মুহাম্মদ ঘুরীর ভারত আক্রমণের প্রাক্কালে ভারতের রাজনৈতিক পরিস্থিতি কেমন ছিল
আসসালামু আলাইকুম প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকে বিষয় হলো মুহাম্মদ ঘুরীর ভারত আক্রমণের প্রাক্কালে ভারতের রাজনৈতিক পরিস্থিতি কেমন ছিল জেনে নিবো। তোমরা যদি পড়াটি ভালো ভাবে নিজের মনের মধ্যে গুছিয়ে নিতে চাও তাহলে অবশ্যই তোমাকে মনযোগ সহকারে পড়তে হবে। চলো শিক্ষার্থী বন্ধুরা আমরা জেনে নেই আজকের মুহাম্মদ ঘুরীর ভারত আক্রমণের প্রাক্কালে ভারতের রাজনৈতিক পরিস্থিতি কেমন ছিল । আমাদের গুগল নিউজ ফলো করুন।
মুহাম্মদ ঘুরীর ভারত আক্রমণের প্রাক্কালে ভারতের রাজনৈতিক পরিস্থিতি কেমন ছিল |
মুহাম্মদ ঘুরীর ভারত আক্রমণের প্রাক্কালে ভারতের রাজনৈতিক পরিস্থিতি কেমন ছিল
- অথবা, মুহাম্মদ ঘুরীর ভারত আক্রমণের প্রাকালে ভারতের রাজনৈতিক পরিস্থিতি সম্পর্কে সংক্ষেপে আলোচনা কর।
- অথবা, মুহাম্মদ ঘুরীর ভারত আক্রমণের প্রাক্কালে ভারতের রাজনৈতিক পরিস্থিতি বর্ণনা দাও।
উত্তর : ভূমিকা : ঘুরী বংশের উত্থান ভারত তথা এশিয়ার ইতিহাসে এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। মুহাম্মদ ঘুরীর উত্তর ভারত আক্রমণের প্রাক্কালে ভারতের রাজনৈতিক, সামাজিক ও ধর্মীয় অবস্থা ছিল অত্যন্ত অস্থিতিশীল।
ঐতিহাসিক আল বেরুনির বর্ণনা থেকে জানা যায় যে, সে সময় ভারতে বর্ণবৈষম্য, ঘৃণা সতীদাহ প্রথা, রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা, জাতীয় সরকারের অনুপস্থিত ও ধর্মীয় কুসংস্কার বিদ্যমান ছিল। এমতাবস্থায় মুহাম্মদ ঘুরী ভারত আক্রমণের দিকে অগ্রসর হন।
→ মুহাম্মদ ঘুরীর ভারত আক্রমণের প্রাক্কালে ভারতের রাজনৈতিক পরিস্থিতি :
নিম্নে মুহাম্মদ ঘুরীর ভারত আক্রমণের পূর্বে ভারতের রাজনৈতিক পরিস্থিতি সম্পর্কে সংক্ষেপে আলোচনা করা হলো :
১. পাঞ্জাবের অবস্থা : মুহাম্মদ ঘুরীর ভারত অভিযানের সময় শুধুমাত্র পাঞ্জাব ও সিন্ধুতে মুসলিম শাসন প্রতিষ্ঠিত ছিল। সুলতান মাহমুদ কর্তৃক পাঞ্জাব বিজিত হওয়ার পর ১১৮৭ সাল পর্যন্ত পাঞ্জাব গজনি সাম্রাজ্যের অধীনে ছিল।
গজনি বংশের শেষ শাসক মালিক খসরু অযোগ্য ও অপদার্থ ছিলেন। যার ফলে মুহাম্মদ ঘুরীকে আক্রমণ করার মতো কোনো সামর্থ্য তার ছিল না। ফলে খসরু মুহাম্মদ ঘুরীর নিকট আত্মসমর্পণ করেন।
২. সুলতানের অবস্থা : সুলতান মাহমুদ ১০১০ সালে মুলতানের কারামাতীয় শিয়া আবুল ফতেহ দাউদকে পরাজিত করে মুলতান অধিকার করেন। কিন্তু তার মৃত্যুর পর কারামাতীয়রা পুনরায় মুলতানে শাসনকার্য পরিচালনা করেন ।
