ব্রিটেনে প্রচলিত পরমাধিকারগুলো সংক্ষেপে লেখ

ব্রিটেনে প্রচলিত পরমাধিকারগুলো সংক্ষেপে লেখ
ব্রিটেনে প্রচলিত পরমাধিকারগুলো সংক্ষেপে লেখ

 ব্রিটেনে প্রচলিত পরমাধিকারগুলো সংক্ষেপে লেখ

  • অথবা, রাজশক্তির বিশেষাধিকারগুলো কী কী? 
  • অথবা, রাজকীয় পরমাধিকারসমূহ উল্লেখ কর। 

উত্তর :ভূমিকা : ব্রিটেনের রাজশক্তির ক্ষমতার একটি গুরুত্বপূর্ণ উৎস হলো পরমাধিকার। সাধারণত ব্রিটেনের চিরাচরিত প্রথার ভিত্তিতে গড়ে ওঠে। ক্ষমতাসমূহ রাজার বিশেষাধিকার হিসেবে পরিচিত হয়েছে।

 বিশেষাধিকার, সম্পর্কিত রাজশক্তির ক্ষমতাগুলো প্রচলিত প্রাচীন রীতিনীতির উপর নির্ভরশীল। ব্রিটেনের শাসনব্যবস্থা প্রথাগত আইন এর অংশ হিসেবে সকল রাজা বা রানি ধারাবাহিকভাবে কতকগুলো অধিকার ভোগ করতে পারে।

→ ব্রিটেনে প্রচলিত পরমাধিকারগুলো : নিম্নে ব্রিটেনে প্রচলিত পরমাধিকারগুলো আলোচনা করা হলো:

১. প্রধানমন্ত্রীর নিয়োগ : ব্রিটেনে সরকার গঠনের দায়িত্ব পালন করেন রাজা বা রানি। ব্রিটেনের প্রথা অনুসারে কোনো একটি রাজনৈতিক দল কমন্সসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করলে রাজা বা রানি সেই দলের নেতা বা নেত্রীকে সরকার গঠনের জন্য আহ্বান করেন। 

কিন্তু ব্রিটেনের রাজনৈতিক ইতিহাসে কখনো কখনো এমন পরিস্থিতির উদ্ভব ঘটেছে, যার মোকাবিলা করার জন্য রাজা বা রানি নিজের ইচ্ছামতো কাজ করছেন। 

সুতরাং এটা সুস্পষ্ট যে, প্রধানমন্ত্রী নিয়োগের ব্যাপারে বিশেষ বিশেষ পরিস্থিতিতে রাজশক্তি যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে ।

২. মন্ত্রীদের নিয়োগ : একসময় ব্রিটেনের মন্ত্রীরা রাজা বা রানি দ্বারা মানোনীত হতেন এবং ব্যক্তিগতভাবে তার নিকট দায়িত্বশীল থাকতেন । 

কিন্তু দলীয় ভিত্তিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে শুরু করলে রাজশক্তির এই ক্ষমতা সংকুচিত হয়ে পড়ে। ১৮৬২ সালের পর থেকে মন্ত্রিসভা গঠনের ক্ষেত্রে রাজা বা রানির পরিবর্তে প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক প্রাধান্য সুপ্রতিষ্ঠিত হয়।

৩. সরকারের বরখাস্ত করার অধিকার : সরকারকে বরখাস্ত করার ক্ষমতা হলো ব্রিটিশ রাজশক্তির অন্যতম পরমাধিকার। সরকারকে বরখাস্ত করা বলতে কার্যক্ষেত্রে কেবল প্রধানমন্ত্রীকেই বরখাস্ত করা বুঝায়। 

কারণ ব্রিটেনে মন্ত্রিসভার যৌথ দায়িত্বশীলতার নীতি বিদ্যমান থাকায় প্রধানমন্ত্রীকে বরখাস্ত করা হলে মন্ত্রিসভার সব সদস্যকেই তার প্রতি সহানুভূতিশীল বশত পদত্যাগ করতে হয়।

৪. পার্লামেন্ট ভেঙে দেওয়ার অধিকার : পার্লামেন্ট ভেঙে দেওয়ার ক্ষমতা ব্রিটেনের রাজশক্তির অন্যতম পরমাধিকার বলে বিবেচিত হলেও প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শ ছাড়া তিনি পার্লামেন্ট ভেঙে দিতে পারেন না ।

৫. পিয়ার সৃষ্টির অধিকার : পিয়ার সৃষ্টির ক্ষমতা রাজা বা রানির একটি পরমাধিকার। বংশানুক্রমিক এবং আজীবন পিয়ার সৃষ্টির ক্ষমতা রাজশক্তির থাকলেও বর্তমানে প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শ ছাড়া তিনি এই ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারেন না ।

৬. পার্লামেন্টবিষয়ক পরমাধিকার : রাজা বা রানির পার্লামেন্টের অধিকারে আহ্বান, সমাপ্তি ঘোষণা এবং মুলতুবি রাখার ক্ষমতা প্রয়োগ করেন।

৭. সামরিক বাহিনীর পরমাধিকার : ব্রিটেনের রাজা বা রানি হলেন দেশের সেনাবাহিনীর সর্বাধিকার। রাজকীয় পরমাধিকার অনুযায়ী নৌবাহিনীও পরিচালিত হয়। ব্রিটেনে কোনো স্থায়ী সামরিক আইন নেই। প্রতি বছর পার্লামেন্টের স্থল নৌ এবং বিমানবাহিনী সংক্রান্ত আইন প্রণয়ন করতে হয়।

উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, ব্রিটিশ পার্লামেন্টে যদিও রাজা বা রানির তেমন বিশেষ কোনো ভূমিকা নেই। তথাপি রাজা বা রানি উল্লিখিত পরমাধিকারগুলো প্রয়োগ করে থাকেন। পরমাধিকারগুলোর ইতিবাচক গুরুত্বের জন্যই ব্রিটিশ জনগণ সেগুলোর বিলোপসাধন করতে আগ্রহী হয়।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url
আরও পড়ুনঃ
আরও পড়ুনঃ