ব্রিটেনে রাজা বা রানীর ক্ষমতা ও কার্যাবলী আলোচনা করুন

আসসালামু আলাইকুম প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকে বিষয় হলো ব্রিটেনে রাজা বা রানীর ক্ষমতা ও কার্যাবলী আলোচনা করুন জেনে নিবো। তোমরা যদি পড়াটি ভালো ভাবে নিজের মনের মধ্যে গুছিয়ে নিতে চাও তাহলে অবশ্যই তোমাকে মনযোগ সহকারে পড়তে হবে। চলো শিক্ষার্থী বন্ধুরা আমরা জেনে নেই আজকের ব্রিটেনে রাজা বা রানীর ক্ষমতা ও কার্যাবলী আলোচনা করুন। আমাদের গুগল নিউজ ফলো করুন।

ব্রিটেনে রাজা বা রানীর ক্ষমতা ও কার্যাবলী আলোচনা করুন
ব্রিটেনে রাজা বা রানীর ক্ষমতা ও কার্যাবলী আলোচনা করুন

ব্রিটেনে রাজা বা রানীর ক্ষমতা ও কার্যাবলী আলোচনা করুন

  • অথবা, ব্রিটিশ শাসনব্যবস্থায় রাজা বা রানির ভূমিকা সম্পর্কে আলোচনা কর ।
  • অথবা, ব্রিটিশ শাসনব্যবস্থায় রাজা বা রানির পদমর্যাদা ও কার্যাবলির গুরুত্ব বর্ণনা কর।

উত্তর : ভূমিকা : তত্ত্বগতভাবে ব্রিটেনের রাজশক্তি হলো রাষ্ট্রীয় সকল ক্ষমতার উৎস। রাজা বা রানি ব্রিটেনের শাসন বিভাগ, আইন বিভাগ ও বিচার বিভাগের অবিচ্ছেদ্য অংশ। রাজা বা রানি হলেন শাসন বিভাগের প্রধান। 

ব্রিটেনের আইনসভা বলতে রাজা বা রানিসহ পার্লামেন্টকে বোঝায়। তিনি আবার বিচার বিভাগেরও প্রধান তাছাড়া খ্রিস্টধর্মের প্রতিষ্ঠানগুলোর ব্যাপারেও তার ক্ষমতা রয়েছে। আবার তিনি রাষ্ট্রীয় সম্মানও বিতরণ করেছেন। ব্রিটেনে রাজা বা রানির ভূমিকা পদমর্যাদা সবার উপরে ।

→ রাজতন্ত্রের ভূমিকা ও পদমর্যাদা : যে সমস্ত ভূমিকা বা ক্ষমতাকে সাধাণত রাজ ক্ষমতা বলে অভিহিত করা হয় তা ব্যক্তিগত রাজা বা রানির ক্ষমতা নয়। তা প্রতিষ্ঠানগত রাজা বা রানির বা রাজশক্তির ক্ষমতা। 

নিচে রাজা বা রানির প্রকৃত ভূমিকা ও পদমর্যাদা আলোচনা করা হলো :

১. প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ : রাজা বা রানির প্রধান রাজনৈতিক কাজ হলো একজন প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ করা। সাংবিধানিক রীতিনীতিতে কমন্সসভার সংখ্যাগরিষ্ঠ নেতা বা নেত্রীকে প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ করা হয়।

কিন্তু কার্যকর অবস্থায় কমলসভার কোনো একটি দলের নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা না থাকলে কিংবা প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ করলে বা তাঁর মৃত্যু হলে রাজা বা রানি তার পছন্দমতো যেকোনো ব্যক্তিকে প্রধানমন্ত্রীর পদ গ্রহণের জন্য আমন্ত্রণ জানান।

২. অন্যান্য মন্ত্রী নিয়োগ : ব্রিটেন রাজা বা রানি অন্যান্য মন্ত্রীদের নিয়োগ দান করে থাকেন। তবে এ ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শ গ্রহণ করা বাধ্যতামূলক। অর্থাৎ রাজা বা রানি প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শক্রমে মন্ত্রিসভার অন্যান্য সদস্যদের নিয়োগ করেন।

৩. শাসনকার্যে শূন্যতা পূরণ ; সংসদীয় শাসনব্যবস্থায় একটি মন্ত্রিসভার প্রস্থান এবং নতুন একটি মন্ত্রিসভার আগমনের মধ্যবর্তী সময়ে শাসনকার্য পরিচালনার ক্ষেত্রে যে শূন্যতার সৃষ্টি হয়, রাজা বা রানি তা পূরণ করে রাজনৈতিক ক্ষেত্রে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। অন্যথায় দেশের প্রশাসনিক ক্ষেত্রে অচলাবস্থা সৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কা থাকে।

৪. কমন্সসতা বাতিল বা ভেঙে দেওয়া : ব্রিটেনের রাজা বা রানি সাধারণত মন্ত্রিসভার পরামর্শক্রমে কমলসভা ভেঙে দিয়ে নতুন নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে পারেন। তবে যদি কমলসভা সক্রিয় দায়িত্ব পালনে সমর্থ থাকে। 

নতুন নির্বাচন যদি দেশের অর্থনীতির পক্ষে অদম্য বিবেচিত হয়, তাহলে প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শ অনুযায়ী রাজা কমলসতা ভেঙে দিতে বাধ্য কিনা এ সম্পর্কে মতপার্থক্য রয়েছে। কিন্তু অধ্যাপক কীথ -এর মতে, "রাজার এ অধিকার আছে, | চরম প্রয়োজন ছাড়া তিনি এ অধিকার প্রয়োগ করেন না।” 

৫. বিরোধের সন্তোষজনক নিষ্পত্তি : প্রশাসনিক ক্ষেত্রে বিভিন্ন পক্ষের মধ্যে কোনো রকম বিরোধ কিংবা সংঘর্ষ বা বিতর্কের সৃষ্টি হলে নিরপেক্ষ চরিত্র বিশিষ্ট রাজা বা রানির মধ্যস্থতার বিরোধের সন্তোষজনক নিষ্পত্তি বা মীমাংসা সম্ভব হয়।

৬. শাসনব্যবস্থার ভারসাম্য রক্ষা : প্রত্যেক শাসনব্যবস্থাতে বিভিন্ন উপাদানের মধ্যে কিছু না কিছু ভারসাম্য রক্ষায় সমস্যা থাকে। ব্রিটেনে ক্ষমতা স্বতন্ত্রীকরণ নীতি প্রবর্তিত নেই। 

কিন্তু সরকার ও বিরোধী দলের মধ্যে ভারসাম্য রক্ষার প্রশ্ন রয়েছে। বার্কার (Banker) এর মতে, ব্রিটেনে রাজশক্তি সরকার বিরোধী দলসহ সরকারের রাজশক্তি সরকার বিরোধী দলসহ সরকারের বিভিন্ন অংশের মধ্যে ভারসাম্য রক্ষা করে।

৭. বৈদেশিক নীতিনির্ধারণ ও পরিচালনা : ব্রিটেনে বৈদেশিক ■ নীতিনির্ধারণ ও পরিচালনার ক্ষেত্রে রাজা বা রানির ভূমিকাকে ন সর্বাপেক্ষা গুরুত্বপূর্ণ বলে অভিমত প্রকাশ করা হয়। 

রাজা বা রানি হলেন সকল বিদেশ, কমনওয়েলথ দেশ এবং সামাজিক দেশগুলোর যোগসূত্র বিশেষ। তিনি কমনওয়েলথের প্রধান এবং ন ডোমিনিয়নগুলোরও রাজা বা রানি।

৮. জনজীবনে বৈচিত্র্য : আনয়ন জনজীবনে গতানুগতিকভাব শ কাটিয়ে বৈচিত্র্য আনয়নে রাজা বা রানি বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকেন। 

এখানে রাজা বা রানি ব্রিটিশবাসীর ক্লান্তিকর = বৈচিত্র্যহীন ও নিরানন্দময় জীবনে বিভিন্ন জাঁকজমকপূর্ণ উৎসব = অনুষ্ঠানের মাধ্যমে একঘেয়েমি দূর করে নতুনত্বের স্বাদ এনে দেয়। এগুলোর মধ্যে তারা চিত্তবিনোদনের খোরাক পায়।

৯. সামাজিক ঐক্য ও নিরাপত্তার প্রতীক : ব্রিটেনে দেশবাসীর কাছে সামাজিক ঐক্য ও নিরাপত্তার প্রতীক হিসেবে রাজা বা রানির অবস্থান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। 

মানুষ অনেক সময় অর্থনৈতিক সংকটের আশঙ্কা ও যুদ্ধের ভীতি হয়ে থাকে। রাজা বা রানির অবস্থান সেই আকাঙ্ক্ষিত নিরাপত্তার প্রতীক হিসেবে মানুষকে আশ্বস্ত করে।

১০. ধর্মীয় ক্ষমতা : রাজা বা রানি ব্রিটেনের গির্জার প্রধান। তিনি বিশপ ও আর্চ বিশপদের নিয়োগ দান করেন। রাজার অনুমতি নিয়েই গির্জার জাতীয় পরিষদ আইন পাস করা হয়। গির্জার শাসন সংক্রান্ত ব্যাপারে রাজা চূড়ান্ত ক্ষমতার অধিকারী ।

১১. রাজা বা রানির সম্মানের উৎস : রাজা বা রানি কেবল ন্যায়বিচারেরই উৎস নন, তিনি সম্মানেরও উৎস। তার অনেক প্রতীকী শক্তি রয়েছে । তিনি এসব প্রতীকী শক্তির মাধ্যমে রাষ্ট্র শাসন করেন ।

১২. সহযোগিতার বণ্টন : শাসনব্যবস্থায় বিভিন্ন বিভাগের মধ্যে ভারসাম্য বজায় রেখে সরকারি ও বিরোধী দলের মধ্যে সহযোগিতার বন্ধন সুদৃঢ় করে শাসনকার্যে ভারসাম্য রক্ষায় রাজা প্রতিষ্ঠানের ভূমিকা বিশেষ উল্লেখযোগ্য।

১৩. অর্থসংক্রান্ত ক্ষমতা : রাজা বা রানি অর্থসংক্রান্ত বিষয়ে কিছু ক্ষমতা ভোগ করে থাকেন। তিনি সাধারণ কিংবা অসাধারণ পন্থা অবলম্বন করে রাজস্ব আদায় করতে পারেন।

উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, ব্রিটেনের শাসনব্যবস্থায় রাজা বা রানির সুদূরপ্রসারী প্রভাব বিস্তার করে থাকেন। মন্ত্রিপরিষদের সদস্যদের মধ্যে সংহতি না থাকলেও প্রধানমন্ত্রী দুর্বল ব্যক্তিত্বসম্পন্ন হলে এবং পাশাপাশি রাজা বা রানি যথেষ্ট যোগ্যতা সম্পন্ন হলে ব্রিটিশ শাসনব্যবস্থায় রাজা বা রানি গুরুত্ব ভূমিকা গ্রহণ করতে পারেন। ব্রিটেনের জনগণের মনে রাজা বা রানির ভূমিকা ক্রমবর্ধমান।

আর্টিকেলের শেষকথাঃ ব্রিটেনে রাজা বা রানীর ক্ষমতা ও কার্যাবলী আলোচনা করুন

আমরা এতক্ষন জেনে নিলাম ব্রিটেনে রাজা বা রানীর ক্ষমতা ও কার্যাবলী আলোচনা করুন। যদি তোমাদের আজকের ব্রিটেনে রাজা বা রানীর ক্ষমতা ও কার্যাবলী আলোচনা করুন পড়াটিটি ভালো লাগে তাহলে ফেসবুক বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারো। 

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url
আরও পড়ুনঃ
আরও পড়ুনঃ