বহুদলীয় ব্যবস্থার সুবিধাগুলো বর্ণনা কর
আসসালামু আলাইকুম প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকে বিষয় হলো বহুদলীয় ব্যবস্থার সুবিধাগুলো বর্ণনা কর জেনে নিবো। তোমরা যদি পড়াটি ভালো ভাবে নিজের মনের মধ্যে গুছিয়ে নিতে চাও তাহলে অবশ্যই তোমাকে মনযোগ সহকারে পড়তে হবে। চলো শিক্ষার্থী বন্ধুরা আমরা জেনে নেই আজকের বহুদলীয় ব্যবস্থার সুবিধাগুলো বর্ণনা কর। আমাদের গুগল নিউজ ফলো করুন।
বহুদলীয় ব্যবস্থার সুবিধাগুলো বর্ণনা কর |
বহুদলীয় ব্যবস্থার সুবিধাগুলো বর্ণনা কর
- অথবা, বহুদলীয় ব্যবস্থা বলতে কি বুঝ? বহুদলীয় ব্যবস্থার সপক্ষে যুক্তি দাও।
- অথবা, বহুদলীয় ব্যবস্থার সংজ্ঞা দাও। গণতান্ত্রিক তা রাষ্ট্রের বহুদলীয় ব্যবস্থার সুবিধাগুলো তুলে ধর।
উত্তর : ভূমিকা : দলব্যবস্থা বর্তমান প্রতিনিধিত্বমূলক শাসনব্যবস্থার একটি অপরিহার্য বৈশিষ্ট্য। এখন কার্যত রাজনৈতিক দলের সাহায্যেই শাসনকার্য পরিচালিত হয়। আধুনিক অর্থে রাজনৈতিক দলের সৃষ্টি হয় সপ্তদশ শতাব্দীতে ইংল্যান্ডে।
আর র বর্তমানে দলব্যবস্থা হলো গণতন্ত্রের প্রাণস্বরূপ। রাজনৈতিক দলকে জনমত গঠনের এবং গণতান্ত্রিক সরকার ব্যবস্থাকে কার্যকর করার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সংস্থা হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
বহুদলীয় ব্যবস্থা : যখন দুই এর অধিক বিভিন্ন দল রাজনৈতিক ক্ষমতা লাভের জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে থাকে কিন্তু কোনো দলই এককভাবে সাধারণত সরকার গঠন করতে পারে না, বরং বিভিন্ন দলের সমন্বয়ে মন্ত্রিসভা গঠিত হয় এরূপ দলীয় ব্যবস্থাকে বহুদলীয় ব্যবস্থা বলে। যেমন- ভারত, পাকিস্তান, বাংলাদেশে বহুদলীয় ব্যবস্থা বিদ্যমান রয়েছে।
বহুদলীয় ব্যবস্থার গুণ বা সপক্ষে যুক্তি : বহুদলীয় দল ব্যবস্থার সপক্ষে সমর্থকগণ বিভিন্ন যুক্তির অবতারণা করেন। নিম্নে এগুলো আলোচনা করা হলো :
১. শাসনকার্যে সুবিধা : বহুদল থাকলে শাসন পরিচালনার সুবিধা হয় এবং উৎকর্ষতা বৃদ্ধি পায়। একে অপরের সমালোচনা করে সঠিক পথে পরিচালনায় বহুদলীয় পদ্ধতি বিশেষ উপযোগী। প্রয়োজন হলে কয়েকটি দল মিলিত হয়ে সরকার গঠনে সমস্যার আশু সমাধান করতে পারে।
২. স্বৈরাচারের আশঙ্কা কম : কোনো দলই এককভাবে স্বৈরাচারী হতে পারে না। ফলে জনগণ সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের স্বৈরাচারের আশঙ্কা থেকে মুক্ত থাকে।
এভাবে বহুদলীয় ব্যবস্থায় সংখ্যাগরিষ্ঠের মাধ্যমে স্বৈরাচারী রোধ করা যায়। ফলে নাগরিক স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রের স্বরূপ বজায় থাকে।
৩. জনমতের যথাযথ প্রকাশ : বহুদলীয় ব্যবস্থার মাধ্যমে জনমতের যথাযথ প্রতিফলন ঘটে। দেশে একটি বা দুটি রাজনৈতিক দল থাকলে সমাজের বিভিন্ন মতাদর্শের সুষ্ঠু প্রতিফলন ঘটে না। কিন্তু বহুদলীয় ব্যবস্থায় এ আশঙ্কা থাকে না।
কারণ এ ব্যবস্থায় জনমতের সকল ধারা-উপধারা যথাযথভাবে প্রকাশিত হয়।৪. গানের সুবিধা। একটি দেশে ধর্ম, বর্ণ ইত্যাদি ভিত্তিতে বিভিন্ন প্রকার সম্প্রদায় দেখা যায় না । গুলো বিভিন্ন স্বার্থ সংরক্ষণের নিমিত্তে গঠিত হয়।
৫. কেবিনেটের একনায়কত্বের সুযোগ কম : বহুদলীয় ব্যবস্থায় বিন্নি দলের প্রতিনিধিবৃন্দ আইনসভায় প্রেরিত হয়। তাই কেবিনেট | র মন্ত্রিসভার বর্ণীভূত হয়ে আইনসভা কার্যসম্পাদন করে না। কাজেই কেবিনেটের উপর আইনসভার কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠিত হয়।
৬. ঐক্যবোধ সৃষ্টি : বহুদলীয় ব্যবস্থায় বৃহৎ ও ক্ষুদ্র দলসহ রাজনৈতিক দলগুলো বৃহত্তর জাতীয় স্বার্থের ভিত্তিতে নিজ নিজ মতাদর্শ অনুযায়ী নীতিনির্ধারণ ও কর্মসূচি প্রণয়ন করে।
এতে অভিন্ন জাতীয় স্বার্থের গুরুত্ব উপলব্ধি করা যেমন হয়, তেমনি দেশের জনসাধারণের মধ্যে ঐক্যবোধ সৃষ্টি হয়।
৭. প্রতিনিধি নির্বাচনের স্বাধীনতা : বহুদলীয় ব্যবস্থার রাজনৈতিক দলের মনোনীত প্রার্থীদের মধ্যে নাগরিকগণ পছন্দমতো প্রার্থীদের ভোট দিতে পারে।
নির্বাচকদের পছন্দ এখানে সীমাবদ্ধ নয়। বামযে মার-এর মতে, “দুটি রাজনৈতিক দলের মধ্যে নাগরিকের পছন্দকে সীমাবদ্ধ রাখা উচিত নয়।"
৮. দলীয় কর্মীরা স্বাধীন : বহুদলীয় ব্যবস্থায় দলীয় সদস্যরা অনেকটা স্বাধীন। কেননা কোনো দল কোনো কর্মীকে গ্রাহ্য না করলে সে অন্য দলে যোগ দিতে পারে।
৯. যোগ্য ব্যক্তির মূল্যায়ন : এরূপ ব্যবস্থায় বহুবিধ দলের অস্তিত্ব থাকে বিধায় যারা সৎ, দক্ষ ও যোগ্য কিন্তু সামর্থ্যের অভাবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারে না তাদেরকে যাবতীয় পৃষ্ঠপোষকতা প্রদর্শনের মাধ্যমে দেশের সেবায় নিয়োজিত করতে পারে। ফলে এদেশের যোগ্য ব্যক্তির মূল্যায়ন সম্ভব হয়।
১০. রাজনৈতিক শিক্ষার বিস্তার : সমাজের সমস্যাদি সম্পর্কে জনলের বিভিন্ন রকম আলাপ-আলোচনা ও মতামতের ফলে জনগণের রাজনৈতিক শিক্ষার বিস্তার ঘটে।
অনেকগুলো দল দেশের বিভিন্ন সমস্যাদি সম্পর্কে নানা দৃষ্টিভঙ্গি থেকে আলোচনা করে। প্রতিটি দল তার নীতি, আদর্শ ও কর্মসূচি অনুসারে সমস্যাদির সমাধানকল্পে পরিকল্পনা প্রণয়ন ও প্রচার করে।
১১. স্বার্থের সমষ্টিকরণ : প্রতিটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের বহুবিধ শ্রেণি ও গোষ্ঠীর অস্তিত্ব দেখা যায়। আইনসভাকে এসব গোষ্ঠী বা শ্রেণির প্রতিনিধিত্ব দ্বারা বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের উপস্থিতি বহুবিন স্বার্থের যেমন প্রকাশ ঘটায়, তেমনি এসব দলের মধ্যে এ সাধন সম্ভব হয়।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, একটি দেশে বহুদল বিদ্যমান থাকলে তারা দেশের বিভিন্ন সমস্যাদি সম্পর্কে পুষ্টিভঙ্গি থেকে আলোচনা করে। ফলে জনগণের রাজনৈতিক ধরে বুদ্ধি বিকশিত হয়।
আর্টিকেলের শেষকথাঃ বহুদলীয় ব্যবস্থার সুবিধাগুলো বর্ণনা কর
আমরা এতক্ষন জেনে নিলাম বহুদলীয় ব্যবস্থার সুবিধাগুলো বর্ণনা কর। যদি তোমাদের আজকের বহুদলীয় ব্যবস্থার সুবিধাগুলো বর্ণনা কর পড়াটিটি ভালো লাগে তাহলে ফেসবুক বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারো।