মার্কিন রাষ্ট্রপতির নির্বাচন পদ্ধতি বর্ণনা কর
আসসালামু আলাইকুম প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকে বিষয় হলো মার্কিন রাষ্ট্রপতির নির্বাচন পদ্ধতি বর্ণনা কর জেনে নিবো। তোমরা যদি পড়াটি ভালো ভাবে নিজের মনের মধ্যে গুছিয়ে নিতে চাও তাহলে অবশ্যই তোমাকে মনযোগ সহকারে পড়তে হবে। চলো শিক্ষার্থী বন্ধুরা আমরা জেনে নেই আজকের মার্কিন রাষ্ট্রপতির নির্বাচন পদ্ধতি বর্ণনা কর। আমাদের গুগল নিউজ ফলো করুন।
মার্কিন রাষ্ট্রপতির নির্বাচন পদ্ধতি বর্ণনা কর |
মার্কিন রাষ্ট্রপতির নির্বাচন পদ্ধতি বর্ণনা কর
- অথবা, মার্কিন রাষ্ট্রপতি কিভাবে নির্বাচিত হন? আলোচনা কর।
- অথবা, মার্কিন রাষ্ট্রপতির নির্বাচন ব্যবস্থা সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা দাও ।
উত্তর : ভূমিকা : মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে রাষ্ট্রপতি শাসিত শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এই ধরনের শাসনব্যবস্থায় রাষ্ট্রপতি হলেন - রাষ্ট্রের প্রধান ব্যক্তি। তত্ত্বগতভাবে রাষ্ট্রপতির হাতেই প্রশাসনিক সকল ক্ষমতা ন্যস্ত wine।
আবার কার্যক্ষেত্রে তিনি হলেন প্রকৃত প্রশাসনিক প্রধান। অর্থাৎ তত্ত্বগত এবং বাস্তব উভয় বিচারেই মার্কিন রাষ্ট্রপতি দেশের শাসন বিভাগীয় প্রকৃত ক্ষমতার অধিকারী।
→ মার্কিন রাষ্ট্রপতি নির্বাচন : ফিলাডেলফিয়া সম্মেলনে বিস্তারিত আলোচনার পর রাষ্ট্রপতিকে পরোক্ষভাবে নির্বাচনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে দুটি মত গড়ে উঠে।
একনল সদস্য জনগণের দ্বারা প্রত্যক্ষভাবে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন করার পক্ষপাতি ছিলেন। আরেক দল কংগ্রেস কর্তৃক রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের পক্ষে মত প্রকাশ করেন।
নির্বাচন সংস্থা গঠন : সংবিধান অনুসারে মার্কিন রাষ্ট্রপতি একটি নির্বাচক সংস্থার যারা নির্বাচিত হন। এই নির্বাচক সংস্থাটি | গঠিত হয় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিটি অঙ্গরাজ্যের নাগরিকদের দ্বারা নির্বাচিত প্রতিনিধিদের নিয়ে।
প্রত্যেক অঙ্গরাজ্যের ১৮ বছরের ও তার চেয়ে বেশি বয়স্ক নাগরিক ভোট প্রদান করে থাকে। প্রত্যেক অঙ্গরাজ্য থেকে কংগ্রেসে যত সংখ্যক সদস্য নির্বাচিত হন, সমসংখ্যক সদস্যকে অঙ্গরাজ্যের নির্বাচকমণ্ডলী এই নির্বাচক সংস্থায় নির্বাচিত করে।
এইভাবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পঞ্চাশটি অঙ্গরাজ্যের যে আলাদা আলাদা নির্বাচক সংস্থা গঠিত হয় তার যোগফল হলো ৫৩৫। অর্থাৎ নির্বাচক সংস্থার ৫৩৫ জন সদস্য নির্বাচিত হন। তবে এই সংখ্যা তিনজন বেড়ে এখন ৫৩৮ জন হয়েছে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসি থেকে ৩ জন সদস্য নির্বাচিত করা হয় অর্থাৎ ৫৩৫ জন সদস্যের সাথে ৩ জন সদস্য যোগ করে মোট ৫৩৮ জন হয়।
নির্বাচক পদ্ধতি : ৫৩৮ জন সদস্য নিয়ে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের সময় নির্বাচক সংস্থা গঠিত হয়। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের মধ্যে যিনি এই নির্বাচক সংস্থার ২৭০টি ভোট পাবেন তিনিই রাষ্ট্রপতি হবেন।
নভেম্বর মাসের প্রথম সোমবারের পর প্রথম মঙ্গলবার নির্বাচক সংস্থার প্রতিনিধি নির্বাচনের জন্য ভোট গ্রহণের ব্যবস্থা করা হয়। তারপর ডিসেম্বর মাসে দ্বিতীয় বুধবারের পর প্রথম যে সোমবার আসে সেই দিন নির্বাচক সংস্থার সদস্যগণ নিজ রাজ্যে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে ভোট দেন।
ভোট হয় গোপন ব্যালটের মাধ্যমে। ভোটদান শেষ হলে প্রত্যেক অঙ্গরাজ্যের ভোট বাক্স সীল করে রাজধানী ওয়াশিংটনে পাঠানো হয়। সেখানে সিনেটের | সভাপতি কংগ্রেসের উভয়কক্ষের সদস্যের সামনে ভোট গণনা ও ফলাফল প্রকাশ করেন।
