বখতিয়ার খলজির বাংলা বিজয় সম্পর্কে লিখ

আসসালামু আলাইকুম প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকে বিষয় হলো বখতিয়ার খলজির বাংলা বিজয় সম্পর্কে লিখ জেনে নিবো। তোমরা যদি পড়াটি ভালো ভাবে নিজের মনের মধ্যে গুছিয়ে নিতে চাও তাহলে অবশ্যই তোমাকে মনযোগ সহকারে পড়তে হবে। চলো শিক্ষার্থী বন্ধুরা আমরা জেনে নেই আজকের বখতিয়ার খলজির বাংলা বিজয় সম্পর্কে লিখ। আমাদের গুগল নিউজ ফলো করুন।

বখতিয়ার খলজির বাংলা বিজয় সম্পর্কে লিখ
বখতিয়ার খলজির বাংলা বিজয় সম্পর্কে লিখ

বখতিয়ার খলজির বাংলা বিজয় সম্পর্কে লিখ

  • অথবা, বখতিয়ার খলজির বঙ্গবিজয় সম্পর্কে লেখ । 
  • অথবা, বখতিয়ার খলজির বাংলা বিজয়ের একটি টীকা লেখ ।

উত্তর : ভূমিকা : সুদক্ষ প্রতিভাধর সেনাপতি ইখতিয়ার উদ্দিন মুহাম্মদ বখতিয়ার খলজি পূর্ব ভারতের বিহার থেকে পাল এবং লখনৌতি থেকে সেন শাসনের অবসান ঘটিয়ে ইতিহাসে একটি রোমাঞ্চকর ও গৌরব উজ্জ্বল অধ্যায় সংযোজন করেন। 

তার বাংলা তথা বিজয় কাহিনি অত্যন্ত চমকপ্রদ। সুদূর আফগানিস্তান থেকে এসে বাংলার মুসলিম শাসন প্রতিষ্ঠা তার কৃতিত্বের সফলতা তাকে ইতিহাসের পাতায় স্থান করে দিয়েছে।

→ বখতিয়ার খলজির বাংলা বিজয় : বখতিয়ার খলজি ছিলেন একজন দক্ষ সমরবিদ, রণকৌশলী ও যুদ্ধ বিদ্যায় পারদর্শী তার অসাধারণ বুদ্ধিমত্তার পরিচয় পাওয়া যায় তার বাংলা বিজয়ের ঘটনায় । 

নিম্নে ইখতিয়ারউদ্দিন মুহাম্মদ বিন বখতিয়ার খলজির বাংলা বিজয়ের কাহিনি আলোচনা করা হলো :

১. সৈনিকের পদ লাভ : কুতুবউদ্দিনের নিকট বিফল ইখতিয়ারউদ্দিন বখতিয়ার খলজির পুনরায় ভাগ্য পরীক্ষা শুরু হলো। এবার তিনি আসেন বদায়ুনে। 

বদায়ুনের শাসনকর্তা ছিলেন মালিক হিযবরউদ্দিন। তার সামরিক গঠনের কথা চিন্তা করে মালিক হিযবরউদ্দিন তাকে সৈনিকের পদ দান করেন ৷

২. সেনাবাহিনী গঠন : ইখতিয়ারউদ্দিন মুহাম্মদ-বিন-খলজি পাহঢ়রবালের সামন্ত নরপতিদের পরাস্ত করে মুনের বর্তমান পাটনা জেলার অন্তর্গত এবং বিহার বা বিহার শরিফ অঞ্চল লুণ্ঠন করতে থাকে। 

এ সময় এ অঞ্চলে বহু তুর্কি ও খলজি বংশের লোকের আগমন ঘটে। তার বখতিয়ারে সামরিক সংগঠনের খ্যাতিতে আকৃষ্ট হয়ে তার দলে যোগ দেন। তাকে তিনি সেনাবাহিনী গঠন করেন।

৩. বিহার বিজয় : পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে আক্রমণ চালিয়ে অগ্রসর হবার সময় তিনি একদিন অপ্রত্যাশিতভাবে প্রাচীর বেষ্টিত দুর্গের মত স্থানে উপস্থিত হন এবং সাথে সাথে তরবারি পরিচালনা করেন। 

কোনোরূপ বাধা ছাড়াই স্থানটি বিজিত হলে স্থানটি সম্পর্কে জিজ্ঞেসার মাধ্যমে জানতে পারলেন যে স্থানটি বৌদ্ধ বিহার। বিহারের নাম ছিল ওদন্তিপুরী বিহার। খলজি সহজে ওদন্তিপুরী বিহার দখল বা বিজয় লাভ করেন ।

৪. বাংলা বিজয় : সেন বংশের রাজা লক্ষণ সেনের রাজত্বকালে ইখতিয়ারউদ্দিন মুহাম্মদ-বিন-বখতিয়ার খলজি বাংলা বিজয় ইতিহাসের গতি পরিবর্তনকারী স্মরণীয় ঘটনা। 

এ সময় বাংলার রাজধানী ছিল গৌড় এবং দ্বিতীয় রাজধানী ছিল নদীয়া। নদীয়া আক্রমণের তারিখ নিয়ে ইতিহাসবিদদের মধ্যে মতবিরোধ আছে। 

তারাকাত-ই-নাসিরিতে বিহার বিজয়ের পর নদীয়াতে আক্রমণের কথা বলা হয়েছে। আবুল করিম ১২০৪ সাল বলে উল্লেখ করেছেন । আর হাসান নিজামী ১২০৩ সাল উল্লেখ করেন।

৫. বাংলা বিজয়ের ধারা : বখতিয়ার খলজির বাংলা আক্রমণের সময় লক্ষণ সেন বা দ্বিতীয় রাজধানী নদীয়াতে ছিলেন । নদীয়া ছিল গঙ্গা তীরবর্তী একটি তীর্থস্থান । 

তেলিয়াগড়ের দক্ষিণে বাংলার পশ্চিম সীমান্তের গভীর জঙ্গল হতে তার বাহিনী নিয়ে নবদ্বীপের ২০ মাইল উত্তর থেকে যাত্রা করে দুপুর নাগাদ ১৮ সৈন্য নিয়ে নদীয়া পৌঁছে যান। তার অন্যান্য অনুসারীরা পেছনে পেছনে আসতে থাকে। মূল বাহিনী প্রাসাদে ঢুকে আক্রমণ করে ।

৬. লক্ষণ সেনের পলায়ন : আক্রমণের সংবাদ শুনে মধ্যাহ্ন ভোজরত লক্ষণ সেন অবস্থা বেগতিক দেখে নিজ জীবন রক্ষার্থে নগ্নপদে পিছনের দরজা দিয়ে পূর্ববঙ্গে পলায়ন করেন। 

লক্ষণ সেনের সৈন্যরাও আক্রমণ করতে বা প্রতিহত এবং যুদ্ধ করার প্রয়োজনবোধ করেনি বা সাহস পায়নি। আর এর মাধ্যমে বখতিয়ার খলজি বাংলা জয় করেন এবং মুসলিম শাসন প্রতিষ্ঠা করেন ।

৭. বাংলার রাজধানী স্থাপন : তিন বছর ধরে নদীয়া লুণ্ঠন করে বখতিয়ার খলজি বিপুল পরিমাণ ধন-রত্ন নিজের হস্তগত করেন। অতঃপর বখতিয়ার খলজি নদীয়া ত্যাগ করে লক্ষণাবতীর দিকে যান।

অতঃপর তিনি লক্ষণাবতী দখল করেন। সেখানে বাংলার রাজধানী স্থাপন করেন। আর এই লক্ষণাবতী মুসলিম শাসন আমলে লখনৌ নামে পরিচিত হয়।

উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, বখতিয়ার খলজির কর্মজীবন ইতিহাসের একটি অবিস্মরণীয় অধ্যায়। সুদূর আফগানিস্তান থেকে এসে নিঃস্ব সৈনিক হিসেবে জীবন আরম্ভ করে নিজ ক্ষমতা ও সাহসিকতার বলে তিনি বাংলায় মুসলিম রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেন। বাংলার মুসলিম শাসন প্রতিষ্ঠার নিঃসন্দেহে বখতিয়ার খলজির অবদান অনস্বীকার্য।

আর্টিকেলের শেষকথাঃ বখতিয়ার খলজির বাংলা বিজয় সম্পর্কে লিখ

আমরা এতক্ষন জেনে নিলাম বখতিয়ার খলজির বাংলা বিজয় সম্পর্কে লিখ । যদি তোমাদের আজকের বখতিয়ার খলজির বাংলা বিজয় সম্পর্কে লিখ পড়াটিটি ভালো লাগে তাহলে ফেসবুক বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারো।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url
আরও পড়ুনঃ
আরও পড়ুনঃ