৩. সিন্ধুর রাজনৈতিক অবস্থা : মুহাম্মদ ঘুরীর ভারত অভিযানের প্রাক্কালে সিন্ধু প্রদেশ ভারতের সমৃদ্ধশালী প্রদেশ ছিল ।
গজনির শাসক সুলতান মাহমুদ ১০১০ সালে সিন্ধু রাজ্যটি জয় করেন। কিন্তু তার মৃত্যুর পর সুরমা নামক একটি মুসলিম স্থানীয় গোত্র স্বাধীনতা পুনরুদ্ধার করেন।
৪. কনৌজ : সুলতান মাহমুদ ১০১৯ সালে প্রতিহার রাজা রাজ্যপালকে পরাজিত করে কনৌজ দখল করেন। মুহাম্মদ ঘুরীর আক্রমণকালে এ বংশের রাজা ছিল জয়চন্দ্র। এ সময় মুহাম্মদ ঘুরী কনৌজ আক্রমণ করে জয়লাভ করেন।
৫. গুজরাট : পশ্চিম ভারতের রাজাসমূহের মধ্যে গুজরাট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল। গজনির সুলতান মাহমুদ গুজরাটের সোমনাথ মন্দির অভিযানকালে এ বংশের শেষ রাজা ভীম রাজ্য ছেড়ে কাচ এ আশ্রয় গ্রহণ করেন। এরপর মুহাম্মদ ঘুরী ভীমকে পরাজিত করে গুজরাট দখল করেন।
৬. বিহারের রাজনৈতিক অবস্থা : মুহাম্মদ ঘুরীর ভারত অভিযানের প্রাক্কালে বিহারের রাজনৈতিক অবস্থা অত্যন্ত অস্থিতিশীল ও অরাজকতাপূর্ণ ছিল। এ সময় সমগ্র বিহার ও বাংলা পাল শাসনের অধীনে ছিল।
এ সময় মদন পাল ও কুমার পাল ছিলেন বিহারের শাসনকর্তা। তাদের দুর্বলতার সুযোগে মুহাম্মদ ঘুরী বিহার অভিযান করেন। সেই সময় মুহাম্মদ ঘুরীর সেনাপতি বখতিয়ার খলজি বিহার অধিকার করেন।
৭. ভারতের শাসনবর্গ : বুলখণ্ড, চান্দেলাদের গুজরাট, বাঘেলাদের দিল্লি ও আজমির চৌহান বংশের শাসনাধীনে ছিল। মুহাম্মদ ঘুরীর আক্রমণের পূর্বে দিল্লি ও কনৌজের শাসনকর্তা সর্বাপেক্ষা শক্তিধর ছিলেন। গাহড়বাল রাজ্যের জয় চাঁদ ছিলেন ভারতের শক্তিশালী শাসক।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, মুহাম্মদ ঘুরীর ভারত অভিযানের প্রাক্কালে ভারতের রাজনৈতিক অবস্থা অত্যন্ত শোচনীয় ছিল। মুহাম্মদ ঘুরীর ভারত আক্রমণের প্রাক্কালে ভারতের রাজনৈতিক ঐক্যের যেমন দুর্বলতা ছিল তেমনি যুদ্ধ কৌশলে তারা ছিল প্রাচীন।
রাজপুতরা শক্তিশালী হলেও তারা মুহাম্মদ ঘুরীকে প্রতিরোধ করতে পারেনি। মুহাম্মদ ঘুরী বিশৃঙ্খল রাজনৈতিক পরিস্থিতির সময় ভারত অভিযান পরিচালনা করে স্থায়ী মুসলিম সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেন ।
আর্টিকেলের শেষকথাঃ মুহাম্মদ ঘুরীর ভারত আক্রমণের প্রাক্কালে ভারতের রাজনৈতিক পরিস্থিতি কেমন ছিল
আমরা এতক্ষন জেনে নিলাম মুহাম্মদ ঘুরীর ভারত আক্রমণের প্রাক্কালে ভারতের রাজনৈতিক পরিস্থিতি কেমন ছিল। যদি তোমাদের আজকের মুহাম্মদ ঘুরীর ভারত আক্রমণের প্রাক্কালে ভারতের রাজনৈতিক পরিস্থিতি কেমন ছিল পড়াটিটি ভালো লাগে তাহলে ফেসবুক বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারো।