বখতিয়ার খলজি কে ছিলেন । বখতিয়ার খলজির পরিচয় দাও
আসসালামু আলাইকুম প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকে বিষয় হলো বখতিয়ার খলজি কে ছিলেন । বখতিয়ার খলজির পরিচয় দাও জেনে নিবো। তোমরা যদি পড়াটি ভালো ভাবে নিজের মনের মধ্যে গুছিয়ে নিতে চাও তাহলে অবশ্যই তোমাকে মনযোগ সহকারে পড়তে হবে। চলো শিক্ষার্থী বন্ধুরা আমরা জেনে নেই আজকের বখতিয়ার খলজি কে ছিলেন । বখতিয়ার খলজির পরিচয় দাও। আমাদের গুগল নিউজ ফলো করুন।
বখতিয়ার খলজি কে ছিলেন । বখতিয়ার খলজির পরিচয় দাও |
বখতিয়ার খলজি কে ছিলেন । বখতিয়ার খলজির পরিচয় দাও
- অথবা, বখতিয়ার খলজি সম্পর্কে কি জান লেখ
উত্তর : ভূমিকা : ইতিহাসের পাতার ইখতিয়ারউদ্দিন মুহাম্মদ বখতিয়ার খলজি একটি চিরস্মরণীয় নাম। তিনি বাংলায় প্রকৃত মুসলিম শাসনের প্রতিষ্ঠাতা।
মুহাম্মদ বিন কাশিমের সিন্ধু বিজয়ের প্রায় ৫০০ বছর পর স্বীয় যোগ্যতা, প্রতিভা ও বীরত্বের বলে ইখতিয়ারউদ্দিন মুহাম্মদ বখতিয়ার খলজি বাংলায় সর্বপ্রথম স্থায়ীভাবে মুসলিম শাসন প্রতিষ্ঠা করেন। ভারতবর্ষের ইতিহাসে তার নাম চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে।
→ বখতিয়ার খলজির পরিচয় : বখতিয়ার খলজি ছিলেন আফগানিস্তানের গরমশির অঞ্চলের অধিবাসী। প্রথম জীবনে তিনি অনেক জায়গয় চাকরি খুঁজে ব্যর্থ হন।
অবশেষে অযোধ্যায় ইমামউদ্দিনের অধীনে মির্জাপুর জেলার বাগত ও দিউলিয়া নামক দুটি অঞ্চলের জায়গির প্রাপ্ত হন। এমতাবস্থায় তিনি নবাবের মন জয় করে পার্শ্ববর্তী কয়েকটি অঞ্চলের শাসনভার গ্রহণ করেন।
তিনি সেখানে সৈন্য সংগ্রহ করে স্বীয় শক্তি বৃদ্ধি করেন। পরবর্তীতে এ সেনাবাহিনীর দ্বারা বাংলা বিজয় করেন। তার সেনাবাহিনী দক্ষ ও উন্নত রণকৌশলে পরিপূর্ণ ।
১. বিহার বিষয় : খিলাফত লাভ করে বখতিয়ার খলজি স্বীয় শক্তিতে আরও উৎসাহিত হয়ে নবউদ্যমে সমর অভিযানে প্রবৃত্ত হলেন। এভাবে পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে আক্রমণ চালিয়ে অগ্রসর হবার সময় তিনি একদিন অপ্রত্যাশিতভাবে প্রাচীর বেষ্টিত দুর্গের মতো স্থানে উপস্থিত হন এবং সঙ্গে সঙ্গে তরবারি পরিচালনা করেন।
কোনোরূপ বাধা ছাড়াই তিনি সে স্থান দখল করেন। জিজ্ঞাসাবাদের মাধ্যমে জানতে পারলেন আসলে ওটা কোনো দুর্গ নয়। এটা প্রাচীন বৌদ্ধবিহার। আর খুব সহজে বিহার জয় করেন বখতিয়ার খলজি।
২. বাংলা বিজয় : সেন বংশের রাজা লক্ষণসেনের রাজত্বকালে বখতিয়ার খলজির বাংলা বিজয় ইতিহাসের গতি পরিবর্তনকারী এক চিরস্মরণীয় ঘটনা।
এ সময় বাংলার রাজধানী ছিল গৌড় এবং দ্বিতীয় রাজধানী ছিল নদীয়া। লক্ষণসেন দ্বিতীয় রাজধানী নদীয়াতে অবস্থান করেছিলেন।
৩. বাংলা বিজয়ের ধারা : নদীয়া ছিল গঙ্গা তীরবর্তী একটি তীর্থস্থান। ডেলিয়াগড়ের দক্ষিণে বাংলার পশ্চিম সীমান্তের গভীর জঙ্গল হতে তার বাহিনী নিয়ে নবদ্বীপের ২০ মাইল উত্তর থেকে যাত্রা করে দুপুর নাগাদ ১৮ জন সৈন্য নিয়ে নদীয়া পৌঁছে যান।
তার অন্যান্য অনুসারী পেছনে পেছনে আসতে থাকে। ১৮ জন সৈন্য নিয়ে ঘোড়া ব্যবসায়ীর মত নগরে প্রবেশ করে হঠাৎ আক্রমণ করেন।
৪. লক্ষণ সেনের পলায়ন : আক্রমণের সংবাদ শুনে মধ্যাহ্ন ভোজরত লক্ষণ সেন অবস্থা বেগতিক দেখে নিজ জীবন রক্ষার্থে নগ্নপদে পিছনের দরজা দিয়ে পূর্ববঙ্গে পলায়ন করেন।
লক্ষণ সেনের সৈন্যরা ও আক্রমণ করতে বা প্রতিহত এবং যুদ্ধ করার প্রয়োজন মনে করেনি বা সাহস পায়নি।
৫. মুসলিম আধিপত্য ও শাসন প্রতিষ্ঠা : বাংলা বিজয়ের মাধ্যমে বখতিয়ার খলজি হিন্দু আধিপত্যের অবসান ঘটান। আর হিন্দু শাসনের অবসান ঘটিয়ে বাংলায় মুসলিম শাসনের ভিত্তি স্থাপন করে ইসলামি শাসন ও সংস্কৃতির বিকাশ ঘটান, যা আজ অবধি অব্যাহত আছে।
তিনি রাজ্যকে কয়েকটি প্রদেশে বিভক্ত করেন। প্রত্যেকটিতে একজন শাসনকর্তা নিযুক্ত করেন। বখতিয়ার খলজি কর্তৃক শাসিত বাংলার সীমানা পূর্বে ভিস্তা ও করতয়া নদী, উত্তরে দিনাজপুর জেলার দেবকোট হতে রংপুর শহর এবং পশ্চিমে বিহার পর্যন্ত বিস্তৃত। তিনি দিল্লির অধীন না হলেও দিল্লির সাথে সমঝোতা রক্ষা করেন।
৬. শিক্ষা ও সংস্কৃতির পৃষ্ঠপোষক : বখতিয়ার খলজি শাসনব্যবস্থা প্রবর্তনের পাশাপাশি বাংলার মুসলিম সমাজ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে শিক্ষা ও সংস্কৃতির পৃষ্ঠপোষকতা এবং মসজিদ, মাদ্রাসা ও খানকাহ তৈরি করেন। এ ব্যাপারে ঐতিহাসিক যদুনাথ বলেন, যতদিন বাংলায় ইসলাম থাকবে ততদিন বখতিয়ার খলজি স্বমহিমায় উজ্জ্বল হয়ে থাকবে।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, বখতিয়ার খলজির কর্মজীবন ইতিহাসের একটি অবিস্মরণীয় অধ্যায়। সুদূর আফগানিস্তান থেকে এসে নিঃস্ব সৈনিক হিসেবে জীবন আরম্ভ করে নিজ ক্ষমতা ও সাহসিকতার বলে তিনি বাংলায় মুসলিম রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেন।
বস্তুত পক্ষে, একজন প্রকৃত বীরযোদ্ধা, তেজস্বী, সাহসী, নির্ভীক ও উচ্চাকাঙ্ক্ষী সেনাপতি ও শাসক হিসেবে বখতিয়ার খলজি ইসলামের ইতিহাসে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা করে গেছেন।
আর্টিকেলের শেষকথাঃ বখতিয়ার খলজি কে ছিলেন । বখতিয়ার খলজির পরিচয় দাও
আমরা এতক্ষন জেনে নিলাম বখতিয়ার খলজি কে ছিলেন । বখতিয়ার খলজির পরিচয় দাও। যদি তোমাদের আজকের বখতিয়ার খলজি কে ছিলেন । বখতিয়ার খলজির পরিচয় দাও পড়াটিটি ভালো লাগে তাহলে ফেসবুক বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারো।