্যন্ত বিচক্ষণ সমরনায়ক ছিলেন । তিনি অনতিবিলম্বে ইসমাইলের বিরুদ্ধে অভিযান প্রেরণ করেন । 

ইদ্রিস তার পিতার হত্যার প্রতিশোধ গ্রহণ করেন। তার সেনাবাহিনী সেভিলের অন্তর্গত এচিজাতে আবুল কাসিমের পুত্র ইসমাইলকে পরাজিত ও নিহত করেন। অল্পদিনের মধ্যে ইদ্রিস দেহ ত্যাগ করেন। ইয়াহিয়ার মৃত্যুর পর তার ছয়জন উত্তরাধিকারী ১০৫৭ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত মালাগা শাসন করেন। তার অপর দুইজন উত্তরাধিকারী ১০৫৮ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত আলজেসিরা শাসন করেন ।

৩. দ্বিতীয় ইদ্রিস : দ্বিতীয় ইদ্রিস ছিলেন প্রকৃতই একজন দয়ালু ও দাতা। দ্বিতীয় ইদ্রিসের বিরুদ্ধে তার পিতৃব্য পুত্র মুহাম্মদ বিদ্রোহ ঘোষণা করেন ও অতি সহজে মালাগা দখল করেন এবং ১০৪৬-৪৭ খ্রিস্টাব্দে আইরসের দুর্গে তাকে বন্দি করেন ।

৪. মুহাম্মদের শাসনকাল : মুহাম্মদ ছিলেন চতুর ও ধূর্ত। জনসাধারণ দ্বিতীয় ইদ্রিসকে মুক্ত করে সিংহাসনে বসাতে চেষ্টা করে কিন্তু ব্যর্থ হয়ে তার আনুগত্য স্বীকার করেন। 

দ্বিতীয় ইদ্রিস সিউটা ও তাঞ্জিয়ারের গভর্নর সাকোত ও রিজক আল্লাহর নিকট যান এবং সেখান হতে রোন্ডার বার্বার নেতার নিকট পালিয়ে যান। জনগণ মালাগার মুহাম্মদের বিরুদ্ধাচারণ করে এবং আলজেসিয়ার মুহাম্মদকে খলিফা বলে ঘোষণা করে। 

কিন্তু পরবর্তী ব্যক্তি আইনের শাসন ও শৃঙ্খলা আনয়নে ব্যর্থ হয়ে আল জেসিরায় প্রত্যাবর্তন করেন এবং সেখানে ১০৪৮-৪৯ খ্রিস্টাব্দে দেহ ত্যাগ করেন। মালাগার মুহাম্মদ ও কয়েক বছর পর ১০৫৩ খ্রিস্টাব্দে মৃত্যুবরণ করেন ।

৫. তৃতীয় ইদ্রিস ও হাম্মুদদের পতন : মুহাম্মদের ভ্রাতুষ্পুত্র তৃতীয় ইদ্রিস মালাগার শাসনভার গ্রহণ করেন। ইদ্রিস অতি দ্রুত আইন-শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনেন এবং ১০৫৫ খ্রিস্টাব্দে তার মৃত্যু পর্যন্ত শান্তিপূর্ণভাবে শাসনকার্য পরিচালনা করেন। অপর একজন হাম্মুদ শাসক সিংহাসনে আরোহণ করেন। 

বহুসংখ্যক বার্বার ও আরব সেনা জনৈক আরব নেতা কাজি আব্দুল্লাহ জুজামীর নেতৃত্বে বাদিস বিন হাব্বুসের সাথে যোগদান করেন । বাদিস বিন হাব্বুস অতি সহজে ১০৫৭ খ্রিস্টাব্দে মালাগা অধিকার করেন। হাম্মুদিদের নির্বাসিত করেন ।

উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, বানু হাম্মুদ বংশের শাসনকাল স্পেনের ইতিহাসে যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ। এই সময় মালাগা স্পেনের মধ্যে বিখ্যাত ব্যবসা কেন্দ্র রূপে পরিগণিত হয়। দারুল সানা নামে এর একটি জাহাজ নির্মাণ কেন্দ্র ছিল। মালাগার প্রধান মসজিদকে পরবর্তীকালে খ্রিস্টান কর্তৃক গির্জায় পরিবর্তিত করা হয় ।

আর্টিকেলের শেষকথাঃ বানু হাম্মাদ বংশের শাসনকাল সম্পর্কে লিখ

আমরা এতক্ষন জেনে নিলাম বানু হাম্মাদ বংশের শাসনকাল সম্পর্কে লিখ । যদি তোমাদের আজকের এই পড়াটিটি ভালো লাগে তাহলে ফেসবুক বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারো। আর এই রকম নিত্য নতুন পোস্ট পেতে আমাদের আরকে রায়হান ওয়েবসাইটের সাথে থাকো।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url
আরও পড়ুনঃ
আরও পড়ুনঃ