পরের বছর হয় জানুয়ারি তারিখে এই ভোট গণনা কার্য হয়ে থাকে। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের মধ্যে যিনি নির্বাচক সংস্থার সদস্য সংখ্যার সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোট লাভ করে তিনিই রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন।
কোনো প্রার্থীই সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পেলে কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি সভার সদস্যগণ গোপন ভোটে প্রথম তিনজন সদস্যের মধ্যে থেকে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন করেন।
রাষ্ট্রপতির যোগ্যতা : রাষ্ট্রপতির পদপ্রার্থীর যোগ্যতার ব্যাপারে মার্কিন শাসনতন্ত্রে কয়েকটি বিষয়ে উল্লেখ আছে। যথা-
১. রাষ্ট্রপতিপদে প্রার্থীর বয়স হবে কমপক্ষে ৩৫ বছর।
২. তাকে জন্মসূত্রে মার্কিন নাগরিক হতে হবে।
৩. তাকে অন্তত ১৪ বছর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করতে হবে।
এই বসবাসগত যোগ্যতাকে কেন্দ্র করে Herbert Hoover এর রাষ্ট্রপতি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা সম্পর্কে বিতর্কের সৃষ্টি হয়। অভিযোগ ওঠে যে একাধিকক্রমে ১৪ বছর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করেনি। এ প্রসঙ্গে মার্কিন সুপ্রিমকোর্ট বলে একাধিকক্রমে বসবাস করার দরকার নেই।
রাষ্ট্রপতির কার্যকাল : মার্কিন রাষ্ট্রপতির কার্যকাল চার বছর। তার পুনঃনির্বাচনের পথে কোনো বাধা নেই। তবে দু'বারের বেশি কেউ রাষ্ট্রপতি হতে পারবে না।
প্রথম রাষ্ট্রপতি জর্জ ওয়াশিংটনের আমলে এই প্রথাটির সৃষ্টি হয়। তারপর ১৯৫১ সালে সংবিধানের ২২তম সংশোধনীর মাধ্যমে এই প্রথাটিকে আইনে পরিণত করা হয়।
রাষ্ট্রপতির পদচ্যুতি : রাষ্ট্রপতির স্বাভাবিক কার্যাবলি ৪ বছর শেষ হওয়ার আগেই তাঁর মৃত্যু হলে বা তিনি পদত্যাগ করলে রাষ্ট্রপতির পদশূন্য হয়।
আবার তিনি পদচ্যুতও হতে পারেন। দেশদ্রোহিতা, উৎকোচ গ্রহণ, কিংবা অন্যান্য দুর্নীতিমূলক বেআইনি কাজের জন্য কার্যকাল শেষ হওয়ার আগেই রাষ্ট্রপতিকে পদচ্যুত করা যায়। রাষ্ট্রপতিকে ইমপিচমেন্টের সাহায্যে পদচ্যুত করা যায়।
এই উদ্দেশ্যে কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি সভায় অভিযোগ উত্থাপন করতে হয়। রাষ্ট্রপতির পদচ্যুতি সম্পর্কিত প্রস্তাব প্রতিনিধি সড়ায় এক বা একাধিক সদস্য উত্থাপন করতে পারেন।
এই প্রস্তাব উত্থাপিত হওয়ার পর প্রতিনিধি সভার বিচার বিভাগীয় কমিটি বা বিশেষ তদন্ত কমিটির কাছে রাষ্ট্রপতির বিরুদ্ধে অভিযাগের বিষয়বস্তু পাঠান।
কমিটির এই প্রতিবেদন সাভার বিচার বিবেচনার পর অধিকাংশ সদস্য ইমপিচমেন্ট সমর্থন করলে ইমপিচমেন্টের কারণ দেখিয়ে খসড়া তৈরি হয়।
প্রতিনিধিত্ব সভা অভিযোগটি বিচারের জন্য কংগ্রেসের উচ্চকক্ষ সিনেটে প্রেরণ করা হয়। সিনেট বিচার বিবেচনা করেন ও সুপ্রিমকোর্টের বিচারপতি সভাপতিত্ব করেন।
অভিযুক্ত রাষ্ট্রপতি সিনেটে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ পান। সিনেটে উপস্থিত সদস্যের অন্তত দুই-তৃতীয়াংশ সদস্য অভিযোগটি অনুমোদন করলে রাষ্ট্রপতি পদচ্যুত হন।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, মার্কিন রাষ্ট্রপতি নির্বাচন পদ্ধতি একটি জটিল পদ্ধতি এবং তার চেয়েও জটিল পদ্ধতি মার্কিন রাষ্ট্রপতি অপসারণ পদ্ধতি।
মার্কিন রাষ্ট্রপতি পরোক্ষভাবে ইলেকটোরাল কলেজের অর্থাৎ নির্বাচক সংস্থার দ্বারা নির্বাচিত, এতে তাকে ৫৩৮ টি ভোটের মধ্যে কমপক্ষে ২৭০ টি ভোট পেতে হয়।
আর্টিকেলের শেষকথাঃ মার্কিন রাষ্ট্রপতির নির্বাচন পদ্ধতি বর্ণনা কর
আমরা এতক্ষন জেনে নিলাম মার্কিন রাষ্ট্রপতির নির্বাচন পদ্ধতি বর্ণনা কর। যদি তোমাদের আজকের মার্কিন রাষ্ট্রপতির নির্বাচন পদ্ধতি বর্ণনা কর পড়াটিটি ভালো লাগে তাহলে ফেসবুক বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারো।