একদলীয় ব্যবস্থার সুবিধা ও অসুবিধা গুলো উল্লেখ কর

আসসালামু আলাইকুম প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকে বিষয় হলো একদলীয় ব্যবস্থার সুবিধা ও অসুবিধা গুলো উল্লেখ কর জেনে নিবো। তোমরা যদি পড়াটি ভালো ভাবে নিজের মনের মধ্যে গুছিয়ে নিতে চাও তাহলে অবশ্যই তোমাকে মনযোগ সহকারে পড়তে হবে। চলো শিক্ষার্থী বন্ধুরা আমরা জেনে নেই আজকের একদলীয় ব্যবস্থার সুবিধা ও অসুবিধা গুলো উল্লেখ কর। আমাদের গুগল নিউজ ফলো করুন।

একদলীয় ব্যবস্থার সুবিধা ও অসুবিধা গুলো উল্লেখ কর
একদলীয় ব্যবস্থার সুবিধা ও অসুবিধা গুলো উল্লেখ কর

একদলীয় ব্যবস্থার সুবিধা ও অসুবিধা গুলো উল্লেখ কর

  • অথবা, একদলীয় ব্যবস্থার সংজ্ঞা দাও । একদলীয় ব্যবস্থার দোষ-গুণ আলোচনা কর। 
  • অথবা, একদলীয় ব্যবস্থা বলতে কি বুঝ? একদলীয় ব্যবস্থার গুণাবলি ও ত্রুটিগুলো বর্ণনা কর। 
  • অথবা, একদলীয় ব্যবস্থা কী? একদলীয় ব্যবস্থার তুলনামূলক আলোচনা কর।

উত্তর : ভূমিকা : বর্তমান বিশ্বের প্রত্যেকটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে রাজনৈতিক দলের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। রাজনৈতিক দল ছাড়া গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র কল্পনা করা যায় না। 

মূলত রাজনৈতিক দলের সাহায্যেই দেশের শাসনব্যবস্থা পরিচালিত হয়। এটা জনমত গঠনের একটা প্রকৃত উপায়। তাই বলা যায় যে, গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে রাজনৈতিক দলের ভূমিকা ও কার্যাবলি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ।

একদলীয় ব্যবস্থা : যখন কোনো রাষ্ট্রে একটি মাত্র দল বিরাজিত থাকে তখন তাকে একদলীয় শাসন বলা হয়। অন্যভাবে বলা যায় যে, সমগ্র দেশে একটি মাত্র রাজনৈতিক দলের অস্তিত্ব স্বীকৃত হলে তাকে একদলীয় ব্যবস্থা বলে। 

দেশের এই একমাত্র দলটি তার আদর্শ, নীতি, কর্মসূচি অনুসারে শাসনকাল পরিচালনা করে থাকে। মিশর, স্পেন, কেনিয়া ইত্যাদি রাষ্ট্রে একদলীয় ব্যবস্থা বিদ্যমান ।

→ একদলীয় ব্যবস্থার গুণাবলি : একদলীয় শাসনব্যবস্থায় অনেক দোষত্রুটি বিদ্যমান থাকলেও এ শাসনব্যবস্থার কিছু কিছু গুণও রয়েছে। নিম্নে একদলীয় শাসনব্যবস্থার গুণসমূহ আলোচনা করা হলো :

১. দলীয় শৃঙ্খলা বিধান : রাষ্ট্র পরিচালনার সবচেয়ে বাধার সবচেয়ে বড় কারণ হলো দলসমূহের মধ্যে বিশৃঙ্খলা বিরাজ করে। দলীয় শৃঙ্খলা না থাকলে জনসাধারণের মধ্যে এ মূল্যবোধের অবক্ষয় দেখা যায়। এরকম বিশৃঙ্খলা পরিবেশে ক্ষমতাবান দলের মধ্যে অনিয়ম পরিলক্ষিত হয়।

২. সরকারের স্থায়িত্ব : একদলীয় ব্যবস্থায় সরকার বিশেষভাবে স্থায়ী হয়। স্থায়িত্বের ব্যাপারে নিশ্চয়তা থাকে বলে সরকার জনকল্যাণ সাধনে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণ করতে পারে এবং তা যথাযথভাবে বাস্তবে রূপায়িত করতে পারে। দেশের সঠিক কল্যাণ ও উন্নয়নের জন্য সবচেয়ে অধিক অপ্রয়োজনীয় উপকরণ হলো সুদৃঢ় ও স্থায়ী সরকার।

৩. দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণ : বিতর্ক ও বাধা সৃষ্টির মাধ্যমে সময়ের অপচয় হয়। কিন্তু একদলীয় ব্যবস্থায় এই সমস্যা থাকে না বলে দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণ সম্ভব হয়।

৪. পক্ষ শাসন : এক দলীয় ব্যবস্থা আপাতদৃষ্টিতে সহল সরল। বহুদলীয় ব্যবস্থার ন্যায় এখানে সরকার পরিবর্তনের জন্য নির্বাচন অনুষ্ঠান প্রচার ব্যবস্থায় সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা প্রভৃতি জটিলতা থেকে মুক্ত থাকে। ফলে একদলের আওতায় শাসনব্যবস্থা দক্ষ হয়ে উঠে।

৫. দ্রুত উন্নতি বিধান : একটি মাত্র দল থাকলে দেশের উন্নতি সাধন সহজতর হয়। দল ঘোষিত নীতি অনুসারে দেশ পরিচালনার মধ্য নিয়ে মনের মতো গড়ে তুলতে পারে। এতে দেশ দ্রুত উন্নতির পথে অগ্রসর হয়।

৬. জরুরি অবস্থা কার্যকর : এক সঙ্গীয় ব্যবস্থা জরুরি অবস্থায় অনেক বেশি কার্যকর। এখানে বহুদলীয় ব্যবস্থার মতো আলাপ-আলোচনা, বিতর্ক ও বিরোধিতার মাধ্যমে সময়ের অপচয় হয় না। একদলীয় ব্যবস্থার দোষ। 

এক দলীয় ব্যবস্থার দোষগুলো নিয়ে আলোচনা করা হলো :

১. স্বৈরাচারী সরকার : যে শাসনব্যবস্থায় বিরোধী দলের অস্তিত্ব অস্বীকৃত এবং সমালোচনার সুযোগ নেই, সেই শাসনব্যবস্থায় সরকার নিশ্চিতভাবেই স্বৈরাচারী হবে। বিশেষ দলই সরকারি কার্যকলাপে গঠনমূলক সমালোচনা করে। ফলে সরকার সঠিক পথে থাকতে বাধ্য হয়।

২. গণতন্ত্র বিরোধী : এক দলীয় ব্যবস্থা গণতন্ত্রের বিরোধী। কোনো রাজনৈতিক বিরোধিতা এখানে সহ্য করা হয় না। এখানে একটি দল একটি ধারণার প্রতীক। এভাবে একদলীয় ব্যবস্থা রাষ্ট্রকে এক ধারণাবিশিষ্ট রাষ্ট্রে পরিণত করে।

৩. ব্যক্তিস্বাধীনতার বিরোধী : এক দলীয় ব্যবস্থার একনায়কত্ব প্রতিষ্ঠিত হয়। এর ফলে ব্যক্তিস্বাধীনতা বিপর্যন্ত হয় এবং স্বাধীন চিন্তার পথ রুদ্ধ হয়। চিন্তা ও মত প্রকাশের স্বাধীনতা না থাকলে স্বাধীনতাই অর্থহীন হয়ে পড়ে। স্বাধীন পরিবেশ ছাড়া ব্যক্তিজীবনের স্বাভাবিক বিকাশ অসম্ভব।

৪. বিপ্লবের আশঙ্কা : এই ব্যবস্থা হিংসাত্মক ও বৈপ্লবিক পরিবর্তনের পথ প্রশস্ত করে। জনগণ তাদের রাজনৈতিক বিরোধিতা প্রকাশের কোনো সুযোগ পায় না বলে এ ধরনের ব্যবস্থায় বিক্ষোভ জমা হতে থাকে। ফলে বিপ্লবের আশঙ্কা দেখা দেয়।

৫. প্রার্থী বাছাইয়ের সুযোগ নেই : এক দলীয় ব্যবস্থার ভিত্তিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে জনগণ প্রতিনিধি বাছাই করার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয়। এ দল যে প্রার্থীকে মনোনয়ন দেয় তাকেই ভোট দিতে হবে। এতে জনসাধারণ প্রতিনিধি বাছাই করার সুযোগ পায় না এবং প্রার্থীদের যোগ্যতাও বিচার করা হয় না।

৬. দলই প্রধান : এক দলীয় শাসনব্যবস্থায় দলই সবকিছু। দেশ ও মানুষের কোনো মূল্যই এখানে নেই। দলের জন্য রাষ্ট্র, রাষ্ট্রের জন্য দল নয়। দল আগে রাষ্ট্র পরে। ফলে এরূপ এক দলীয় শাসনব্যবস্থা বর্বর শাসনব্যবস্থা হিসেবে মূল্যায়িত হয়।

উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, যেকোনো শাসনব্যবস্থায় বিরোধী দলের অস্তিত্ব অনস্বীকার্য। গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থার জন্য রাজনৈতিক দল অপরিহার্য। আর এক দলীয় শাসনব্যবস্থায় গণতন্ত্র সুপ্রতিষ্ঠিত হতে পারে না। 

তাই আধুনিক বিশ্বে একদলীয় শাসনব্যবস্থা বা দল ব্যবস্থাকে কেউ সমর্থন করে না। এ কারণে একদলীয় শাসনব্যবস্থার অস্তিত্ব বর্তমান বিশ্বে তেমন একটা দেখা যায় না ।

আর্টিকেলের শেষকথাঃ একদলীয় ব্যবস্থার সুবিধা ও অসুবিধা গুলো উল্লেখ কর

আমরা এতক্ষন জেনে নিলাম একদলীয় ব্যবস্থার সুবিধা ও অসুবিধা গুলো উল্লেখ কর। যদি তোমাদের আজকের একদলীয় ব্যবস্থার সুবিধা ও অসুবিধা গুলো উল্লেখ কর পড়াটিটি ভালো লাগে তাহলে ফেসবুক বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারো। 

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url
আরও পড়ুনঃ
আরও পড়ুনঃ